দর্পন ডেস্ক : আজ শুক্রবার তেলেঙ্গানায় অনুষ্ঠিত হচ্ছে স্থানীয় নির্বাচন। ভারতে নির্বাচনের সময়টাতে ভোটারদের মন জয় করা বা তাদের ভোট কেনার জন্য নানা ধরনের ‘উপহার সামগ্রী’ বিতরণ করার একটা চল রয়েছে।আর এ নির্বাচনের আগে কর্নাটক রাজ্যের কর্মকর্তারা সচেষ্ট পদক্ষেপ নিয়েছিলেন যাতে তাদের রাজ্য থেকে প্যাঁচা প্রতিবেশী তেলেঙ্গানা রাজ্যে পাচার হয়ে না যায়।

প্যাঁচা পাচারের দায়ে তেলেঙ্গানা থেকে ইতোমধ্যে ছয়জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পুলিশকে তারা জানিয়েছেন প্যাঁচার ‘বাজার দর’ এখন চড়া।

একজন পুলিশ কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, ‘প্যাঁচার শরীরের কোনো কোনো অংশ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর জন্য দুর্ভাগ্য বয়ে আনবে বলে স্থানীয়ভাবে বিশ্বাস করা হয়।’

ভারতে ৩০টি ভিন্ন প্রজাতির প্যাঁচা রয়েছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে জনপ্রিয় দুটি প্রজাতি হল ভারতীয় হুতোম প্যাঁচা এবং লক্ষ্মী প্যাঁচা। অবৈধ এসব বাণিজ্যের জন্য এই দু’ধরনের প্যাঁচার চাহিদা সবচেয়ে বেশি। কুসংস্কারমূলক আচার ও যাদুটোনা, তুকতাকের জন্য এই দু’ধরনের প্যাঁচা বিক্রি হয় সবচেয়ে বেশি।

ভারতের বন্যপ্রাণী পাচার রোধকারী সংস্থা ট্রাফিক ইন্ডিয়ার প্রধান ড. সাকেত বাদোলা বিবিসি হিন্দিকে বলেছেন, প্যাঁচার অবৈধ বাণিজ্য কত ব্যাপক মাত্রায় হয় তা বলা কঠিন। এই সংস্থা বৈধ ও অবৈধ দু’পথেই বন্যপ্রাণীর ব্যবসার ওপর নজরদারি করে। আমরা যেসব তথ্য ও পরিসংখ্যান পেয়েছি তার ওপর নির্ভর করে এটা স্পষ্ট বলতে পারি, প্যাঁচা পাচারের ব্যবসা একটা বিরাট ব্যবসা। উত্তর ভারতে প্যাঁচার চাহিদা প্রচুর এবং দক্ষিণ ভারতও পিছিয়ে নেই। যারা তন্ত্র সাধনা করে তা ব্যাপকভাবে প্যাঁচা ব্যবহার করে।

আবরার আহমেদ নামে এক গবেষক তার রিপোর্টে বলেছেন যাদুটোনা ও তুকতাকের জন্য প্যাঁচার শরীরের ৩৯টি অংশ ব্যবহারের নজির তারা পেয়েছেন।

কুসংস্কারের খপ্পড়ে পড়ে প্যাঁচা ক্রমশ বিলুপ্ত হতে বসেছে। প্যাঁচার প্রজনন প্রক্রিয়াও খুব শ্লথ। বড় প্যাঁচা বছরে – কখনও কখনও দু’বছরে একটি কি দুটি বাচ্চা দেয়। ফলে তাদের সংখ্যাবৃদ্ধির হারও খুবই কম।