দর্পণ ডেস্ক : বিএনপি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে এলে আওয়ামী লীগকেও কেন্দ্র রক্ষা করতে হবে বলেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
বৃহস্পতিবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু এভিনিউর আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যৌথ সভায় তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তারেক রহমানের নির্দেশে কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকী, মাহমুদুর রহমান মান্না, মোস্তফা মহসিন মন্টু পরিচালিত হচ্ছেন। ড. কামাল হোসেন বিএনপির রাজনীতির কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। কী লজ্জা! তারা নাকি ভোটকেন্দ্র পাহারা দিতে আসবেন। আসুক, আমরাও কেন্দ্র রক্ষা করব।
‘আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের ভরাডুবি হবে’- বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের এমন বক্তব্যের সমালোচনা করে ওবায়দুল কাদের বলেন, তিনি আওয়ামী লীগকে ৩০টি আসনের বেশি দিতে চান না। তারাই ২০০৮ সালে পেয়েছিলেন ২৯ আসন। আমরা কিন্তু ক্ষমতায় থেকে এমন অহংকারী উচ্চারণ একবারও করিনি। কারণ, ক্ষমতার মালিক আল্লাহ, তারপর দেশের জনগণ। জনগণই ঠিক করবে, কাকে কত আসন দেবে।
সড়ক পরিবহনমন্ত্রী বলেন, ফখরুল ইসলাম আলমগীর কি জ্যোতিষবিদ্যা শিখলেন? বারবার শুধু সংখ্যাতত্ত্ব- ১০টি আসন, ২০টি আসন। তার নেত্রী খালেদা জিয়া বলেছিলেন, আওয়ামী লীগ ১০০ বছরেও ক্ষমতায় আসতে পারবে না। এবারও তো আওয়ামী লীগের ক্ষমতার ১০ বছর ছুঁইছুঁই। যতই আস্ম্ফালন করবেন, ততই পতন ঘটবে।
সেতুমন্ত্রী বলেন, বিএনপি ক্ষমতায় এলে আওয়ামী লীগের ১০ বছরের উন্নয়নকাজ পরিত্যক্ত হবে। কারণ, তারা নাকি পদ্মা সেতুতে উঠবেন না। তিনি বলেন, মির্জা ফখরুলকে চ্যালেঞ্জ করে বলছি, তাদের এমন কোনো কাজ কি আছে, যেটার কথা স্মরণ করে এ দেশের মানুষ তাদের ভোট দেবে? আছে হাওয়া ভবন, আছে গ্রেনেড হামলা, উত্তরবঙ্গে বাংলাভাই আর বিদ্যুতের নামে খাম্বা।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, এবারের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের বিজয়ের বিকল্প নেই। আওয়ামী লীগের পরাজয় মানে ২০০১ সালের অন্ধকার ও দেশে রক্তের নদী বয়ে যাওয়া।
২০০১ ও ২০১৪ সালের যে বিভীষিকা, রক্তপাত, সন্ত্রাস ও দুর্নীতি- জনগণ কি সেই অমানিশার অন্ধকারে ফিরে যেতে চায়? চায় না। তাই সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। তিনি বলেন, বিএনপি-জামায়াত ক্ষমতায় এলে দেশের নারীরা ঘরের বাইরে বের হতে পারবেন না। এটা কি নারীরা মেনে নেবেন? কখনই মেনে নেবেন না।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক জানান, তাদের দলের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ছিল দল ও জোটের মনোনয়ন প্রক্রিয়া শেষ করা। এবার প্রার্থী অনেক। যোগ্য প্রার্থী বাছাই করা ছিল কঠিন চ্যালেঞ্জ। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এরই মধ্যে এই প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। আজ-কালের মধ্যেই চূড়ান্ত চিঠি দেয়া হবে। আগামীকাল (আজ) দলের মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থীরা চিঠি পাবেন বলে আশা করা যায়।
ওবায়দুল কাদের বলেন, তাদের একটা সুবিধা ছিল, তাদের সভাপতি সাত বছর ধরে প্রতি ছয় মাস পর পর জরিপ প্রতিবেদন সংগ্রহ করেছেন। পাঁচ-ছয়টি বিদেশি কোম্পানি এই জরিপের কাজ করেছে। এই জরিপ রিপোর্টগুলো দলের প্রার্থী বাছাইয়ে মূল ভূমিকা পালন করেছে। ছয় মাস পর পর আপডেট করার পর প্রার্থীদের গ্রহণযোগ্যতা নিরূপণ করা হয়েছে।
এই জরিপ কেবল আওয়ামী লীগ প্রার্থীদের ওপর নয়, বিএনপিসহ অন্যান্য দলের প্রার্থীদের বিষয়েও তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে। তিনি আশা করেন, যাদের মহাজোট মনোনয়ন দিয়েছে, তারা বিপুল ভোটে বেশির ভাগ আসনে বিজয়ী হবে।
কাদের বলেন, কোনো কোনো প্রার্থী বিতর্কের কারণ হতে পারে ভেবে পরিবর্তনও আনা হয়েছে। কিছু কিছু জায়গায় ক্ষোভ-বিক্ষোভ হতে পারে। কারণ, জোটের কারণে আওয়ামী লীগকে অনেক আসনে ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, জোটের মনোনয়ন নেতাকর্মীরা মেনে নেবেন।
স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউছারের সভাপতিত্বে সভায় আরও বক্তব্য দেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক পংকজ দেবনাথ এমপি, যুগ্ম সম্পাদক গাজী মেসবাউল হোসেন সাচ্চু প্রমুখ।