দর্পণ ডেস্ক : ঢাকা-১৭ আসনে বিএনপির প্রার্থী আসাদুজ্জামান রিপনের এক কোটি টাকার সম্পদ উল্লেখ করার পাশাপাশি তার স্ত্রীর নামে নির্মাণাধীন বাড়ির সংখ্যা ছয়টি বলে উল্লেখ করেছেন, যার মূল্য তিনি দেখাননি।
ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগ প্রার্থী হাজী মো. সেলিমের পাঁচ বছর আগে দায়দেনা ছিল ২০৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। এবার তার এক টাকাও দায়দেনা নেই। এ সময়ের মধ্যে তার আয় কমলেও এবার তিনি দেনামুক্ত।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে জমা দেয়া প্রার্থীদের হলফনামায় দেয়া আট ধরনের তথ্যে উপরোক্ত হিসাব পাওয়া গেছে। হলফনামায় দেয়া তথ্য অসম্পূর্ণ, দায়সারাগোছের। গরমিলও খুঁজে পাওয়া গেছে কারো কারো তথ্যে। অনেক ক্ষেত্রেই প্রার্থীরা অসামঞ্জস্যপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন। যদিও গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ, ১৯৭২ অনুযায়ী মনোনয়নপত্র জমা দেয়ার সঙ্গে আট ধরনের ব্যক্তিগত তথ্য উল্লেখ করা বাধ্যতামূলক। এই তথ্য মিথ্যা বা ভুল প্রমাণিত হলে রিটার্নিং কর্মকর্তা নিজ উদ্যোগে বা কারো অভিযোগ আমলে নিয়ে সংশ্নিষ্ট ব্যক্তির প্রার্থিতা বাতিল করতে পারেন। পাশাপাশি সংশ্নিষ্ট প্রার্থী দণ্ডবিধির ১৮১ ধারা অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধী হিসেবেও চিহ্নিত হবেন।
সেনাসমর্থিত সরকারের আমলে ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত সংসদ নির্বাচনে এই অপরাধে বেশ কয়েকজনের মনোনয়নপত্র বাতিল হলেও পরে এমন নজির আর দেখা যায়নি। এ সংক্রান্ত উচ্চ আদালতের আদেশে বলা হয়েছে, হলফনামার এসব তথ্য ইসির পক্ষ থেকে জনগণের মধ্যে প্রচারের ব্যবস্থা করতে হবে। এমনকি রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ের সামনে দর্শনীয় স্থানে টানিয়ে দেয়ার নির্দেশ রয়েছে। এর আগে দশম সংসদ নির্বাচনে প্রার্থীদের হলফনামা প্রকাশে লুকোচুরির আশ্রয় নিয়েছিল তৎকালীন কাজী রকিবউদ্দীনের নেতৃত্বাধীন কমিশন। এমনকি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম হলফনামা জমা দেয়ার বিধান তুলে দেয়ার পক্ষেও বক্তব্য দেন। এর আগে ২০০৫ সালে উচ্চ আদালতে এ সংক্রান্ত মামলায় ভুয়া বাদী উপস্থাপন করা হয়েছিল, যার পেছনে প্রচ্ছন্ন মদদ ছিল তৎকালীন ক্ষমতাসীন বিএনপির।
হলফনামায় তথ্য গোপনের দায়ে ২০০৫ সালে সর্বপ্রথম প্রার্থিতা বাতিল হয়েছিল ফরিদপুর-৪ আসনের উপনির্বাচনে ক্ষমতাসীন বিএনপির প্রার্থী কাজী সিরাজুল ইসলামের। পরে শাহ মো. আবু জাফরকে বিএনপি মনোনয়ন দেয়। তিনি মনে করেন, রাজনীতি সুস্থধারায় ফিরিয়ে আনতে এসব হলফনামা খতিয়ে দেখে ইসির পদক্ষেপ নেয়া উচিত।
ঢাকা জেলা ও মেট্রোপলিটন এলাকার রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে পাওয়া এবারের হলফনামা এবং আগের সংসদের ভোটে জমা দেয়া প্রার্থীদের হলফনামা পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, ১০ বছর সময়ের ব্যবধানে সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ এবং তার স্ত্রী- দুজনেরই সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। হাতে নগদ টাকার পরিমাণ বেড়েছে এরশাদের স্ত্রীর।
তথ্যে দেখা যায়, সাবেক রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ ২০০৮ সালে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৭ থেকে প্রার্থী হওয়ার সময় যে সম্পদের বিবরণী দিয়েছিলেন, সেখানে ঋণ ও শেয়ার ছাড়া তার স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন পাঁচ কোটি ৭৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। আর এবার একাদশ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে যে হলফনামা জমা দিয়েছেন, সেখানে দেখা যায় শুধু নগদ টাকা, বিভিন্ন ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসাবে জমানো টাকা, এফডিআর ও ডিপিএস মিলিয়েই তার বর্তমান সম্পদের পরিমাণ নয় কোটি ৯৫ লাখ ২৩ হাজার ৪৪ টাকা। এর বাইরে গাড়ি, ফ্ল্যাট, জমি, শেয়ারসহ অন্যান্য স্থাবর সম্পদের মূল্য মিলিয়ে আরও প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার সম্পদ আছে।
নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় তার স্ত্রীর হাতে নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছিলেন দুই কোটি ১৩ লাখ ১০ হাজার ৭৮৬ টাকা। আর এবারের হলফনামায় স্ত্রীর হাতে নগদ টাকার পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ২৬ কোটি ২০ লাখ ২৯ হাজার ৯৩৩ টাকা। এর বাইরে নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের সময় স্ত্রীর নামে ব্যাংকে কোনো টাকা থাকার কথা না উল্লেখ করলেও বর্তমানে স্ত্রীর নামে দুটি ব্যাংক হিসাব থাকার কথা জানিয়েছেন। একটি হিসাবে ৪৭ লাখ ৯৮ হাজার ২২ টাকা এবং অপর হিসাবে ২৬ লাখ ৯১ হাজার ৬৯১ টাকা রয়েছে, অর্থাৎ এরশাদের স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবের চেয়ে হাতে নগদ টাকা আছে অনেক বেশি। এবারের হলফনামায় এরশাদ তার নিজের হাতে নগদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ২৮ লাখ ৫৩ হাজার ৯৯৮ টাকা এবং ব্যাংকে সঞ্চয়ী হিসেবে আছে ৩৭ লাখ ৬৯ হাজার ৪৬ লাখ টাকা। অর্থাৎ হাতে ও ব্যাংকে এরশাদের চেয়ে তার স্ত্রীর টাকার পরিমাণ অনেক বেশি।
বড় ব্যবসায়ী হিসেবে পরিচিত হলেও আন্দালিব রহমান পার্থর সম্পদের পরিমাণ বেশ কম দেখা গেছে।
বাংলাদেশ জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান পার্থ ঢাকা-১৭ আসনের জন্য জমা দেয়া হলফনামায় দেখিয়েছেন তার কাছে ১০০ তোলা স্বর্ণ আছে এবং এর দাম তিনি জানেন না। এ ছাড়া অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নগদ টাকার পরিমাণ ৩১ লাখ ১ হাজার ১৯৬ টাকা এবং ব্যাংকে আছে ৪৩ লাখ ২০ হাজার ৪৫৫ টাকা। স্থাবর সম্পদের মধ্যে তার কৃষি জমি, অকৃষি জমি কিছুই নেই বলে উল্লেখ করেছেন। তবে নির্মাণাধীন দুটি দালানের কথা উল্লেখ করলেও এর আর্থিক মূল্য জানেন না বলে উল্লেখ করেছেন।
ঢাকা-১৫ থেকে বিএনপির মনোনয়ন পাওয়া আসাদুজ্জামান রিপন তার মোট সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ১ কোটি ২৮ লাখ ৭২ হাজার ২৭৪ টাকা। কিন্তু স্ত্রীর নামে ছয়টি নির্মাণাধীন বাড়ি থাকার কথা জানিয়েছেন তিনি; যেখানে আর্থিক মূল্যের পরিমাণ উল্লেখ নেই।
নিরবের বিরুদ্ধে মামলা ২৬৭ : যুবদল সভাপতি সাইফুল আলম নিরব ঢাকা-১২ আসনে বিএনপির প্রার্থী। তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ২৬৭টি। জমিজমা নেই তার। মিরপুরে ফ্ল্যাট আছে তিনটি। বাড়ি ভাড়া থেকে বছরে পান ৩ লাখ ৩৩ হাজার টাকা। ব্যবসা থেকে আয় করেন ৫ লাখ ৪০ হাজার টাকা।
নবীর মামলা ১২১ : ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতির নবী উল্লা স্বশিক্ষিত। তার বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ১২১টি। তিনি ঢাকা-৫ আসনে বিএনপির প্রার্থী। ব্যবসা থেকে তার বছরে আয় ৬ লাখ ১৫ হাজার টাকা। তার নগদ আছে ৩৩ লাখ ৫৫ হাজার টাকা।
মামলা, সম্পদ বেড়েছে ‘দৌড়’ সালাউদ্দিনের : নবম সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-৫ আসনে প্রার্থী হন সালাউদ্দিন আহমেদ। আসন্ন একাদশ নির্বাচনে তিনি ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির মনোনয়ন পেয়েছেন। নবম সংসদ নির্বাচনের সময় তিনি ২৬ মামলার আসামি ছিলেন। এখন তার বিরুদ্ধে মামলার সংখ্যা ৮০।
১৯৯১ এবং ২০০১ সালের নির্বাচনে ঢাকা-৪ আসনে বিএনপির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে জয়ী হন সালাউদ্দিন। ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে তার নগদ ও ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ছিল তিন কোটি ৮৮ লাখ ৩০ হাজার টাকা। এবার তার টাকার পরিমাণ ছয় কোটি ২৮ লাখ ৬৩ হাজার টাকা। সালাউদ্দিন আহমেদের স্থাবর সম্পদও বেড়েছে। ২০০৮ সালে দেয়া হলফনামা অনুযায়ী সালাউদ্দিনের জমির পরিমাণ ছিল সাত একর ৬৯ শতাংশ অকৃষি জমি। বাড়ি ছিল চারটি। এবার জমির পরিমাণ উল্লেখ না করে তার দাম দিয়েছেন সালাউদ্দিন। এখন তিনি পাঁচটি বাড়ির মালিক। গুলশানে ছয়তলা ভবন করেছেন সালাউদ্দিন।
বাড়ি ভাড়ার আয় ৫ বছরে ১৫ গুণ : এক কোটি ৯০ লাখ টাকা ধার করেছেন ঢাকা-৫ আসনের বর্তমান এমপি হাবিবুর রহমান মোল্লা। ফ্যাক্টরি ভবন নির্মাণে বাকিতে দুই কোটি ৪৯ লাখ ৫৬ হাজার টাকার মালামাল কিনেছেন আওয়ামী লীগের এই প্রার্থী। ফ্যাক্টরির ভাড়াটিয়ার কাছ থেকে অগ্রিম নিয়েছেন তিন কোটি ৭৮ লাখ ৩৯ হাজার টাকা। দশম নির্বাচনে দেয়া হলফনামায় হাবিবুর রহমান তথ্য দিয়েছিলেন, পাঁচ কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার টাকা আগাম নিয়েছেন। তিনি দুদকের দায়ের করা একটি দুর্নীতি মামলার আসামি।
১৯৯৬, ২০০৮ ও ২০১৪ সালের নির্বাচনে জয়ী হাবিবুর রহমান মোল্লার নগদ টাকা কমেছে। ২০১৪ সালে নির্বাচনের আগে দেওয়া হলফনামায় বলেছিলেন, এক কোটি ৭৬ লাখ ২৬ হাজার টাকা হাতে নগদ ও ব্যাংকে জমা আছে তার। এবার তার হাতে নগদ ও ব্যাংকে জমা টাকার পরিমাণ ১৫ লাখ ২৯ হাজার টাকা। তবে বার্ষিক আয় বেড়েছে হাবিবুর রহমানের। ২০১৩ সালে তার বার্ষিক আয় ছিল ২৩ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এর মধ্যে বাড়ি ভাড়া থেকে পেয়েছিলেন ১০ লাখ ৯ হাজার ৮৬৪ টাকা। ২০১৮ সালে বাড়ি ভাড়া থেকে তার আয় হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৩৭ হাজার টাকা। পাঁচ বছরে তার বাড়ি ভাড়া থেকে আয় বেড়েছে ১৫ গুণ। এমপি হিসেবে সম্মানী ও ভাতা পেয়েছেন প্রায় ২৩ লাখ ২২ হাজার টাকা।
৪২ মামলার আসামি আব্বাস, কোটি কোটি টাকার মালিক : বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসের বিরুদ্ধে মামলা রয়েছে ৪২টি। তিনি নির্বাচন করতে চান ঢাকা-৮ আসনে। তার হাতে বিভিন্ন কোম্পানির প্রায় ৩০ কোটি টাকার শেয়ার রয়েছে। ঢাকা ব্যাংক লিমিটেডে তার শেয়ার আছে ১৮ কোটি ২ লাখ ৮৪ হাজার টাকার। পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ আছে ১১ কোটি ৩৬ লাখ ৫৯ হাজার টাকা। মির্জা আব্বাসের নগদ আছে ৩ কোটি ৬২ লাখ টাকা। তার স্ত্রী আফরোজা আব্বাসের নগদ টাকা আছে ২ কোটি ২৯ লাখ টাকা।
হাজী সেলিম : ঢাকা-৭ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রার্থী হয়েছেন দশম সংসদের স্বতন্ত্র এমপি হাজী মোহাম্মদ সেলিম। নব্বইর দশকে বিএনপি থেকে আওয়ামী লীগে আসা এই প্রার্থীর শিক্ষাগত যোগ্যতা নবম শ্রেণি। তার পেশা ব্যবসা। এবারে তিনি ব্যবসা থেকে নিজের আয় দেখিয়েছেন এক কোটি ১৬ লাখ ৬২ হাজার ৭৪ টাকা, যা পাঁচ বছর আগে ছিল এক কোটি ৬০ লাখ ১৫ হাজার ৭৬২ টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের ব্যবসা থেকে আয় দেখিয়েছেন সাত লাখ ২৪ হাজার ৫৬৩ টাকা। কিন্তু পাঁচ বছর আগে তার ওপর নির্ভরশীলদের কোনো আয় ছিল না।
শেয়ার-সঞ্চয়পত্র-ব্যাংক আমানত খাতে ৫ বছর আগে তার বার্ষিক আয় ছিল ৩৯ লাখ ৩৩ হাজার ৩৬৮ টাকা। এই খাতে এবার তিনি ‘প্রযোজ্য নয়’ বলে উল্লেখ করেছেন। ৫ বছর আগে তিনি চাকরি খাতে আয় দেখিয়ে ছিলেন ৪৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা। তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়ে ছিলেন ২৬ লাখ ৫১ হাজার ২০০ টাকা। এবার এই খাতে কোনো আয় না দেখালেও অন্যান্য সম্মানী ভাতা খাতে নিজের আয় দেখিয়েছেন ৫৭ লাখ তিন হাজার এবং তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় দেখিয়েছেন ১৯ লাখ ২৫ হাজার ৫৩৫ টাকা।
অস্থাবর সম্পদের বিবরণে তিনি এবার নিজ নামে নগদ টাকা দেখিয়েছেন দুই লাখ ৯৯ হাজার ৪৫৮ টাকা। স্ত্রীর নামে দুই কোটি নয় লাখ ৫৭০ এবং নির্ভরশীলদের নামে দুই কোটি ৮০ লাখ ৫০ হাজার ৫২৭ টাকা। ব্যাংকে জমার পরিমাণ দেখিয়েছেন নিজের এক কোটি ৩৪ লাখ ৫ হাজার ১০৫ টাকা। স্ত্রীর নামে তিন কোটি ৭৯ লাখ ৭ হাজার ৮৫ টাকা এবং নির্ভরশীলদের নামে ১১ কোটি ৯ লাখ টাকা। স্ত্রীর নামে সঞ্চয়পত্রে বা স্থায়ী আমানত ১০ লাখ টাকা। পরিবহনের সংখ্যা উল্লেখ না করে শুধু ২১ লাখ ২৬ হাজার ৫১৪ টাকা মূল্য উল্লেখ করা হয়েছে। অলঙ্কার খাতে নিজ নামে এক লাখ আট হাজার এবং স্ত্রীর নামে দুই লাখ টাকা উল্লেখ করা হয়েছে। অন্যান্য ব্যবসায় মূলধন খাতে নিজ নামে চার কোটি ৪২ লাখ ৭১ হাজার ৫৪১ টাকা, স্ত্রীর নামে ৯৬ লাখ ১৬ হাজার ৪৭৮ টাকা এবং নির্ভরশীলদের ওপর তিন কোটি ৮৭ লাখ ৬১ হাজার ২৪৭ টাকা।
পাঁচ বছরে আগে তার দায়দেনার পরিমাণ ছিল ২০৭ কোটি ৩০ লাখ টাকা। ওই সময়ে তার হলফনামায় ৫২টি মামলার কথা উল্লেখ করে তা প্রত্যাহার হয়েছে বলে জানালেও এবার তা উল্লেখ করা হয়নি। কিন্তু নিয়ম অনুযায়ী অতীতে মামলা থাকলে তাও উল্লেখ করতে হয়।
পাশাপাশি স্থাবর সম্পদের খাতে নিজ নামে ১৮ কোটি ৪৭ লাখ ৯ হাজার ৬২৮ টাকার দালান যা অর্জনকালীন মূল্য হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। যদিও ৫ বছর আগে তিনি স্থাবর সম্পদ দেখিয়েছিলেন নিজ নামে ১৬ কোটি ৮২ লাখ ৪৯ হাজার ৬২৭ টাকার দালান যা অর্জনকালীন মূল্য। এ ছাড়া স্ত্রীর নামে তিন কোটি ৮৬ লাখ ৫৯ হাজার ২৮৮ টাকা মূল্যের দালান এবং ২৩ লাখ টাকা মূল্যের অ্যাপার্টমেন্ট।
অন্যদিকে, আওয়ামী লীগ নেতা কামাল আহমেদ মজুমদারের আয় প্রতিবার এমপি হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উত্তরোত্তর বাড়ছে।
ঢাকা-১৫ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাওয়া কামাল আহমেদ মজুমদারের সম্পদের পরিমাণ বেড়েই চলেছে। কামাল আহমেদ মজুমদার এবারের নির্বাচনে জমা দেওয়া হলফনামায় স্থাবর ও অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ উল্লেখ করেছেন ১২ কোটি ৩০ লাখ ৮৫ হাজার ৬৮০ টাকা। এর আগে দশম জাতীয় নির্বাচনে হলফনামায় তার সম্পদের পরিমাণ ছিল ৭ কোটি ১১ লাখ ২৯ হাজার ৯৭৪ টাকা এবং নবম জাতীয় সংসদের সময় দেওয়া হলফনামায় সম্পদের পরিমাণ দেখিয়েছিলেন ৫ কোটি ৩০ লাখ ৪১ হাজার ৮৯ টাকা। হলফনামায় তিনি এর আগে তার বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতনের মামলাসহ মোট ২১টি ফৌজদারি মামলার কথা উল্লেখ করেন, যার প্রতিটিতেই খালাস পাওয়ার তথ্য দিয়েছেন।