দর্পণ ডেস্ক : স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহম্মদ নাসিম ড. কামাল হোসেন, কাদের সিদ্দিকীসহ ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের উদ্দেশে বলেছেন, এখনও সময় আছে- আপনারা মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তিকে ছেড়ে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের দলে ফিরে আসুন। এমপি হওয়ার জন্য স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে হাত মেলাবেন না।
শনিবার বিকেলে রাজধানীর শাহবাগে জাতীয় জাদুঘরের সামনে ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিসব হিসেবে ঘোষণার দাবিতে আয়োজিত সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদ এ সমাবেশের আয়োজন করে।
নৌ-পরিবহনমন্ত্রী ও সম্মিলিত মুক্তিযোদ্ধা সংসদের আহ্বায়ক শাজাহান খানের সভাপতিত্বে সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন- সমাজকল্যাণমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন, সাবেক শিল্পমন্ত্রী দিলীপ বড়ুয়া, শাজাহান খানের ছেলে আসিফুর রহমান খান, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মিজানুর রহমান মিজান প্রমুখ।
সমাবেশে মুক্তিযোদ্ধাদেরসহ বিভিন্ন সংগঠন অংশ নেয়। এতে তারা ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির দাবি জানান।
সমাবেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, এ মাস বিজয়ের মাস। এ মাস বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত করারও মাস। সারাদেশে এদের পরাজিত করতে হবে। সারাদেশে বিজয় মঞ্চ গঠন করে তাদের প্রতিহত করতে হবে। বিএনপি-জামায়াতকে প্রতিহত না করা পর্যন্ত আপনারা কেউ বিজয় মঞ্চ ছাড়বেন না।
তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে দেশের জনগণ আওয়ামী লীগকে নির্বাচিত করবে ও বিএনপি-জামায়াতকে চূড়ান্তভাবে পরাজিত করবে। এবার ভোটের বিপ্লব হবে। এমন বিপ্লব করা হবে যে, ‘বাটি চালান’ দিয়েও বিএনপি-জামায়াতকে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
ড. কামালদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা বিএনপি-জামায়াতকে ছেড়ে আসুন। নইলে এমনভাবে পড়ে যাবেন যে, আর উঠতেই পারবেন না।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, খেলা হবে মাঠে। মেসি গোল মিস করতে পারেন, কিন্তু এ নির্বাচনে শেখ হাসিনা গোল মিস করবেন না।
নাসিম বলেন, রাজাকার ও তাদের পরিবারের কাউকেই বিএনপি থেকে মনোনয়ন দেয়া হবে না বলা হয়েছিল। কিন্তু এ নির্বাচনে তারা মোট ৩০টি আসনে রাজাকার ও তাদের আত্মীয়স্বজনদের মনোনয়ন দিয়েছে। এর মাধ্যমে বিএনপির পুরনো চরিত্র ফুটে ওঠেছে।
রাশেদ খান মেনন বলেন, আমরা লক্ষ করছি যে- স্বাধীনতাবিরোধীরা বিএনপির মাধ্যমে নির্বাচনে এসেছে। ড. কামাল হোসেন দলে যুদ্ধাপরাধী থাকলে তাদের সঙ্গে তিনি নির্বাচনে যাবেন না বলেছিলেন। কিন্তু এখন বিএনপির প্রতীক ‘ধানের শীষ’ নিয়ে তার দল নির্বাচনে গিয়েছে। এ থেকে বোঝা যায়, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তির চক্রান্ত এখনও থামেনি।
তিনি বলেন, এ নির্বাচনেই প্রমাণ হয়ে যাবে এদেশে মুক্তিযুদ্ধবিরোধী শক্তি আসবে কিনা। তারা আসবে না তা জানি। কিন্তু আমাদের সতর্ক থাকতে হবে।
মেনন বলেন, এ দিবসে (মুক্তিযোদ্ধা দিবস) আমাদের শপথ হোক- সামনের নির্বাচনকে বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়ে শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তিকে ক্ষমতায় নিয়ে আসা। এ সময় তিনি অন্যান্য দিবসের মতো ১ ডিসেম্বরকে মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে ঘোষণার দাবি জানান।
শাজাহান খান বলেন, বাংলাদেশে বহু দিবস রয়েছে। এমনকি আমরা হাত ধোয়া দিবসও পালন করি। কিন্তু কখনও মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য কোনো দিবস স্বীকৃতি দেয়া হয়নি। আমরা সব সময় মুক্তিযোদ্ধা দিবসকে ঘোষণা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীর কাছে আহ্বান জানিয়েছি।
তিনি বলেন, আন্তর্জাতিকভাবে ২৫ মার্চকে গণহত্যা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির জন্য প্রধানমন্ত্রী কাজ করেছেন। এজন্য আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। মুক্তিযোদ্ধা দিবস হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হলে পরবর্তীতে যদি আমরা নাও থাকি তখন এ দিবসে মুক্তিযোদ্ধাদের যেন সম্মান জানানো হয়। এটি বর্তমান প্রজন্মকে নিশ্চিত করতে হবে।
দিলীপ বড়ুয়া বলেন, আগামীর সংগ্রামে আমাদের বিজয় লাভ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে শক্তিশালী করতে হবে। যে ষড়যন্ত্র চলছে, তাকে প্রতিহত করে সামনের নির্বাচনে আমাদের জয়লাভ করতে হবে।
এ সময় তিনি আগামী নির্বাচনে জামায়াত-শিবিরের ষড়যন্ত্রকে প্রতিহত করতে এবং আওয়ামী লীগকে জয়ী করার জন্য তরুণ সমাজের প্রতি আহ্বান জানান।
সমাবেশ থেকে জানানো হয়, আগামী ১৪ ডিসেম্বর রায়ের বাজার বধ্যভূমিতে শহীদ বুদ্ধিজীবিদের সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানানো হবে। এছাড়া ১৫ ডিসেম্বর ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হবে।