দর্পণ ডেস্ক : বিখ্যাত চলচ্চিত্র নির্মাতা আমজাদ হোসেনকে ব্যাংককের বামরুনগ্রাদ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানে তিনি নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) রয়েছেন।
আমজাদ হোসেন প্রখ্যাত নিউরো সার্জন ডা. টিরা ট্যাংভিরিয়াপাইবুনের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন। ইতিমধ্যে তার চিকিৎসা শুরু হয়েছে।
দুই ছেলে সাজ্জাদ হোসেন দোদুল ও সোহেল আরমান ব্যাংককে তার সঙ্গে গেছেন ।
সোহেল আরমান সাংবাদিকদের বলেন, এখানে আনার পর চিকিৎসকদের তৎপরতা ও চিকিৎসায় আমরা খুশি। রোগীর প্রতি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাও ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছে, খুব ভালো চিকিৎসা হচ্ছে। আব্বার অবস্থা একটু ক্রিটিক্যাল। জটিলতা কেটে গেলেই হয়তো মস্তিষ্কে অস্ত্রোপচার হবে।
মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১১টার দিকে থাইল্যান্ডের ব্যাংকক থেকে তিন সদস্যের চিকিৎসক দল বাংলাদেশে আসেন। চিকিৎসকরা তাকে পর্যবেক্ষণ করেন এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে নেয়া যাবে কিনা।
এর পর ব্যাংককের ডাক্তাররা তাকে নিয়ে যাওয়ার কথা জানান।
গত ১৮ নভেম্বর নিজ বাসভবনে তিনি ব্রেনস্ট্রোকে আক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত রাজধানীর আয়েশা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেয়া হয়।
সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ইমপালস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। পরে তার লাইফ সাপোর্ট খুলে ফেলা হয়৷
আমজাদ হোসেন ১৯৪২ সালের ১৪ আগস্ট জামালপুরে জন্মগ্রহণ করেন। শৈশব থেকেই তিনি সাহিত্যের প্রতি অনুরাগী ছিলেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকায় এসে সাহিত্য ও নাট্যচর্চার সঙ্গে জড়িত হন।
তার নির্মিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে- গোলাপী এখন ট্রেনে, বাল্যবন্ধু, পিতাপুত্র, এই নিয়ে পৃথিবী, বাংলার মুখ, নয়নমনি, সুন্দরী, কসাই, জন্ম থেকে জ্বলছি, দুই পয়সার আলতা, সখিনার যুদ্ধ, ভাত দে, হীরামতি, প্রাণের মানুষ, সুন্দরী বধূ, কাল সকালে, গোলাপী এখন ঢাকায় ও গোলাপী এখন বিলেতে।
১৯৮১ সালে চলচ্চিত্র পরিচালক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন আমজাদ হোসেন। চলচ্চিত্রে অবদানের জন্য তিনি স্বাধীনতা পুরস্কার ও একুশে পদকে ভূষিত হন।
গুণী এ পরিচালক ১৯৭৮ সালে গোলাপী এখন ট্রেনে এবং ১৯৮৪ সালে ভাত দে চলচ্চিত্র নির্মাণের জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেন।
এ ছাড়া শিশুসাহিত্য রচনার জন্য তিনি ১৯৯৩ ও ১৯৯৪ সালে দুবার অগ্রণী শিশুসাহিত্য পুরস্কার এবং ২০০৪ সালে বাংলা একাডেমি সাহিত্য পুরস্কার লাভ করেন।