দর্পণ ডেস্ক : সাবেক জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির সভাপতি একেএম মোশাররফ হোসেনের দেখা পাওয়া যাচ্ছে না। গত এক সপ্তাহ ধরেই তার সৎ ভাই তাকে জনবিচ্ছিন্ন করে রেখেছেন বলে অভিযোগ দলীয় নেতাকর্মীদের। মুঠোফোনেও পাওয়া যাচ্ছে না প্রবীণ এই রাজনীতিবিদকে।
মোশাররফ অনুসারীদের অভিযোগ, তারই ছোট ভাই (সৎ ভাই) মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু তাকে গৃহবন্দী করে রেখেছেন। কারও সঙ্গেই যোগাযোগ করতে দেয়া হচ্ছে না তাকে। মুক্তাগাছায় বিএনপির মনোনয়ন ও দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতির পদ নিয়ে র্দীঘ সময় ধরে চলা দ্বন্দ্বের কারণেই এখন তাকে লোকচক্ষুর অন্তরালে রাখা হয়েছে।
জানতে চাইলে ময়মনসিংহ (দক্ষিণ) জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ বলেন, আজকের (বুধবার) মনোনয়ন বোর্ডে মোশাররফ হোসেনের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ছাত্রদল নেতা মিন্টু। মনোনয়ন বোর্ড মোশাররফ সাহেবের অনুপস্থিত থাকার বিষয়টি মাথায় রেখে প্রতিনিধিকে গ্রহণ করেছে।
তিনি আরও জানান, গত কয়েকদিন যাবত আমিও যোগাযোগ করার চেষ্টা করে পাইনি সভাপতিকে। নির্বাচনের আগ মুহূর্তে তাকে না পাওয়ায় আমরা অনেক সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগছি।
জানা যায়, বিগত ১৩ তারিখ থেকে ময়মনসিংহ, মুক্তাগাছা ও ঢাকার কোথায় দেখা মিলছে না মোশাররফ হোসেনের। তার ব্যবহৃত মুঠোফোনের তিনটি নাম্বারে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা হলেও পাওয়া যায়নি। ফলে দলীয় নেতাকর্মীদের মাঝে উদ্বেগ-উৎকন্ঠার সৃষ্টি হয়েছে।
মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকারিয়া হারুন বলেন, গত ছয় মাস ধরে তিনি অনেকটাই জনবিচ্ছিন্ন। আমি তার বাড়িতে গেলেও দেখা করার সুযোগ মিলতো না। শুধু মুঠোফোনেই যোগাযোগ হত। তবে গত এক সপ্তাহ ধরে সেটিও পারছি না। আমরা এখন অভিভাক শূন্য।
তিনি বলেন, কৌশলে মোশাররফ হোসেনের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ এবং জমা দেয়া হয়েছে। মনোনয়ন বোর্ডেও তার প্রতিনিধি উপস্থিত ছিল।
তবে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জাকির হোসেন বাবলু বলেন, আমার বড় ভাই মোশাররফ হোসেন তার ছেলে রানার সঙ্গে ঢাকায় থাকে। তাকে গৃহবন্দী করে রাখার প্রশ্নই ওঠে না।
এদিকে মোশাররফ হোসেনের ছেলে জুবায়ের হোসেন রানার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমরা পারিবারিকভাবেই চাচ্ছি বাবলু চাচা নির্বাচন করুক। কারণ আমার বাবা শারীরিকভাবে ভালো থাকলেও স্মৃতিশক্তি নেই বললেই চলে। শেষ নির্বাচন কবে হয়েছে তিনি বলতে পারছেন না। খালেদা জিয়াকেও চিনতে পারেন না। এমনকি সুলতান সালাউদ্দিন টুকুর সঙ্গে দীর্ঘ তিন বছর কাটানোর পরও সেদিন দেখা হলে চিনতে পারেননি। এমন অবস্থায় আমরা তাকে নির্বাচন করতে দিতে পারি না।
তবে নির্বাচন করার আগ্রহ এখনো তিনি দেখাচ্ছেন- এমনটি জানিয়ে মোশাররফপুত্র রানা বলেন, আমার বাবার অনেক জনপ্রিয়তা আছে। সে তুলনায় চাচার জনপ্রিয়তা অনেক কম। নির্বাচনে জিততে হলে চাচাকে কমপক্ষে ৫ কোটি টাকা খরচ করতে হবে।