গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: কুয়াকাটা সমুদ্র সৈকতে রাসমেলার পজেশন বিক্রি এবং দখল নিয়ে স্থানীয় কাউন্সিলর ও সানরাইজ হোটেলের মালিক শাহজালাল গংদের মধ্যে উত্তেজনা সৃষ্টি হলে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রন করে। এ ঘটনায় রোববার সকাল ১০টায় শাহজালাল গংদের বিরুদ্ধে স্থানীয় কাউন্সিলর শাহআলমের
নেতৃত্বে ব্যবসায়ীরা বিক্ষোভ মিছিল করেছে।
জানা যায়, রোববার সকালে সানরাইজ হোটেলের মালিক শাহজালাল মিয়া সৈকতের পশ্চিম পাশের সাদাবালিতে রাসমেলায় আগত ভাসমান ব্যবসায়িদের কাছে বিক্রির উদ্যেশে পজেশন দখল এবং ঘর নির্মাণ করতে গেলে ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ শাহ আলম হাওলাদার, শ্রমিক লীগের কুয়াকাটা পৌর শাখার সভাপতি আব্বাস কাজী এতে বাধা দেয়। এ নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বাকবিতন্ডা ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় উত্তেজিত অর্ধশতাধিক ব্যবসায়িরা কাউন্সিলর শাহ আলম হাওলাদারের নেতৃত্বে শাহ জালাল গংদের বিরুদ্ধে কুয়াকাটা মহাসড়কে বিক্ষোভ মিছিল করে।
মিছিলকারীদের অভিযোগ সানরাইজ হোটেলের মালিক শাহজালাল মিয়া তার নিজের জমি দাবী করে সমুদ্র সৈকতে থাকা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অবৈধভাবে প্রায় ৩ বছর যাবত ভাড়া আদায় করে আসছে। কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তানভীর রহমান এসব ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাউকে ভাড়া দিতে নিষেধ করলেও সানরাইজ কর্তৃপক্ষ স্থানীয় একটি প্রভাবশালীদের সহযোগিতায় জোরপুর্বক ভাড়া আদায় করে আসছে। ভাড়া না দিতে চাইলে তাদেরকে পুলিশ দিয়ে হয়রাণী করছে বলে বিক্ষোভ কারীরা অভিযোগ করেছেন।
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ইসমাইল জানান, সমুদ্র সৈকতের সাদাবালিতে বাঁশের বেড়া দিয়ে পজেশন নিয়ে রাস পূর্ণিমার মেলায় আগত ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছে হাত মেপে বিক্রি করছে। সরকারী জমিতে ব্যবসার জন্য ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৫শত থেকে ১হাজার টাকা পর্যন্ত আদায় করছে। অপরদিকে সৈকতে থাকা স্থানীয় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকেও জোর করে ভাড়া আদায় করছে। সরকার দলীয় লোক পরিচয় দিয়ে এ ভাড়া আদায়ের কারনে আওয়ামীলীগ সরকারের ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন হচ্ছে।
এ বিষয়ে কাউন্সিলর শাহ আলম হাওলাদার বলেন, শাহ জালাল গংরা কয়েক বছর পর্যন্ত সৈকতের সরকারী জমি নিজের দাবী করে জোর করে ভাড়া আদায় করে আসছে। রোববার সকালে সৈকতের পশ্চিম অংশে বাঁশ দিয়ে পজেশন দখল করে মেলায় আসা ভাসমান ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া আদায়ের উদ্যোগ নেয়। ব্যবসায়ীদের অভিযোগের ভিত্তিতে তিনি নিষেধ করলেও নিষেধ উপেক্ষা করে আবারও ঘর তোলার চেষ্টা করলে বাকবিতন্ডা হয়। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদ জানিয়ে বিক্ষোভ মিছিল করে।
সৈকতের জমির মালিকানা দাবীদার কে এম শাহ জালাল মিয়া বলেন, তার জমিতে তিনি ঘর তুলতে গেলে ৩ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর বাধা দেয়। তিনি অভিযোগ করেন, কাউন্সিলর শাহ আলম তাকে প্রান নাশের হুমকিসহ অশালীণ গালমন্দ করেন। এ বিষয়ে তিনি মহিপুর থানায় মৌখিক ভাবে অভিযোগ করেছেন। মহিপুর থানার অফির্সাস ইনচার্জ (ওসি) মোঃ সাইদুল ইসলাম জানান, সৈকতের পজেশন দখল নিয়ে উত্তেজনা ও বিক্ষোভ মিছিলের খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে দুই পক্ষকে আইন শৃঙ্খলা বজায় রাখতে শান্ত থাকার জন্য বলা হয়েছে। এ নিয়ে যাতে আর কোন ঝামেলা না হয় এজন্য দুই গ্রুপকে তিনি সতর্ক করে দিয়েছেন বলেও জানান।