দর্পণ ডেস্ক : স্বাধীনতা যুদ্ধে অবদান রাখা কুড়িগ্রামের বীরপ্রতীক খেতাবপ্রাপ্ত তারামন বিবি আবারো গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। দীর্ঘদিনের শ্বাসকষ্ট আর কাশি তার শরীরে বৃদ্ধি পেয়েছে। বিশেষ করে শীত শুরু হওয়ায় তার ঠান্ডা লেগে শ্বাসকষ্ট বেড়েছে। গত কয়েকদিন যাবৎ তিনি নিজে নিজে হাঁটা চলা ভালোভাবে করতে পারছেন না। বৃহস্পতিবার বিকালে তাকে ঢাকায় সিএমএইচ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়।
তার শারীরিক অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার দিকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। পরে শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে বিকালে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য হেলিকপ্টারযোগে ঢাকায় প্রেরণ করা হয়।
অসুস্থ তারামন বিবিকে চিকিৎসা সেবা দিতেন ও নিয়মিত খোঁজখবর নিতেন রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকরা। রাজীবপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা. দেলোয়ার হোসেন জানান, ঠাণ্ডাজনিত কারণে তারামন বিবির শ্বাসকষ্ট বেড়ে যায় সঙ্গে কাশিও অনেক বেড়ে গেছে। শ্বাস কষ্ট বেড়ে যাওয়ায় তাকে কয়েক বার অক্সিজেন ও নেবুলাইজেশনের সহযোগিতা নিয়ে শ্বাস-প্রশ্বাস নিতে হয়। তিনি অসুস্থ্য হওয়ায় একা চলাফেরা করতে পারতেন না। অবস্থার অবনতির কারণে ময়মনসিংহ হাসপাতালে নিতে বলা হয়েছে।
তারামন বিবির ছেলে আবু তাহের বলেন, রাজীবপুর হাসপাতালের চিকিৎসকেরা নিয়মিত বাড়িতে এসে চিকিৎসা দিতেন। বুধবার রাতে মায়ের শরীরের অবস্থার অবনতি হলে ময়মনসিংহ নেয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসক। তাই তাকে ময়মনসিংহ সিএমএইচ হাসপাতালে নেয়া হয়। এখন মায়ের অবস্থার অবনতি হওয়ায় হেলিকপ্টারযোগে ঢাকা সিএমএইচ হসপিটালে নেয়া হয়েছে।
তিনি আরও বলেন, অসুস্থ থাকায় মা একা চলাচল করতে পারত না। অন্যের সহযোগিতা নিয়ে চলাচল করতেন। তিনি তার মায়ের সুস্থতার জন্য সকলের নিকট দোয়া চেয়েছেন।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন জানান, আমি প্রতিনিয়ত তার খোঁজখবর রাখছি এমনকি ময়মনসিংহ জেলা প্রশাসককেও তার অসুস্থতার বিষয়টি অবহিত করেছি। তিনি যাতে উন্নত চিকিৎসা সেবা পান সেটা নিশ্চিত করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, কুড়িগ্রামের রাজীবপুর উপজেলার কাচারীপাড়া গ্রামে পবিবারের সঙ্গে বসবাস করেন বীরপ্রতীক তারামন বিবি। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১নং সেক্টরের হয়ে তারামন বিবি জীবন বাজি রেখে মুক্তিবাহিনীদের রান্না বান্না, তাদের অস্ত্র লুকিয়ে রাখা, পাকবাহিনীদের খবরা খবর সংগ্রহ করে মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণকারী মুক্তিযোদ্ধাদের তথ্য দেয়া এবং সম্মুখ যুদ্ধে পাকবাহিনীদের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করায় তার অনেক অবদান রয়েছে। এ কারনে তাকে বাংলাদেশ সরকারের বীরপ্রতীক খেতাব পান তিনি।