মোঃ শাহাগির মৃধা,সরাইল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার   সরাইলে কত বিচিত্র উপায়ে দখলের ঘটনা ঘটে চলেছে, তার বিবরণ জানলে বিস্মিত ও ক্ষুব্ধ হতে হয়। প্রতিটি দখলের পেছনেই থাকে একেকজন খলনায়ক। এখানকার খাল, নদী-নালা, বিল দখল করে রমরমা বাণিজ্য কেন্দ্র খুলে বসার তুঘলকি সব কান্ড-কারখানা খবরের কাগজে মাঝে মধ্যে প্রকাশিত হয়।

সরাইল উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় জনগুরুত্বপূর্ণ পানি নিস্কাশনের বিশেষ করে খাল ও নালা দখল করে বিচিত্র সব ব্যবসা ফেঁদে বসার সংবাদও কম মেলে না। স্থানীয় প্রশাসন ও সংশ্লিস্ট বিভাগ কিছুদিন তৎপর থাকে, তারপর একই অবস্থা। এখানকার জেলা পরিষদের  অধীনে থাকা খালগুলো বেশিরভাগই বর্তমানে বেদখল।

সম্প্রতি পত্রিকায় প্রকাশিত সরাইলে খাল দখল করে ব্যবসা করা সংক্রান্ত প্রতিবেদনটি পড়লে হতবাক হতে হয়। সরাইল উপজেলা সদর ও আশপাশ জনবহুল এলাকায় বিশাল এলাকাজুড়ে চলছে কাঠ, বাঁশ, ইট-বালুর ব্যবসা। প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যবসায়ী ছোট গদিঘর তুলে জমিয়ে ব্যবসা ফেঁদেছেন। জমির মালিক হওয়া সত্ত্বেও নিয়ন্ত্রণ নেই সড়ক ও জনপথ বিভাগের।

সদরের জেলা পরিষদ মালিকানাধীন একটি জনগুরুত্বপূর্ণ মূল্যবান একটি খাল স্থানীয়  প্রভাবশালী মহল সেটি দখল করে মামলা- মোকদ্দমার জাল বিছিয়ে বছরের পর বছর ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন। বিভিন্ন ব্যবসায়ীদের কাছে ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন তারা। শুধু সদরে নয়, সরাইল উপজেলার অরুয়াইল, পানিশ্বর, কালীকচ্ছ, চুন্টা ও শাহবাজপুর এলাকায় অধিকজনগুরুপূর্ণ মূল্যবান অনেক জায়গা এভাবে বেদখল হয়ে গেছে। জেলা পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের একাধিক সদস্য খোলাখুলি বলেছেন, সরাইলে জেলা পরিষদের অনেক সম্পত্তি বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তি দখল করে রেখেছেন।

অবৈধ দখলদারদের ক্ষমতার উৎস কী ? এ জিজ্ঞাসার জবাব খুঁজতে গেলে বেরিয়ে আসে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের কথা। যখন যে দল ক্ষমতায় থাকে, তখন সে দলেরই প্রভাবশালী ব্যক্তিরা চালু রাখে দখল বাণিজ্য। সরকারী জমি জবরদখল করা একটি অপরাধ। এ ধরনের অপরাধের সঙ্গে যারা যুক্ত তাদের অবশ্যই আইনের আওতায় আনতে হবে। এসব দখলদারের জন্য সরকার আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অপরাধীর রাজনৈতিক পরিচয় বিবেচনায় না নিয়ে তার অপরাধমূলক কর্মকান্ডকে আমলে নিয়ে স্বাভাবিক আইনী প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে অন্যায়ের সুরাহা করা গেলে তা শুভ ফলই বয়ে আনবে। তবে সব কিছুর আগে সরকারী সম্পত্তি দখলমুক্ত করা চাই। এ জন্য কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ জরুরী। স্থানীয়রা আশা করেন, সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যাবতীয় দখল তৎপরতার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তুলবে।