পৃথিবীর প্রাচীন সপ্তম আশ্চর্যের একটি পিরামিড। প্রাচীন এ স্থাপনা নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছিল বিশাল বিশাল পাথর খণ্ড। পাথর খণ্ডের এক একটির ওজন ছিল প্রায় ৬০ টন আর দৈর্ঘ্য ছিল ৩০ থেকে ৪০ ফুটের মতো। এগুলো সংগ্রহ করা হয়েছিল দূর-দুরান্তের পাহাড় থেকে। পাথরের সঙ্গে পাথর জোড়া দিয়ে তৈরি করা হতো পিরামিড।

তবে এ স্থাপনার সবচেয়ে বিশেষত্ব হলো যুগ যুগ ধরে টিকে থাকা। প্রশ্ন থেকে যায়, নির্মাণকাজে ব্যবহৃত বিশাল ওজনের পাথর কিভাবে ওপরে তোলা হতো। প্রায় সাড়ে চার হাজার বছরেও পিরামিডের রহস্য পুরোপুরি উদঘাটন করা যায়নি।

তবে প্রত্নতত্ত্ববিদরা এবার পিরামিড যে পাথরের ব্লক দ্বারা নির্মিত, সেগুলো কিভাবে উপরে তোলা হয়েছে তার একটি নকশা আবিষ্কার করেছেন। আর এটি আবিষ্কার করা হয়েছে মিসরের হাতনুব খনির মধ্যে মধ্যে পাওয়া একটি অতি পুরনো একটি সিঁড়ির ওপর ভিত্তি করে। কায়রোর ফ্রেঞ্চ ইনস্টিটিউট ফর ওরিয়েন্টাল আর্কিওলজি ও যুক্তরাজ্যের লিভারপুল বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা এটি নকশায় রূপ দিয়েছেন।

হাতনুব খনি শ্বেত পাথরের জন্য বিখ্যাত, যা মূলত ভাস্কর্যের কাজে ব্যবহৃত হয়। খনিটি মিসরের পূর্ব অঞ্চলের একটি পাহাড়ে অবস্থিত।

নতুন এক নকশায় দেখা যায়, প্রাচীন পিরামিড নির্মাণে মিসরীয়রা ব্লক ওপরে তোলার জন্য র‌্যাম্প (ধাপবিহীন সিঁড়ি) ও কাঠের তক্তা ব্যবহার করেছেন।

ওই নকশায় দেখানো হয়, মিসরীয়রা পিরামিড নির্মাণের জন্য কিভাবে কয়েক টন ওজনের ব্লক স্লেজের মাধ্যমে কয়েকশ ফুট ওপরে তুলতেন।

গবেষকরা বলছেন, একটি প্রাচীন প্রত্নতত্ব নিদর্শন থেকে ধারণা করা যায়, প্রাচীন মিসরীয়রা ব্লক ওপরে তোলার জন্য এক ধরনের জটিল পদ্ধতি অনুসরণ করতেন। এক্ষেত্রে তারা একটি ধাপবিহীন সিঁড়ি (র‌্যাম্প) এবং এর দুই পাশে দুটি ধাপযুক্ত সিঁড়ি ব্যবহার করতেন। আর সিঁড়ি স্থাপন করা হতো ২০ ডিগ্রি কোণে।

এর আগে ধারণা করা হতো ১০ ডিগ্রি কোণে ওই সিঁড়ি স্থাপন করা হতো। র‌্যাম্পের ভেতরপ্রান্তে উভয় পাশে দেড় ফুট পর পর কাঠের খুঁটি বসাতেন।