দর্পণ ডেস্ক : ভারত গুজরাট প্রদেশে বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তিটি নির্মাণ করেছে। মূর্তিটি ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের অন্যতম নেতা সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের। ২ হাজার ৯৯০ কোটি রুপি ব্যয়ে গুজরাটে নির্মিত ১৮২ মিটার উচ্চতার এই মূর্তি।
এর নাম দেয়া হয়েছে ‘স্ট্যাচু অব ইউনিটি’ বা ‘ঐক্যের মূর্তি’। কিন্তু এই ‘ঐক্যের মূর্তি’ নির্মাণে গুজরাটের কৃষকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন বলে জানিয়েছে বিবিসি বাংলা।
গুজরাটের পশ্চিমাঞ্চলীয় একটি এলাকার কৃষক ভিজেন্দ্র তাদভী অনেক দিন ধরেই তার প্রায় তিন একর জমির সেচের পানির জন্য প্রচণ্ড কষ্ট করছেন। তিনি এসব জমিতে অনেক দিন ধরেই মরিচ, ভুট্টা আর বাদাম চাষ করছেন।
ভারতের লাখ লাখ কৃষকের মতো তিনিও চাষাবাদের জন্য মৌসুমি বৃষ্টিপাতের ওপর নির্ভর করেন। কিন্তু সেচের অভাবে আরও অনেক কৃষকের মতো তার ফসলও সব সময় ভালো হয় না। তাই ২০১৫ সালে তিনি গুজরাট সরকারের বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু মূর্তি বানানোর প্রকল্পে গাড়ি চালকের কাজ নেন।
তাদভী বলেন, ব্রোঞ্জের বড় মূর্তি নির্মাণে এত অর্থ ব্যয় না করে সরকারের উচিত তা কৃষি খাতে ব্যয় করা।
অন্য অনেক কৃষকের মতো এই মূর্তি নির্মাণে চরম অসন্তুষ্ট তিনি। প্যাটেল মেমোরিয়ালের আওতায় মূর্তি ছাড়াও একটি তিন তারকা হোটেল, একটি জাদুঘর এবং একটি গবেষণা কেন্দ্র নির্মাণ করা হয়েছে।
তাদভীর গ্রাম ১০ কিলোমিটার দূরের একটি জায়গায় এসব নির্মাণ করা হয়েছে। সেখানকার বেশিরভাগ মানুষ দরিদ্র ও উপজাতীয়। অনেকেই ক্ষুধা ও অপুষ্টিতে ভুগছে। যদিও সরকারের মতে, এই উঁচু মূর্তি সেখানকার অর্থনীতিকে চাঙ্গা করে তুলবে। কারণ বছরে অন্তত পঁচিশ লাখ মানুষ মূর্তিটি দেখতে যাবে।
কিন্তু সরকারের এই আশাবাদে সন্তুষ্ট নয় স্থানীয়রা। পানির জন্য বৃষ্টির ওপর নির্ভর করা আরেক কৃষক ভোলা তাদভী বলেন, সারা বছরে একটি মাত্র ফসল ঘরে তুলেই আমাদের সন্তুষ্ট থাকতে হয়।
এদিকে জেলা কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, অঞ্চলটিতে পানি সরবরাহ নিশ্চিত করার অঙ্গীকার করেছে সরকার।