দর্পণ ডেস্ক : ফিলিস্তিন আজও ফেভারিট শিরোপার লড়াইয়ে। তাজিকিস্তান হিসাব পাল্টে দিতে চায়।
বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপের জন্য আবার দুই বিদেশি দলের লড়াই। প্রধানমন্ত্রী নিজের হাতে এই ট্রফি তুলে দেবেন বিজয়ী দলের হাতে। ২০১৫-তে একবারই ফাইনাল খেলেছিল বাংলাদেশ। মালয়েশিয়ার বিপক্ষে তুমুল লড়াই হয়েছিল সেদিন। কিন্তু সোনালি ট্রফিটা হাতে ছোঁয়া হয়নি স্বাগতিকদের। গতবার এই ট্রফিই নিয়ে গেছে নেপাল। এবার অবশ্য টুর্নামেন্টটা মানে এতখানি এগিয়েছে যে নেপালকে গ্রুপ পর্বেই বিদায় নিতে হয়েছে, বাংলাদেশও ফাইনালের দেখা পায়নি।

যাদের কাছে হেরে আজ দর্শক জামাল-তপুরা সেই ফিলিস্তিন আজও ফেভারিট শিরোপার লড়াইয়ে। তাজিকিস্তান হিসাব পাল্টে দিতে চায়। এই টুর্নামেন্টে তেমন দৃঢ়চেতাই মনে হয়েছে তাদের। যে ফিলিপাইনের কাছে হেরে এশিয়ান কাপ খেলা হয়নি দলটির, বঙ্গবন্ধু কাপে ফের তাদের মুখোমুখি হয়েই ২-০ গোলের দাপুটে জয় তুলে নিয়েছে। তাতেই নিশ্চিত হয়েছে বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামের এই ফাইনাল। বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপটাকে এশিয়ার অন্যতম সেরা টুর্নামেন্ট হিসেবে দেখার ইচ্ছা সরকারের শীর্ষ মহল থেকেই। তাতে আজ স্বাগতিকদের দর্শক হয়ে থাকার বাস্তবতটাও মেনে নিতে হচ্ছে। নেপাল কোচ বালগোপাল মহাজন বিদায়ের সময়েও আসরের প্রতিদ্বন্দ্বিতার প্রশংসা করে গেছেন। ফিফা, এএফসির সূচির বাইরে বড় দলগুলোর বিপক্ষে খেলার এই সুযোগটাই তার কাছে বড় মনে হয়েছে। ফিলিস্তিন, তাজিকিস্তান, ফিলিপাইনও টুর্নামেন্টটাকে নিয়েছে গুরুত্বের সঙ্গে। ফিলিপাইনের মূল দলটা এই মুহূর্তে কাতারে থাকলেও এশিয়ান কাপের আগে আরো যাদের স্কোয়াডে সুযোগ হতে পারে, তাদেরই পরীক্ষা হয়ে গেছে বাংলাদেশে। তাজিকিস্তান বিদেশি লিগে খেলা ফুটবলারদের পায়নি এ আসরে, স্থানীয় লিগের পারফরমারদেরও দেখে নেয়ার ভালো একটা সুযোগ পেয়েছেন কোচ এই টুর্নামেন্টে। ফিলিস্তিন তো মূল দলটাই নিয়ে এসেছে। কোচ নুরেদ্দিন আলি বলেছেন, তাদেরও মাথায় এশিয়ান কাপ। সেই আসরের প্রস্তুতির জন্য এই আসরটা মন্দ নয়।

তাতেই আসলে টুর্নামেন্ট উপভোগ্য হয়ে উঠেছে। এশিয়ান গেমস, সাফের পর বাংলাদেশ নিজেদের আরো ভালোভাবে জানতে পেরেছে এই আসরে। ঘরের মাঠে শক্তিশালী প্রতিপক্ষের বিপক্ষে বারবার এমন লড়াইয়েই তো নিজেদের আরো উঁচুতে তুলে ধরার তাগিদটা বাড়বে। আজ বাংলাদেশের খেলোয়াড়দের জন্যও সুযোগ টুর্নামেন্টের সেরা দুটি দলের ফুটবল উপভোগ করার। ফিলিস্তিন প্রথম ম্যাচেই হারিয়েছিল তাজিকদের। ৩২ সেকেন্ডে গোল করে তারা সেই ম্যাচে। শেষের দিকে আরো একটি। গোল না পেলেও তাজিকিস্তানই প্রাধান্য বিস্তার করেছে, কিন্তু ফিলিস্তিন ডিফেন্স সব বিপদ সামলে নেয়। আরো একবার সেই ডিফেন্সকে চ্যালেঞ্জ জানাতে নামছে তাজিকরা। নতুন করে আত্মবিশ্বাস কুড়িয়েছে তারা কক্সবাজারে ফিলিপাইনকে ২-০তে হারিয়ে। এই স্কোরলাইনে অবশ্য সে ম্যাচে তাজিকদের প্রাধান্য ঠিক বোঝায় না। বলতে গেলে ফিলিপাইনের কোনো সুযোগই ছিল না সে ম্যাচে। এশিয়ান কাপের বাছাইয়ে হারের শোধ ছিল সেটা। তাজিক কোচ যদিও তা মানেন না। যেমন মানেন না গ্রুপ পর্বের হারের শোধ নেওয়ার সুযোগ আজ ফিলিস্তিনের বিপক্ষেও, ‘এটা ভিন্ন ম্যাচ। এটা ফাইনাল। হ্যাঁ ২-০ গোলে আমরা ওদের কাছে হেরেছিলাম গ্রুপ পর্বে। সেই ম্যাচের ভুলত্রুটিগুলো এরই মধ্যে আমরা শুধরে নেয়ার চেষ্টা করছি। আশা করি আজ আমরা আমাদের সেরা খেলাটাই খেলব।’

টুর্নামেন্টে হার দূরের কথা, এখনো পর্যন্ত কোনো গোলই হজম করেনি ফিলিস্তিন। ডিফেন্ডার তামের সালাহ আত্মবিশ্বাসী—‘এই ম্যাচও জিতে কাপ নিয়েই আমরা ফিলিস্তিন ফিরব।’ কোচ নুরেদ্দিন জয় নিয়ে আত্মবিশ্বাসী হলেও তার কপালে দুশ্চিন্তার ভাঁজ, সেমিফাইনালের রিকভারিই হয়নি তার দলের। কাল দুপুর গড়িয়েছে কক্সবাজার থেকে দলের ঢাকা পৌঁছাতে। তাজিকরা সে তুলনায় এক দিন সময় পেয়েছে প্রস্তুতির জন্য। নুরেদ্দিন বলছেন, এ অবস্থায় খেলোয়াড়দের মানসিকভাবে উজ্জীবিত রাখাটাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। নিখাদ ফুটবলপ্রেমীরাও যে চান ক্লান্তি ঝেড়ে দুই দল উপভোগ্য ফুটবলটাই আবার উপহার দিয়ে যাক ঢাকায়।