অনলাইন ডেস্ক : সিলেট সিটি করপোরেশ (সিসিক) নির্বাচনে মেয়র পদে জয় পেতে প্রার্থীরা এখন মরিয়া। সর্বশক্তি নিয়ে মাঠে নেমেছেন ২৭টি ওয়ার্ডের ১৯৫ প্রার্থী। মেয়র পদে ছয়জন, সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ৬২ জন এবং সাধারণ কাউন্সিলর পদে ১২৭ জন।

প্রতীক পেয়ে প্রার্থীরা নিজ দলীয় প্রার্থীর জয়ের পাল্লা ভারী করতে বিশেষ করে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতারাও সিলেটে মানুষের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন। এতে উভয় দলের স্থানীয় নেতাকর্মীরা অবশ্য বেশ উৎফুল্ল।

এরইমধ্যে বিএনপির বিদ্রোহী প্রার্থী মহানগর বিএনপির সাধারণ সম্পদক বদরুজ্জামান সেলিম নাটকীয়ভাবে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালে নির্বাচনী হাওয়ায় নতুন মোড় নেয়। এখন ধানের শীষ প্রতীকের মেয়র প্রার্থী আরিফুল হক চৌধূরী অনেকটা স্বস্তি বোধ করেছেন। সেলিমের বহিষ্কারারের আদেশটিও প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছে। অন্যদিকে আরিফুল হকের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কামরান শিবিরে কিছুটা আশা ভঙ্গ হয়েছে। তবে বদর উদ্দিন আহমদ কামরানের সমর্থকরা বলেছেন, এতে নৌকা প্রতীকের কোনো ক্ষতি নেই। কারণ স্বাধীনতার প্রতীক নৌকায় ভোট দিতে মানুষ উন্মুখ।

অন্যদিকে এখন জামায়াত প্রার্থী এহসনুল মাহবুব জুবায়েরের সাথেও বিএনপির সমঝোতা হবে এমন আশা বিএনপির শীর্ষ নেতাদের। সিলেট সিটি নির্বাচনের ভোটের সমীকরণে নাটকীয় মোড় নেয় বৃহস্পতিবার সেলিম নির্বাচন থেকে সরে যাওয়ায়। তবে এখনও পর্যন্ত জোটসঙ্গী জামায়াতকে বাগে আনতে পারেনি বিএনপি। জামায়াতের মহানগর আমীর এহসানুল মাহবুব জুবায়ের বেশ জোরেশোরেই জনসংযোগ করেছেন। বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা আমানউল্লাহ আমানের আশা জামায়াতের সাথেও তাদের সমঝোতা হবে। তবে এহসানুল মাহবুব জুবায়ের জানিয়েছেন, সিলেট সিটি নির্বাচন নিয়ে বিএনপির সাথে সমঝোতার কোনো সুযোগ নাই।

এদিকে ১০ জুলাই প্রতীক বরাদ্দ পেয়েই জোরেশোরে মাঠে নামেন আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী বদর উদ্দিন আহমদ কামরান ও বিএনপির আরিফুল হক চৌধুরী। জেলা ও মহানগর পর্যায়ের সকল নেতাদের নিয়ে শুরু হয় প্রচারণা। গত কয়েক দিনে প্রচারণায় যোগ দিয়েছেন দল দুটির কেন্দ্রীয় নেতারাও। সিসিকের তৃতীয় নির্বাচনে পরাজিত হওয়ায় এবারের নির্বাচন আওয়ামী লীগের জন্য পুনরুদ্ধার মিশন। কামরানের নৌকা প্রতীককে বিজয়ী করতে গত সপ্তাহে সিলেটে নেতাকর্মীদের নিয়ে বর্ধিত সভা করেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। এরপর ১১ জুলাই সিলেটে আসেন সংসদ সদস্য শেখ হেলাল। তিনি দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রুদ্ধদ্বার বৈঠক করে বিভিন্ন দিক নির্দেশনা দিয়ে যান। বৃহস্পতিবার থেকে কামরানের প্রচারণায় রয়েছেন আওয়ামীলীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন,আরেক সাংগঠনিক সম্পাদক মিসবাহ উদ্দিন সিরাজ, স্বেচ্ছাসেবকলীগের সভাপতি মোল্লা মো. আবুকাওছার ও ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক এসএম জাকির হোসাইনও পৃথক ভাবে কামরানের পক্ষে প্রচারণা চালিয়েছেন।

এদিকে বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী সদস্য আরিফুল হককে দ্বিতীয় মেয়াদে নগর ভবনে বসাতে বিএনপি নেতারা তত্পর। আরিফের পক্ষে টানা প্রচারণা চালাচ্ছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির, কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ডা. সাখাওয়াত হোসান জীবন, কেন্দ্রীয়সহ-সম্পাদকআব্দুর রাজ্জাক, কেন্দ্রীয়সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক কলিমউদ্দিন মিলন, দিলদার হোসেন সেলিম, শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয়যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হুমায়ুন কবির, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, ইনাম আহমদ চৌধূরী, ইসলামী ঐক্যজোটের চেয়ারম্যান মাওলানা আব্দুর রকিব সহ অন্যান্য নেতারা ।
আচরণ বিধি লঙ্গন করে ক্যাম্প নির্মাণ:
আচরণ বিধি উপেক্ষা করে প্রার্থীরা নির্বাচনি ক্যাম্প বা অফিস নির্মাণ করেছেন। অফিস বা ক্যাম্প নির্মাণে মানা হচ্ছে না আচরণ বিধি। নগরীর শিবগঞ্জ, মিরাবাজার, শাহিঈদগাহ, চৌখিদেখি, শেখঘাট, দক্ষিণ সুরমায় রাস্তার পাশে রয়েছে বিভিন্ন প্রার্থীর নির্বাচনী ক্যাম্প।