,

it-shop.Com

কুমিরের হামলা থেকে বেঁচে বিয়ের পিঁড়িতে

Spread the love

অনলাইন ডেস্ক : প্রথম দেখায় আপনার মনে হবে তারা আর পাঁচজন অল্প বয়সী জুটির মতো। বিয়ের আসরে দাঁড়িয়ে মন্ত্র পড়ছেন, আর দীর্ঘ ও সুখী এক দাম্পত্য জীবনে প্রবেশের দ্বারপ্রান্তে।

কিন্তু একটু খেয়াল করলেই দেখা যাবে, কনের ডান হাতে বাহুর নিচের অংশ নেই। অবশিষ্ট অংশে সাদা ব্যান্ডেজ আটকানো।

এই অনুষ্ঠানের পাঁচ দিন আগে জিম্বাবুয়ের যামবেযি নদীর পাড় থেকে কুমির জ্যানেল নোলোভুকে কামড়ে ধরে টেনে পানির নিচে নিয়ে গিয়েছিল। উদ্ধার হওয়ার পর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে রীতিমত পাঞ্জা লড়ে ফিরে এসেছেন তিনি।

কুমিরের ভয়াবহ সেই হামলা, বেঁচে ফিরে নতুন পাওয়া আত্মবিশ্বাস সবকিছু নিয়ে ২৫ বছর বয়সী জ্যানেল কথা বলেছেন। তিনি তার তৎকালীন প্রেমিক ও বর্তমানে স্বামী জেমি ফক্স দুইজন যামবেযি নদীর পাড়ে বেড়াতে গিয়েছিলেন।

সেখানে তারা যখন নদীতে একটি ডিঙ্গি নৌকায় করে বেড়াতে নামেন, তাদেরকে বলা হয়েছিল যে তাদের সঙ্গে এক কুমির দম্পতির দেখা হবে। কিন্তু তারা আক্রমণ করতে পারে এমন কোনো হুঁশিয়ারি মোটেই দেওয়া হয়নি। সেটি তাদের ডিঙ্গিতে চড়ার আগের মুহূর্তে তোলা সেলফিতেও দেখা যায়নি।

২৭ বছর বয়সী জেমি বলেন, তারা এতই নিশ্চিন্ত সময় কাটাচ্ছিলেন যে কুমিরের আসা বা চলা কোনো কিছুরই আওয়াজ পাননি তারা।

জেমি হঠাৎই একটি কুমিরের মাথা পানিতে ভেসে উঠতে দেখেছিলেন। কিন্তু তাদের দুজনেরই কয়েক সেকেন্ড সময় লেগে যায় এটা বুঝতে যে সেটি আসলেই সত্যিকারের কুমির। যতক্ষণ তারা বুঝতে পারেন, ততক্ষণে ক্যানু বা ডিঙ্গি উল্টে গেছে, আর জ্যানেলের হাত কামড়ে তাকে পানির কয়েক হাত নিচে নিয়ে গেছে কুমির।

‘আমি প্রথমে ভেবেছিলাম, আমি মারা যাচ্ছি। আমার রক্তে চারপাশের পানি লাল হয়ে গেছে। কিন্তু একটু পর ভাবলাম, না! মরার আগে আমাকে লড়াই করতে হবে।’

এরপর পর্যটন গাইড এসে পৌঁছনোর আগ পর্যন্ত তিনি কেবল টিকে থাকার চেষ্টা করেছেন। পরে উদ্ধার করে যখন তাকে হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছিল, জ্যানেল তখনই বুঝেছিলেন, হাতটা গেছে!কিন্তু অন্যরা কনুইয়ের নিচ থেকে ঝুলে থাকা হাতটি লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করছিল।

এদিকে, বিয়ের জন্য নির্ধারিত দিন ধার্য করা ছিল মে মাসের ৫ তারিখ। অপারেশনের পর চিকিৎসকরা জানালেন, কত দ্রুত জ্যানেলের জখম সারে তার ওপর নির্ভর করবে কবে ছাড়া পাবেন।

তবে, অপারেশনের দুই-এক দিন পরই একজন চিকিৎসক জানান, তারা যদি হাসপাতালেই বিয়ে করতে চান, তাহলে কর্তৃপক্ষ হাসপাতাল চ্যাপেলে তা আয়োজন করতে পারে।

এরপর সেখানেই আয়োজন হয় বিয়ের অনুষ্ঠান। দৃঢ়চিত্ত প্রেমিক যুগলের একত্রিত হওয়ার এই আয়োজনে হাসপাতালের সব মানুষ যোগ দিয়েছিল। অনেকেরই চোখ ভিজে উঠছিল একটু পরপর।

জ্যানেল বলছেন, জীবনে কোনকিছু সম্পর্কেই আগেভাগে কিছু বলা যায় না। মানুষ ভবিষ্যতের পরিকল্পনা করে যখন, ঈশ্বর হয়তো তখন মুচকি হাসেন। যেমন বিয়ের আসরে জ্যানেলেকে দেখে অনেকেই চোখের পানি মুঁছেছেন। যদিও সবাই তাদের পরিচিত নন।

কিন্তু জ্যানেল এবং জেমি দুইজনই নিজেদের নতুন জীবন নিয়ে খুব আশাবাদী। যদিও তারা বলছেন, ১০ দিনের মধ্যে তাদের জীবন বদলে গেছ আমূল, কিন্তু তারা ইতিবাচকভাবেই সব পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে চান। ‘আমি যে বেঁচে আছি, এতেই আমি খুশী।’

it-shop.Com

     এই বিভাগের আরও খবর