দর্পণ ডেস্ক : ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম বলেছেন, হিন্দু সম্প্রদায়ের প্রধান ধর্মীয় উৎসব শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে সব ধরনের সর্বোচ্চ নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, রাজধানীতে ২৪২টি মন্ডপ রয়েছে। মন্ডপগুলোতে সার্বক্ষনিক নিরাপত্তা দিবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। ডিএমপি কমিশনার বৃহস্পতিবার শারদীয় দুর্গাপূজা উপলক্ষে রাজধানীর ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরের সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পূজা উদযাপনকে কেন্দ্র করে আমাদের (আইনশৃঙ্খলা বাহিনী) যেমন ব্যাপক প্রস্তুতি থাকে, তেমনি সনাতন ধর্মাবলম্বীদের মাঝেও ব্যাপক প্রস্তুতি থাকে।’
তিনি বলেন, বড় মন্দিরগুলোতে সার্বক্ষণিক পুলিশ মোতায়েন থাকবে। পূজামন্ডপগুলো সিসিটিভির আওতায় থাকবে। একইসাথে প্রতিটি পূজামন্ডপ পুলিশের নজরদারির আওতায় থাকবে। ইউনিফর্ম পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে ডিবি, এসবি ও অন্যান্য গোয়েন্দা বাহিনীর লোকজন মোতায়েন থাকবে।
‘পূজা মন্ডপে জঙ্গি হামলার ঝুঁকি কোনোভাবেই উড়িয়ে দেয়া যায় না’ এমন মন্তব্য করে ডিএমপি কমিশনার বলেন সবকিছু মাথায় রেখেই নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে, নগরীর বিভিন্ন মোড়ে এবং গুরুত্বপূর্ণ স্থানে চেকপোস্ট বসানো এবং টহল জোড়দার করা হয়েছে, যাতে কেউ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটানোর সাহস না পায়।
ডিএমপি কমিশনার বলেন, ‘পূজা মন্ডপে দু’ধরনের নিরাপত্তা ঝুঁকি নিয়ে আমরা কাজ করছি। এর মধ্যে পাঁচটি পূজা মন্ডপ সবচেয়ে বড়। আপনারা জানেন মাস খানেক আগে কথিত হিজরতের নামে ৫০টি ছেলে ঘর ছেড়েছে। কোথায় তারা ট্রেনিং করছে সেটা জানার চেষ্টা করছি আমরা। তাদের বিষয়ে অনেক দূর এগিয়েছি। আশা করি, তারা ফিল্ডে কোনো অপারেশন করার আগেই আমরা তাদের ধরে ফেলব।’ এছাড়া সোশ্যাল মিডিয়ায় গুজব রটিয়ে এবং ফেসবুকে বিভিন্ন এ্যাকাউন্ট খুলে বিভিন্ন পোস্ট দিয়ে সাম্প্রদায়িক উসকানি তৈরি করে একটি চক্র। এদের ঝুঁকি কিন্তু সব সময় থেকে যায়। গত বছর কুমিল্লার একটি ঘটনার বিষয় আপনারা জানেন, মন্দিরে কোরআন শরীফ রেখে যে অপতৎপরতা হয়েছিল, সে রকম ঘটনার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেয়া যায় না।’
ডিএমপি কমিশনার আরও বলেন, ‘ঢাকা মহানগরীর ২৪২টি পূজা মন্ডপে সিসিটিভির ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে। এর মধ্যে পাঁচটি জাতীয় পূজা মন্ডপে বিশেষ নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকবে। এখানে পুলিশ, ডিবি ও আনসার সদস্যদের ২৪ ঘণ্টা ডিউটি পোস্ট থাকবে। পাশাপাশি সোয়াত টিমও এখানে টহলে থাকবে। এছাড়া পূজা উদযাপন কমিটির নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবক থাকবে। এখানে প্রবেশ পথে ডিটেক্টর রাখা হয়েছে। আমি অনুরোধ করব আপনারা কোন ভ্যানিটি ব্যাগ বা অন্য কোনো ব্যাগ এখানে নিয়ে আসবেন না। আনলে এগুলো প্রবেশের আগেই রেখে দেওয়া হবে।’ শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এর আগেও বিভিন্ন জায়গায় প্রতিমা ভাঙচুরের ঘটনা ছিল, সেখানে ২৪ ঘণ্টা ডিউটি না থাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। পূজা উদযাপন কমিটির স্বেচ্ছাসেবক এবং আনসার সদস্যরা অন্যান্য পূজা মন্ডপে ২৪ ঘণ্টা ডিউটি করবেন।
ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ক্রাইম এন্ড অপারেশন্স) এ কে এম হাফিজ আক্তার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (ডিবি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ, অতিরিক্ত পুলিশ কশিনার (ট্রাফিক) মো. মুনিবুর রহমানসহ ডিএমপির ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা ও পূজা উদযাপন কমিটির নেতৃবৃন্দ এ সময় উপস্থিত ছিলেন।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.