দর্পণ ডেস্ক : ইতালির জাতীয় নির্বাচনে রবিবার কয়েক কোটি নাগরিক ভোট দিচ্ছেন। জনমত জরিপ অনুযায়ী, এ নির্বাচনের মধ্য দিয়ে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর প্রথমবারের মতো দেশটির ক্ষমতায় বসতে পারে উগ্র ডানপন্থী জোট। ডানদের উত্থানের সম্ভাবনায় সাধারণ ভোটারদের একটি অংশের মধ্যে শঙ্কা থাকলেও অর্থনৈতিক সংকট, বেকারত্বসহ বিভিন্ন সমস্যাকবলিত অনেকেই খুশি। ডানপন্থীরা এসব সমস্যার ওপর জোর দিয়ে তাদের সমর্থন টেনেছে নিজেদের দিকে।
আর ডানদের অভিবাসনবিরোধী নীতির কারণে বেশ উদ্বিগ্ন অভিবাসীরা। নির্বাচনে জয় পেলে মাত্তেও সালভিনির লিগ নর্দা এবং সাবেক প্রধানমন্ত্রী সিলভিও বেরলুসকোনির ফোরজা ইতালিয়াকে নিয়ে সরকার গঠন করতে পারে জর্জিয়া মেলোনির দল ব্রাদার্স অব ইতালি। আর এমনটা হলে জর্জিয়া মেলোনি হতে পারেন ইতালির প্রথম নারী প্রধানমন্ত্রী।
২০১৮ সালের সর্বশেষ নির্বাচনে মেলোনির দল পেয়েছিল মাত্র ৪ শতাংশ ভোট। তখন থেকে তাদের জনপ্রিয়তা বেড়ে চলেছে। সম্প্রতি নিজেকে খানিকটা উদার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করেছেন মেলোনি। রাশিয়ার ওপর পশ্চিমাদের নিষেধাজ্ঞায়ও সমর্থন রয়েছে তার। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধকালীন নিন্দিত ফ্যাসিস্টদের ‘ঈশ্বর, মাতৃভূমি, পরিবার’ স্লোগানে আস্থা রয়েছে তার। ইতালিতে অভিবাসীদের আগমন ঠেকাতে উপকূলে নৌ অবরোধ দেয়ারও পক্ষে মেলোনি।
ডানপন্থীদের উত্থানে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন অনেক ইতালীয়। ৬০ বছর বয়সী মালাতেস্তা তাদের একজন। গতকাল ভোট দিতে এসে তিনি বলেন, ‘এই ঐতিহাসিক মুহূূর্তে ভোট দেয়া আমার দায়িত্ব। আমি ভীত, কারণ দেশের মানুষ ডানপন্থীদের দিকে ঝুঁকছে। আমি বেশ উদ্বিগ্ন। ’
তবে ভিন্নমতও আছে। ৭৯ বছর বয়সী ভোটার লুসিয়ানো বলেন, ‘আমার মতে মেলোনিই একমাত্র রাজনীতিক, যিনি ইতালির অবস্থার পরিবর্তন করতে পারেন। তিনি সব সময় ইতালীয়দের স্বার্থকে প্রাধান্য দেবেন। ’
উগ্র ডানপন্থীদের অভিবাসীবিরোধী নীতির কারণে ইতালিতে থাকা বাংলাদেশি প্রবাসী তথা অভিবাসীদের মধ্যেও উদ্বেগ দেখা দিয়েছে। ইতালিতে স্বামী-সন্তান নিয়ে বাস করা বাংলাদেশি নারী রোকসানা মাহমুদ কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় ডানপন্থীরা অভিবাসীদের কটাক্ষ করার পাশাপাশি কঠোর হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। আমাদের ধারণা তারা ক্ষমতায় এলে অভিবাসীদের জন্য কঠোর আইন হবে। ’
ইতালির এবারের নির্বাচনে ভোটারের সংখ্যা পাঁচ কোটি ১০ লাখ। এর মধ্যে নতুন ভোটারের সংখ্যা ২৬ লাখ। একজন ভোটার দুটি করে ভোট দেবেন। একটি পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ ও অন্যটি নিম্নকক্ষের প্রতিনিধি নির্বাচনের জন্য। সূত্র : বিবিসি, আলজাজিরা।