দর্পণ ডেস্ক : ইসরায়েলি বিমান হামলায় রবিবার পর্যন্ত ফিলিস্তিনের গাজায় ছয় শিশুসহ ৩১ জনের মৃত্যু হয়েছে। বিবদমান পক্ষগুলোর মধ্যে সমঝোতার কোনো আভাস এখনো পাওয়া যায়নি। গত বছরের মে মাসে গাজায় ইসরায়েলি হামলায় আড়াই শতাধিক মৃত্যুর পর এবারও তীব্র সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
খবরে বলা হয়, রবিবার পর্যন্ত নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ফিলিস্তিনি ইসলামী জিহাদের (পিআইজে) দুই শীর্ষ নেতা রয়েছেন। আহত হয়েছেন কমপক্ষে ২০০ জন।
এদিকে ইসরায়েল দাবি করেছে, গত শুক্রবারের পর তাদের বিভিন্ন শহরে গাজা থেকে ছয় শতাধিক রকেট ও মর্টার ছোড়া হয়েছে। তেল আবিব বলে আসছিল, ‘আসন্ন হুমকি মোকাবেলায়’ ইসরায়েলি প্রতিরক্ষা বাহিনী ‘আগাম প্রতিরোধমূলক’ পদক্ষেপ হিসেবে ‘অপারেশন ব্রেকিং ডন’ পরিচালনা করছে, যা সপ্তাহব্যাপী চলবে।
গত বছরের মে মাসে ইসরায়েলের সংঘাত বাধে গাজার আরেক ইসলামপন্থী সংগঠন হামাসের সঙ্গে। ১১ দিনের ওই সংঘাতে আড়াই শরও বেশি ফিলিস্তিনি নিহতের পাশাপাশি হামাসের প্রত্যাঘাতে ১৪ ইসরায়েলি নিহত হয়। এবার পিআইজের বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছে তেল আবিব। হামাসের মতোই রকেট ও মর্টার ছুড়ছে পিআইজে। এতে অবশ্য গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো ইসরায়েলির হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি। তবে গাজা থেকে ছোড়া একটি রকেট গতকাল জেরুজালেম পর্যন্ত পৌঁছে। মূলত গাজা থেকে ছোড়া রকেট বা মর্টার ইসরায়েলের অত্যাধুনিক আয়রন ডোম প্রতিরক্ষাব্যবস্থার কারণে আকাশেই ধ্বংস হয়ে যায়। এর পরিপ্রেক্ষিতে কোনো রকেট ইসরায়েলের উপকণ্ঠে পৌঁছলে সেটা বড় সাফল্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়।
এদিকে হতাহতের তথ্য তুলে ধরে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম গতকাল জানায়, গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফাহ শরণার্থীশিবিরে বিমান হামলা চালিয়ে ইসরায়েল পিআইজে নেতা খালেদ মানসুরকে হত্যা করে। এর পরই গাজা থেকে রকেট হামলা চালানো হয়, যা জেরুজালেম পর্যন্ত পৌঁছায়।
গত শুক্রবার পিআইজের আরেক নেতা তাইসির আল-জাবির নিহত হন। এই দুজনই পিআইজের সামরিক শাখা আলকুদস ব্রিগেডের কমান্ডার ছিলেন।
গাজায় বিমান হামলার পাশাপাশি ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে গ্রেপ্তার অভিযান চলছে। ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত কয়েক ডজন ‘ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদীকে’ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
গত সপ্তাহে পশ্চিম তীরে পিআইজে নেতা বাসাম সাদিকে গ্রেপ্তারের পর থেকে ইসরায়েলি কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সংগঠনটির উত্তেজনা বাড়ে। এর পরই সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়।
২০০৭ সালে গাজার নিয়ন্ত্রণ হামাসের হাতে যাওয়ার পর থেকে সেখানে অবরোধ দিয়ে রেখেছে ইসরায়েল। ইসরায়েলের সাম্প্রতিক অভিযানে হামাসের কোনো অস্ত্রাগার ক্ষতিগ্রস্ত হয়নি এবং হামাসও কোনো রকেট হামলা চালায়নি। তবে হামাস বলছে, গাজার ‘প্রতিরোধগোষ্ঠীগুলো’ ঐক্যবদ্ধ।
পিআইজে ও হামাস আদর্শিকভাবে বেশ কাছাকাছি। এর আগে, ২০১৯ সালের নভেম্বরে পিআইজের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে ইসরায়েল। পাঁচ দিনব্যাপী ওই সংঘাতে ৩৪ ফিলিস্তিনি মারা যায়।
সূত্র : আলজাজিরা ও বিবিসি।