দর্পণ ডেস্ক : অবশেষে ভারতেও জরুরি ব্যবহারের জন্য করোনাভাইরাসের ভ্যাকসিনের অনুমোদন দেওয়া হলো। দেশটির ড্রাগ কন্ট্রোলার জেনারেল রোববার এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, তারা দু’টি ভ্যাকসিনের অনুমোদন দিয়েছে। অনুমোদন পাওয়া টিকা দুটি হলো—ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ ও সিরাম ইনস্টিটিউটের ‘কোভিশিল্ড’।
ভারত সরকার নিয়োজিত বিশেষজ্ঞ প্যানেলের সুপারিশের পর দেশটির ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা (ডিসিজিআই) আজ রোববার দুটি টিকার জরুরি অনুমোদন দেয়।
ডিসিজিআই প্রধান ভিজি সোমানি বলেন, ভারত বায়োটেক ও সিরাম ইনস্টিটিউট উভয় প্রতিষ্ঠান তাদের টিকার ট্রায়ালের তথ্য জমা দেয়। সেই তথ্য পর্যালোচনা করে টিকা দুটির জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে।
সোমানি বলেন, ‘নিরাপত্তা নিয়ে সামান্যতম উদ্বেগ থাকলেও আমরা কখনো তার অনুমোদন দিই না। অনুমোদন পাওয়া টিকাগুলো শতভাগ নিরাপদ।’
ভারত বায়োটেক ভারতের হায়দরাবাদভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। দেশীয় পদ্ধতিতে তারা ‘কোভ্যাক্সিন’ নামের টিকা তৈরি করেছে।
সিরাম ইনস্টিটিউট পুনেভিত্তিক প্রতিষ্ঠান। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার করোনার টিকা প্রকল্পের অন্যতম অংশীদার তারা। সিরাম ইনস্টিটিউট ‘কোভিশিল্ড’ নামে ভারতে এই টিকা উৎপাদন করেছে।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা প্রথম অনুমোদন পায় যুক্তরাজ্যে। অক্সফোর্ডের টিকা পেতে বাংলাদেশ সরকার ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট ও বাংলাদেশের বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের সঙ্গে চুক্তি করেছে।
ভারতের সিরাম ইনস্টিটিউট থেকে ৩ কোটি টিকা আনবে বাংলাদেশ। এই টিকা সরবরাহ করবে বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালস।
অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা সাধারণ রেফ্রিজারেটরে সংরক্ষণ করা যায়। এই টিকার দুটি করে ডোজ নিতে হয়। দুই ডোজের মধ্যে ব্যবধান চার সপ্তাহ।
ভারত বায়োটেকের ‘কোভ্যাক্সিন’ টিকা তিনটি ট্রায়াল ধাপের মধ্যে দুটি সম্পন্ন করেছে। টিকাটির তৃতীয় ধাপের ট্রায়াল গত নভেম্বরে শুরু করে ভারত বায়োটেক। এখনো এই ধাপের ট্রায়াল চলছে।
তৃতীয় ধাপের ট্রায়ালে টিকার কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়। ফলে কোভ্যাক্সিন টিকার কার্যকারিতার তথ্যের ঘাটতি থাকা অবস্থাতেই তা ভারতে জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন পেল।
ভারত বায়োটেকের টিকার সঙ্গে যুক্ত ফার্মাকোলজির অধ্যাপক সবিতা ভার্মার বলেছেন, প্রাথমিক ট্রায়াল পর্যায়েই কোভ্যাক্সিন টিকার ভালো কার্যকারিতা দেখা গেছে।
ভারতে কোনো টিকার তৃতীয় পর্যায়ের সবচেয়ে বড় ট্রায়াল চালানোর কথা বলছে ভারত বায়োটেক।
অধ্যাপক সবিতা ভার্মা জানান, আগামী মার্চ মাসে এই ট্রায়ালের প্রাথমিক ফলাফল পাওয়া যাবে। টিকাটির এক কোটি ডোজ ইতোমধ্যে প্রস্তুত আছে বলেও জানান অধ্যাপক সবিতা ভার্মা।
এ ছাড়া ভারতে ফাইজারের টিকা জরুরি ব্যবহারের অনুমোদন চেয়ে করা আবেদনটি পর্যালোচনা করছে দেশটির বিশেষজ্ঞ প্যানেল।