দর্পণ ডেস্ক : ন্যাশনাল ডিফেন্স কোর্স-২০২০ এবং আর্মড ফোর্সেস ওয়ার কোর্স-২০২০ এর গ্রাজুয়েশন সেরিমনিতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ রোববার সকালে গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি মিরপুর সেনানিবাস শেখ হাসিনা কমপ্লেক্স ডিএসসিএসসি প্রান্তে যুক্ত হন প্রধানমন্ত্রী। এ সময় তিনি ভিডিও কনফারেন্সে যুক্ত হয়ে সনদপ্রাপ্তদের অভিনন্দন জানান ও সনদ তুলে দেন।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রাখবো। যুদ্ধ চাই না, শান্তি চাই। কিন্তু কেউ যদি আমার সার্বভৌমত্বে আঘাত করতে আসে, প্রতিঘাত করবার মতো সক্ষমতা যেন অর্জন করতে পারি। সেভাবেই আমাদের প্রশিক্ষণ এবং সেভাবেই প্রস্তুতি থাকতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত এই স্বাধীনতা যেন কখনো ব্যর্থ না হয়। আমরা বিশ্বের কাছে সারাজীবন মাথা উঁচু করে বিজয়ী জাতি হিসাবে চলতে পারি এবং যে যেখানেই যাবেন বিজয়ী জাতি হিসাবে আত্মমর্যাদাবোধ নিয়ে, আত্মসম্মান নিয়ে মাথা উঁচু করে চলবেন।’

তিনি আরও বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে সশস্ত্র বাহিনী গড়ে উঠেছে। কাজেই এ বাহিনীর প্রত্যেকটি সদস্য দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজেদের গড়ে তুলবেন। যেন সবসময় জনগণের পাশে থেকে জনগণের কল্যাণে কাজ করতে পারেন। আমাদের পররাষ্ট্র নীতি খুব স্পষ্ট, সকলের সাথে বন্ধুত্ব কারো সাথে বৈরিতা নয়। আমরা সেটাই মেনে চলছি। বাংলাদেশ একটি দেশ আমরা সকলের সাথে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রেখেছি।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের এখানে আশ্রয় নিয়েছে মিয়ানমারের নাগরিক, প্রায় ১০ লাখের ওপরে। আমরা তাদের সাথে কখনো সংঘাতে যাইনি; কিন্তু আলোচনা করে এটার সমাধান করার চেষ্টা করছি। আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলেও সকলকে এ আহ্বান জানিয়েছি যে এই যে বিশাল একটা বোঝা আমাদের ওপর। এটা যেন খুব দ্রুত তারা সমাধান করেন।

ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের প্রসঙ্গ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ ও বিদেশে উচ্চপর্যায়ে সামরিক-বেসামরিক কর্মকর্তাদের মাঝে উঁচু স্তরের জ্ঞানশৈলীর বিকাশ ঘটাতে সক্ষম হচ্ছে। ন্যাশনাল ডিফেন্স কলেজ তার অভিষ্ঠ লক্ষ্যে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। শুধু সশস্ত্র বাহিনীর ভিতরেই নয় এনডিসি জাতীয় পর্যায়ের উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসাবে বেসামারিক পরিমণ্ডলেও সমাদৃত হচ্ছে।‘

সরকারি উচ্চপদস্থ, বেসামরিক কর্মকর্তারা এ প্রতিষ্ঠান থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে নিজ নিজ কর্মক্ষেত্রে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্বোচ্চ দক্ষতার পরিচয় দিচ্ছেন। পাশাপাশি অন্যান্য বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রের সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে সম্প্রীতি গড়ে তুলতে এনডিসি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাচ্ছেন বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘এ পর্যন্ত ৩৭টি বন্ধুপ্রতিম দেশের সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যগণ এনডিসিতে উচ্চশিক্ষা প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছেন এবং পরবর্তী সময় তাদের নিজ নিজ দেশে বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। এর ফলে বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নয়নের পথ সুগম হয়েছে।’

দুর্যোগ মোকাবেলায় সশস্ত্র বাহিনীর ভূমিকা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে কোনো প্রাকৃতিক দুর্যোগে সশস্ত্র বাহিনী জনগণের পাশে দাঁড়ায়। বিশেষ করে এবার কোভিড-১৯ এর সময় ব্যাপকভাবে মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে সেবা দিয়েছেন।