দর্পণ ডেস্ক : বৃষ্টির পানি যেন আশীর্বাদ হয়ে এসেছে টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের জন্য। এ উপজেলার পাহাড়ি এলাকার কৃষকেরা এই সময় রোপা আমন ধানের আবাদ করছেন। তাই আশার আলো জেগেছে উপজেলার পাহাড়ি অঞ্চলের মানুষের মধ্যে।

বর্ষার পানি পাহাড়ি এলাকার ওইসব জমিতে না জমায় সেচ দিয়ে পানির ব্যবস্থা করতে হয়। কিন্তু এ বছর টানা বৃষ্টির পানি ওইসব জমিতে জমেছে যা রোপা আমন চাষের জন্য খুবই উপযোগী। অল্প সময়ে আবাদকৃত এই ধান ঘরে তুলতে পারেন বলে কৃষকরা জানিয়েছেন।

এ বছর উপজেলার পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ৫ হাজার ৫০০ হেক্টর জমিতে উফশি জাতের রোপা আমন ধানের আবাদ হবে। ইতোমধ্যে ওই এলাকার কৃষকরা তাদের জমিতে আবাদ শুরু করেছেন। যেখানে পুরো উপজেলার লক্ষ্যমাত্রার দুই-তৃতীয়াংশ ধান উৎপাদন হবে বলে স্থানীয় কৃষি বিভাগ জানিয়েছে।

তবে মির্জাপুর উপজেলায় বন্যা ও বৃষ্টির পানিতে ফসলি জমি ও বসতভিটা তলিয়ে নিম্নাঞ্চলের মানুষ দিশেহারা। বন্যার পানিতে এ উপজেলার কৃষকের বছরের বাড়তি ফসলটুকু ঘরে তোলা অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।

এলাকাবাসী ও সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, ১টি পৌরসভা ও ১৪টি ইউনিয়ন নিয়ে মির্জাপুর উপজেলা গঠিত। এ উপজেলার বাঁশতৈল, আজগানা ও তরফপুর ইউনিয়নের অধিকাংশ এবং লতিফপুর ও গোড়াই ইউনিয়নের আংশিক এলাকা অপেক্ষাকৃত উঁচু বলে পাহাড়ি অঞ্চল হিসেবে পরিচিতি। উপজেলার বাঁশতৈল ইউনিয়ন ছাড়া সব ইউনিয়নেই বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। বন্যার পানিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে পৌরসভার বহুরিয়া, ভাওড়া, ভাদগ্রাম, ওয়ার্শী, আনাইতারা, বানাইল, জামুর্কী, মহেড়া ও ফতেপুর ইউনিয়ন। এসব ইউনিয়নে ৫ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে বোনা আমনের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। আবাদি জমি নিম্নাঞ্চল হওয়ায় বন্যা ও বর্ষার পানিতে বোনা আমন ধান, আউশ ধান ও সবজি আবাদ তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মোহাম্মদ মশিউর রহমান বলেন, বন্যার কারণে মির্জাপুরের নিম্নাঞ্চলের প্রায় ৩ হাজার ১০০ হেক্টর জমির বোনা আমন, ১৪ হেক্টর জমির ধান ও ১২৫ হেক্টর জমির সবজি নষ্ট হয়ে গেছে। কিন্তু পাহাড়ি এলাকায় বন্যার পানি না ওঠায় কৃষকরা উফশি জাতের রোপা আমন ধানের আবাদ করছেন। এতে সেচের প্রয়োজন হয় না। বৃষ্টির পানিতেই ধানের উৎপাদন হয়। এতে স্থানীয় চাহিদা মেটে।