সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবস রোববার বড় উত্থানের পরদিন সোমবার দেশের দুই শেয়ারবাজারের লেনদেনে শেয়ার দরের ওঠানামায় কিছুটা অস্থিরতা দেখা যাচ্ছে। টানা কয়েকদিন শেয়ারের দরবৃদ্ধির পর অনেকে মুনাফা তুলে নিতে শেয়ার বিক্রি করছেন। শেয়ার বিক্রির চাপে অনেক শেয়ার কিছুটা দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছে।

বাজার সংশ্লিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক শেয়ারদরে উত্থানের আগে যারা শেয়ার কিনেছিলেন, তারা মুনাফা নিতে শেয়ার বিক্রি করছেন। অন্যদিকে যারা পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছিলেন, এখন তারাও ধীরে ধীরে বিনিয়োগে সক্রিয় হচ্ছেন, অর্থাৎ শেয়ার কিনতে শুরু করেছেন। এই দুই ধারার কারণে কখনো শেয়ার দর কমছে, কখনো বাড়ছে। এর প্রভাবে সূচকের ওঠানামায় ব্যাপক উত্থান-পতন দেখা যাচ্ছে।

সোমবার দিনের লেনদেন শুরুর প্রথম ২ ঘণ্টা পর দুপুর সাড়ে ১২টায় দেখা গেছে, প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) লেনদেন হওয়া ৩৫৫ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড কেনাবেচায় এসেছে। এর মধ্যে ১৪৯টি দর বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। বিপরীতে দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল ১৬৮টি। এ সময় পর্যন্ত দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ৩৮ কোম্পানির শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ড। দুপুর ১২টায় লেনদেনের এ চিত্র ছিল বিপরীত।

শেয়ারদরের ওঠানামার প্রভাব দেখা যাচ্ছে মূল্য সূচকেও। ডিএসইএক্স সূচকটি ২ পয়েন্টের বেশি হারিয়ে ৪৭৩১ পয়েন্টে অবস্থান করতে দেখা গেছে। যদিও সোমবার সকাল সাড়ে ১০টায় রোববারের দরবৃদ্ধির ধারাবাহিকতায় লেনদেন শুরু হয়। এতে প্রথম ৩ মিনিটেই সূচকটি প্রায় ২৭ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭৬১ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। কিন্তু পরের ১৩ মিনিটে শেয়ার বিক্রির চাপে সূচকটি আগে অবস্থান থেকে ৫৮ পয়েন্ট হারিয়ে ১০টা ৪৬ মিনিটে ৪৭০৩ পয়েন্টে নামে। এর পর বড় শেয়ার ক্রয়ের চাপে অনেক শেয়ার দর ফিরে পেলে ডিএসইএক্স সূচকটিতে আবারও বড় উত্থান হয়। পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১১টার মধ্যে সূচকটি ৪৭০৩ পয়েন্ট থেকে ৬৪ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭৬৮ পয়েন্ট ছাড়ায়।

লেনদেনের পরের অংশেরও শেয়ারদরের উত্থান-পতন অব্যাহত থাকায় সূচকেও উত্থান-পতন দেখা যাচ্ছে। বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসের কর্মকর্তারা জানান, বড় উত্থানের পর শেয়ারদরের ওঠানামা স্বাভাবিক ঘটনা। 

সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে রোববার এ বাজারে লেনদেন হওয়া ৮২ শতাংশেরও বেশি শেয়ারের দরবৃদ্ধি পাওয়ায় ডিএসইএক্স সূচকটি ১৬৯ পয়েন্ট বেড়ে ৪৭৩৪ পয়েন্ট ছাড়িয়েছিল। সূচক বৃদ্ধির হার ছিল ৩ দশমিক ৭১ শতাংশ। সূচকের এ বৃদ্ধির হার ছিল গত ৫ বছরের তৃতীয় সর্বোচ্চ।

ডিএসইর খাতওয়ারি শেয়ারদর ওঠানামা পর্যাবেক্ষণে দেখা গেছে, তুলনামূলক বেশি কমেছে ব্যাংক খাতের শেয়ারদর। তবে অন্য সব খাতেরও অনেক শেয়ারের দর কমেছে। সার্বিক নিম্নমুখী ধারার মধ্যেও দিনের সার্কিট ব্রেকার নির্ধারিত সর্বোচ্চ দর বা এর কাছাকাছি দরে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।

এর অন্যতম হলো- রূপালী লাইফ, প্রাইম লাইফ ইন্স্যুরেন্স, মেট্রো স্পিনিং, সায়হামটেক্স, মেঘনা লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ফারইস্ট লাইফ ইন্স্যুরেন্স, ম্যাকসন্স স্পিনিং, পপুলার লাইফ ইন্স্যুরেন্স, আফতাব অটোমোবাইলস। এসব শেয়ারের দর ৯ থেকে প্রায় ১০ শতাংশ পর্যন্ত বেড়ে কেনাবেচা হতে দেখা গেছে।

ঢাকার মতো চট্টগ্রামকেন্দ্রিক দেশের দ্বিতীয় শেয়ারবাজার সিএসইর লেনদেনের চিত্রও প্রায় একই রকম। দুপুর সাড়ে ১২টায় এ বাজারে ২২৩ কোম্পানির শেয়ার কেনাবেচা হতে দেখা গেছে। এর মধ্যে ৯৩টি দর বেড়ে, ১০৮টি দর হারিয়ে কেনাবেচা হচ্ছিল। দর অপরিবর্তিত অবস্থায় কেনাবেচা হচ্ছিল ২২টির।