নারী

কৃষিতে কর্মরত নারীদের কৃষক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে, গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করতে হবে তাদের প্রত্যক্ষ অবদানকে। একইসঙ্গে কৃষকদের সহায়তার যেসব সরকারি কার্যক্রম রয়েছে তার প্রতিক্ষেত্রে নারী কৃষকদের কোটা থাকতে হবে

৮ মার্চ জাতিসংঘ কর্তৃক ঘোষিত নারীর অধিকার ও মর্যাদা উদযাপনের জন্য নির্ধারিত দিন। বাংলাদেশের ৮৮ শতাংশ গ্রামীণ নারী প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কৃষিকাজে জড়িত। তাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে নারী দিবসের প্রাক্কালে গ্রামীণ নারীদের কথা, তাদের অবদান এবং লড়াইয়ের কথাগুলো আলোচনায় থাকাটা হবে সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক। 

বাংলাদেশের কৃষি এবং খাদ্য নিরাপত্তার প্রধান বীরযোদ্বা মূলত নারীরাই। তাই নারী দিবসের সকল আয়োজন, আলোচনা কেবলমাত্র শহরে মধ্যবিত্ত নারীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে গ্রামীণ নারীদের মধ্যে আনতে হবে, এবং সম্মান জানানো প্রয়োজন আমাদের খাদ্য লড়াইয়ের বীর নারীযোদ্ধাদের। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে, কৃষক, শ্রমিক, জেলে, গৃহকর্মীসহ অসংখ্য বৈচিত্র্যময় পেশার নারীদের খাদ্যের লড়াইয়ে পুঁজিবাদী ও পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার ক্রমাগত শোষণ এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে সংহতি ও একাত্মতা প্রকাশ করছি। 

বাংলাদেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে নারী কৃষকের অবদান নতুন করে আলোচনার কোনো অবকাশ রাখে না। বাংলাদেশে গ্রামীণ নারী কৃষকদের এই অবদান যে কেবলমাত্র খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করছে তা নয়। মানুষের নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে খাদ্য নিরাপত্তা একটি আবশ্যক ধারা। অনেকে মনে করেন, খাদ্য নিরাপত্তা জাতীয় নিরাপত্তার অন্যতম সূচক। এতে কোনো দেশের মর্যাদা যেমন বাড়ে- অন্যদিকে বৈদেশিক মুদ্রাও সাশ্রয় হয়। বাংলাদেশে কৃষিকাজের সাথে যুক্ত আছেন ৬৮.১ শতাংশ নারী। গৃহস্থালীর সকল কাজের পাশাপাশি কৃষিকাজে নিয়োজিত নারী কৃষকদের ৭৪ শতাংশ গবাদিপশু পালন, ৬৩ শতাংশ স্থানীয় জাতের বীজ সংরক্ষণ, ৪০ শতাংশ শাক-সবজি ও ফলমূল উৎপাদন, শস্য মাড়াই ও মাড়াই পরবর্তী কার্যক্রম, খাদ্যশস্য প্রক্রিয়াজাতকরণসহ কৃষিপণ্য উৎপাদনে যুক্ত থাকেন। বিবিএসের সর্বশেষ জরিপ (২০১৫) অনুযায়ী, গত এক দশকের ব্যবধানে দেশের কৃষিতে নারীর অংশগ্রহণ বেড়েছে ১০২ শতাংশ। সেখানে পুরুষের অংশগ্রহণ কমেছে ২ শতাংশ। নারী তার নিজ যোগ্যতায় কৃষিখাতের হাল ধরছেন। ২০০০ সালে দেশের কৃষিতে নারী শ্রমিকের সংখ্যা ছিল ৩৮ লাখ। ২০১০ সালে তা বেড়ে দাঁড়ায় ১ কোটি ৫ লাখে। ১০ বছরের মধ্যে প্রায় ৭০ লাখ নারী কৃষিতে যুক্ত হয়েছেন। কিন্তু, কৃষিতে নারীর ভূমিকা শুধু “সাহায্যকারী” হিসেবে বিবেচনা করা হয়, কৃষি উৎপাদনে গুরুত্বপূর্ণ অবদানকারী হিসেবে নয়। 

কৃষি উৎপাদন এবং খাদ্য নিরাপত্তায় নিশ্চিত করতে নারীরা একাধারে খাদ্য উৎপাদক, বীজ ও লোকায়ত জ্ঞান সংরক্ষক, কৃষি শ্রমিক; একই সাথে খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং জীববৈচিত্র্যও সংরক্ষণ করেন। ২০০৮ সালে বিশ্ব ব্যাংকের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কৃষিখাতে নিয়োজিত পুরুষের চেয়ে নারীর অবদান শতকরা ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ বেশি। 

১৯৯৮ সালে জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থা কৃষিতে নারীর অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ বিশ্ব খাদ্য দিবসের প্রতিপাদ্য হিসেবে “অন্ন জোগায় নারী” শ্লোগানটি নির্ধারণ করেছিল। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান মতে, অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশ মিলিয়ে কৃষিতে নারী কৃষকের হার ৪৩ শতাংশ। “রাইট টু ফুড অ্যান্ড নিউট্রিশন ওয়াচ-২০১৯” জানাচ্ছে, বিশ্বব্যাপী যে পরিমাণ ফসল উৎপাদিত হয়, তার ৮০ শতাংশই আসে পারিবারিক কৃষি থেকে। চাষের জন্য জমি প্রস্তুত থেকে শুরু করে ফসল ঘরে তোলা ও বাজারজাতকরণের পূর্ব পর্যন্ত কৃষিখাতের ২১ ধরনের কাজের মধ্যে ১৭টিতে নারীর সক্রিয় অংশগ্রহণ রয়েছে। 

বর্তমানে সরকারি বিভিন্ন কৃষি-প্রণোদনা প্রদানের ক্ষেত্রে নারী কৃষকের পক্ষে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ২০১৮ সালে প্রণীত কৃষিনীতিতে  “নারী ক্ষমতায়ন” শিরোনামে একটি অধ্যায় সংযুক্ত হয়েছে এবং নারীকৃষকরা “কৃষিকার্ড” পাওয়া শুরু করেছেন; যা প্রশংসনীয়। কিন্তু কৃষিনীতিতে “নারীর ক্ষমতায়ন” শিরোনামে যে অধ্যায়টি সংযুক্ত হয়েছে সেখানে নারীদের অবদানের কথা এবং বিভিন্ন ধরণের সেবাপ্রাপ্তির বিষয়ে বলা হলেও “নারী- কৃষক” স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি। সরকারি কৃষি উপকরণ প্রদানের ক্ষেত্রে যে বৃহৎ সংখ্যাক প্রান্তিক কৃষকের নাম দেখা যায় সেখানেও নারী কৃষকরা উপেক্ষিত থাকছেন; আবার যাদের নাম রয়েছে সেটিও শুধু তালিকায় নাম দেখানো বা কার্ড পাওয়ার মধ্যে সীমাবদ্ধ। পাশাপাশি সরকারের কৃষিপণ্য ক্রয়ে নারী কৃষকদের উৎপাদিত পণ্য সরবরাহে গুরুত্ব দেওয়া হয় না, ফলে স্থানীয় ও রাষ্ট্রিয়ভাবে নারী কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্য বিপণনেও অবহেলার শিকার হচ্ছেন।

সাম্প্রতিক বছরগুলোতে কৃষি থেকে পুরুষের সম্পৃক্ততা কমে যাচ্ছে। পুরুষের অবর্তমানে এই খাতে নারীদের সম্পৃক্ততা দ্রুত হারে বাড়ছে। গত সাত বছরে বাংলাদেশে কৃষিখাতে নারীর অংশগ্রহণ বাড়লেও ভূমির মালিকানা এখনো পুরুষেরই হাতে। অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারাকাতের এক গবেষণায় দেখা যায়, ভূমিতে গ্রামীণ নারীর মালিকানা মাত্র ২ থেকে ৪ শতাংশ এবং বাকি ৯৬ শতাংশ জমির ব্যক্তি মালিকানা রয়েছে পুরুষের নামে। নারীর সম্পদহীনতা ও বৈষম্যের বিষয়টি রাষ্ট্রের নীতিতেও খুব স্পষ্ট। নারী উন্নয়ন নীতি ২০১১-এর ১১নং দফায় বলা হয়েছে দেশের দারিদ্র্য সীমার নিচে বসবাসকারী শতকরা ৪০ ভাগ জনগোষ্ঠীর মধ্যে দুই-তৃতীয়াংশ নারী। বৃহত্তর এই দরিদ্র, প্রান্তিক ভূমিহীন মানুষের ভূমিতে প্রবেশাধিকারের একমাত্র উপায় খাসজমি। বাংলাদেশের খাসজমি ব্যবস্থাপনা ও বণ্টন নীতিমালায় স্বামী-স্ত্রীর যৌথ মালিকানার বিধান থাকলেও নানাক্ষেত্রে তা নারীর প্রতি বৈষম্যমূলক। এ সব নীতিকাঠামো ভূমিতে নারীর পূর্ণ অধিকার ভোগের ক্ষেত্রে এবং সামগ্রিকভাবে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতেও প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। জমির মালিকানায় নারীদের অধিকার না থাকলে তারা বিভিন্ন আর্থিক সেবা গ্রহণ ও অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্প হতে বঞ্চিত হয়। এখানে তানজানিয়ার একটি উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে- দেশটিতে জমির মালিকানায় নারীদের অধিকার থাকার কারণে তারা ৩.৮ গুণ বেশি আয় করেন। ল্যাটিন আমেরিকার দেশ হন্ডুরাস ও নিকারাগুয়াতে নারীদের জমিতে সমঅধিকার থাকার কারণে পরিবারের আয়ে তারা পুরুষদের চেয়ে বেশি অবদান রাখেন। 

জাতিসংঘের খাদ্য ও কৃষি সংস্থার হিসাব মতে, নারীরা যদি উৎপাদনের জন্য সম্পদ পুরুষের সমপরিমাণ পেত, তাহলে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে কৃষি উৎপাদন আরও ৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেত, যার ফলে ক্ষুধার্ত মানুষের সংখ্যা ১০০ থেকে ১৫০ মিলিয়ন কমিয়ে আনা সম্ভব হতো।

বাংলাদেশে গ্রামীণ খাদ্য ব্যবস্থাপনার বড় কারিগর গ্রামীণ নারীরা। ভৌগলিক অবস্থানের কারণে বছরপ্রতি দেশে বন্যা, ঘুর্ণিঝড়ের মতো ঘটনা ঘটে। তখন মূলত: নারীরা আপদকালীন সময়ের জন্য খাদ্য ব্যবস্থা গ্রহণ করেন। পাহাড়ি এলাকায় জুমে ইঁদুরের আক্রমণ, ফলন না হলে বা “আদিবাসীদের” সংস্কৃতিগত খাদ্য সঙ্কটে পড়লেও পরিবারের খাবারের যোগান দেন পরিবারের নারীরা। এক সময়ে শাক হিসেবে ১৫০টিরও বেশি গাছ-গাছালি বাংলার মেয়েরা খাদ্য হিসেবে ব্যবহার করতো এবং উৎপাদন করতো। কিন্তু তথাকথিত বাণিজ্যিক ও আধুনিক কৃষি নারীদের এই বিপুল ব্যবহারিক জ্ঞানকে অস্বীকার করে বাজারনির্ভর খাদ্য ও ওষুধনির্ভর রাষ্ট্রীয়ব্যবস্থার ফলে মানুষের খাদ্য নিরাপত্তা মারাত্মক হুমকির মধ্যে পড়ে। বর্তমানে কৃষিতে প্রযুক্তির সংযোজনের কৃত্বিত্বের কথা বলা হয়। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নারীবান্ধব কোনো প্রযুক্তি নারীকৃষকের কাছে পৌঁছায়নি। নারীদের এ ক্ষেত্রে পুরুষের ইচ্ছা, অনিচ্ছা ও সহযোগিতার ওপর নির্ভর করতে হয়। কৃষিঋণ বিতরণের জন্য ব্যাংক একাউন্টের আওতায় অতি দরিদ্র নারীরা অন্তুর্ভূক্ত থাকলেও ঋণ বা ভর্তুকি সহায়তা নারীকৃষকরা কতখানি পেয়ে থাকে তা রীতিমত অনুসন্ধানের বিষয় হতে পারে। নারীদের যথাযথ মাত্রায় কৃষিঋণ ও ভর্তুকি সহায়তা না পাওয়ার অন্যতম কারণ হলো পুরুষ কৃষকের ন্যায় কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরে নারী কৃষকের জন্য সুনির্দিষ্ট কোনো “ডাটাবেজ” এর উপস্থিতি না থাকা। যদিও “সিডও” সনদের ১৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী কৃষি ঋণ-আর্থিক সুবিধা, বাজারজাতকরণ সুবিধা, প্রযুক্তি সুবিধা, ভূমি সংস্কার ও ভূমি পুনর্বাসনে নারী ও পুরূষের অধিকার সমান হিসেবে ঘোষিত হয়েছে। 

নয়া উদারনীতির বাজার অর্থনীতি অনুসরণের ফলে আজকের দিনে একজন হতদরিদ্র নারীকেও তার উৎপাদিত দুধ বাজারজাত করতে গিয়ে চরম অসম প্রতিযোগিতায় নামতে হচ্ছে উন্নত বিশ্বের বৃহৎ খামারি বা বহুজাতিক কোম্পানির সাথে। বাজারে নারীর প্রবেশাধিকার কিংবা নারীবান্ধব বাজার ব্যবস্থার কথা বিবেচনা করে সরকার ৬০টি গ্রোয়ার্স মার্কেট ও ১৫টি পাইকারি বাজারে নারীদের জন্য আলাদা কর্ণার করে দিয়েছে। কিন্তু এসব কর্ণার নারীদের কতটা কাজে আসছে তা প্রশ্নসাপেক্ষ। কারণ, পুরো বাজার ব্যবস্থাটাই নারীবান্ধব নয় বিধায় এসব বাজারে নারী ব্যবসায়ীগণ বিশেষ করে ক্ষুদ্র নারী উদ্যোক্তাগণ প্রবেশ করতে পারছেন না। 

এই প্রেক্ষাপটে, যখন সমাজের অধিকাংশ প্রান্তিক কৃষিজীবী, নারী এবং পুরুষ উভয়ের ওপর বাণিজ্যিক কৃষি এবং খাদ্য উৎপাদনের নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে; কাঠামোগত সহিংসতা ও রাজনীতির বস্তুগত প্রভাব- বিশেষ করে নারী কৃষকের জীবনে কঠোরতর হচ্ছে; জাতি, শ্রেণী এবং গোষ্ঠীভেদে এই সংকটও আরো ঘণীভূত হচ্ছে। একই সাথে- 

–    কৃষিজ কর্মকাণ্ডে প্রধান কুশীলব হয়েও নারীরা “কৃষক” হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি পায় না;

–    সংস্কৃতি ও আইনি ব্যবস্থার কারণে ভূমিতে নারীদের প্রবেশাধিকার প্রসারিত হচ্ছে না; 

–    সমুদ্র উপকূলবর্তী এবং দূরবর্তী মৎসশিকারের কাজে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করা সত্ত্বেও যখন নারীরা “জেলে” হিসেবে স্বীকৃত হচ্ছে না; 

–    যখন বৈশ্বিক বাণিজ্যিক খাদ্যব্যবস্থা নারীর দৈনিক অবৈতনিক পরিচর্যা এবং গৃহস্থালি কাজের ওপর নির্ভর হয়ে দাঁড়িয়ে থাকে 

তখন বৈশ্বিক অধিকার সংগঠনগুলোর সাথে সাথে আমরাও এটিকে “নারীর প্রতি সহিংসতা” হিসেবেই বিবেচনা করছে। 

ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর স্বেচ্ছাচারী ব্যবস্থার আড়ালে লুকায়িত শ্রমিকদের নিরাপত্তাহীনতা, অধিকারহরণ, প্রতিবাদ নির্মূলকে অনুপ্রেরণাদায়ী সকল দেশীয়, আন্তঃদেশীয়, বহুজাতিক রীতির আমরা তীব্র প্রতিবাদ জানাই। নারী প্রতি সহিংসতা এবং শোষণের কোনো দেশ-কাল-পাত্র নেই। বিশ্বব্যাপী নারীদের বৃহদায়তনে সমাবেশ, সংহতি, সংগ্রামের গতিবিধি এবং অভিব্যক্তি নারীর প্রতি সব ধরণের সহিংসতা এবং নিপীড়ন বন্ধের দাবির গুরুত্ব অনুমোদন করে। নারীর অধিকার নিশ্চিত করার পরিবর্তে ন্যায়বিচার ও ক্ষতিপূরণকে অস্বীকার করে যে পিতৃতান্ত্রিক ব্যবস্থা শোষণকারীদের দায় থেকে মুক্তি দেয় সেই ব্যবস্থার নিন্দা জানাই। 

জমির অধিকার, উৎপাদিত ফসলের ন্যায্যমূল্য পাওয়ার অধিকার, বিষাক্ত কৃষি-রাসায়নিকমুক্ত উৎপাদন নিশ্চিত করতে এবং কৃষি প্রতিবেশ প্রচারের মাধ্যমে খাদ্যের সার্বভৌমত্ব অর্জনের পথে স্বাস্থ্যকর খাদ্য উৎপাদনে নারী কৃষকের অত্যাবশ্যক ভূমিকা ও নিত্যপণ্যের রক্ষক হিসেবে স্বীকৃতি দিতে আমরা কৃষকদের অধিকার সম্পর্কিত জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র বাস্তবায়নের জোর দাবি জানাই। 

কৃষিতে কর্মরত নারীদের কৃষক হিসেবে রাষ্ট্রীয় স্বীকৃতি দিতে হবে, গুরুত্বের সাথে মূল্যায়ন করতে হবে তাদের প্রত্যক্ষ অবদানকে এবং সে অনুযায়ী কৃষিনীতিসহ অন্যান্য নীতিমালা সংশোধন/পরিমার্জন করা; সকল রাষ্ট্রীয় নীতি, প্রণোদনা, প্রশিক্ষণ, ঋণ কার্যক্রম ইত্যাদিতে নারী কৃষকের সমান অধিকার প্রদান; কৃষি ও পল্লীঋণ কর্মসূচির আওতায় নারী কৃষকদের মাঝে পর্যাপ্ত ঋণ বিতরণের সুযোগ সৃষ্টি করা; কৃষকদের সহায়তা করার জন্য যে সমস্ত সরকারি কার্যক্রম রয়েছে সেখানে নারী কৃষকদের জন্য কোটা থাকা প্রয়োজন এবং এ বিষয়টি জাতীয় কৃষিনীতিতে স্পষ্টভাবে উল্লেখ করার দাবি জানাই। 

নুরুল আলম মাসুদ

সাধারণ সম্পাদক, খাদ্য নিরাপত্তা নেটওয়ার্ক (খানি), বাংলাদেশ

*****************************************************************************************************************

প্রকাশিত মতামত লেখকের একান্তই নিজস্ব। প্রকাশিত লেখার জন্য ঢাকা ট্রিবিউন কোনো ধরনের দায় নেবে না।