কচু শাকে চলছে জীবন

পঞ্চগড়ে ২০ বছর ধরে কচু শাক বিক্রি করে জীবন অতিবাহিত করছেন এক নারী। জেলা শহরের সবজি বাজারের রাস্তায় বিকেল থেকে রাত পর্যন্ত প্রতিদিন তার দেখা মেলে। রাস্তার উপরেই বসেন তিনি। সামনে চটের বস্তা বিছিয়ে কচুশাক, ঢেঁকিশাক, তিতারী শাকসহ বনজ নানা ধরনের শাক সাজিয়ে রাখেন। বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয় না। কয়েকঘণ্টার মধ্যে বিক্রি হয়ে যায় সব। বনজ এবং অর্গানিক বলে ক্রেতারাও খুশি হয়ে কেনেন এসব শাক। শহরের প্রায় অনেকেই তার সংগ্রহের কচু শাক খেয়েছেন। তৃপ্তিও পেয়েছেন। সারাদিন কচু শাক সংগ্রহ করে বিকেলে শহরে বিক্রি করেন তিনি। আবাদ করার জন্য জমি নেই তার। শাক বিক্রি করেই এক খণ্ড ভিটেবাড়ির মাটি কিনেছেন তিনি। একটি বাড়িও করেছেন। ভিটেবাড়ি ছাড়া কোন জমি নেই তার।

 

আকতারা বানু জানান, তার কোন চাওয়া পাওয়া নেই। তার লক্ষ্য, একটাই ছেলে মেয়েদের লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করা। তিনি বলেন, আমি আর আমার মা এই ব্যবসা করি। ক্ষেত খামারের আল আর ঝোঁপ ঝাড়, ছোট জঙ্গলে এসব শাক পাওয়া যায়। আমরা জানি কোথায় কোথায় এসব শাক পাওয়া যায়। কোন এলাকায় কখন গেলে শাক পাওয়া যাবে তাও আমরা জানি। তবে কচু শাকই বেশি পাওয়া যায়।

প্রায়ই তার কাছে শাক কেনেন ডোকোরোপাড়া এলাকার নাসরিন আকতার (২০) । তিনি জানান, আকতারা বানুর শাকগুলো অত্যন্ত সুস্বাদু। আমি অনেক ছোটকাল থেকেই তাকে শাক বিক্রি করতে দেখছি।

স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন পরস্পরের নির্বাহী পরিচালক এবং জেলা পরিষদের মহিলা সদস্য আক্তারুন্নাহার সাকি জানান, আমি প্রায়ই আকতারা বানুর কাছ থেকে শাক কিনি। দীর্ঘদিন থেকে তিনি অনেক কষ্ট করে এই ক্ষুদ্র ব্যবসাটি চালিয়ে ছেলেমেয়েদের লেখাপড়া করাচ্ছেন। তাকে সরকারি-বেসরকারি অনুদান দেয়া প্রয়োজন। 

বিডি প্রতিদিন/ফারজানা