ফাইল ফটো

দীর্ঘ দিন শোষনে পিষ্ঠ বাঙালির সামনের তখন স্বজনের লাশ। মৃত্যু হাতের মুঠোয় নিয়ে মিছিল-মিটিংয়ে যুক্ত হতে থাকে অগণিত মানুষ। ২ মার্চ দিবাগত রাতে গুলিতে নিহত আট জনের লাশ নিয়ে বিক্ষুব্ধ জনতা মিছিল বের করে। মিছিল চলে ঢাকার বিভিন্ন রাস্তায়। মিছিল শেষে শহীদ মিনারে লাশ রাখা হয়। লাশ সামনে রেখে পূর্ব-বাংলার স্বাধিকার আদায়ের শপথ গ্রহণ করেন বিক্ষুব্ধ জনতা।

বিকেলে পল্টন ময়দানের জনসভাতেও লাশগুলো নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। পল্টন রূপ নেয় জনসমূদ্রে। সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় শেখ মুজিবুর রহমান সর্বাত্মক অসহযোগ আন্দোলনের ডাক দেন। ১১০ নম্বর সামরিক আদেশ জারি হয়।

আগের রাতেই ‘খ’ অঞ্চলের সামরিক আইন প্রশাসক লেঃ জেনারেল সাবেজাদা মো. ইয়াকুব খান ১১০ নম্বর সামরিক আদেশবলে পত্রপত্রিকায় পাকিস্তানের সংহতি বা সার্বভৌমত্বের পরিপন্থী খবর, মতামত ও চিত্র প্রকাশ নিষিদ্ধ করে দেন। এই আদেশ লঙ্ঘন করলেই দশ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রাখা হয়।

এসব প্রতিকূল পরিস্থির ভেতর ৩ মার্চ পল্টন ময়দানে ছাত্রলীগের জনসভায় জাতীয় সংগীত হিসেবে ‘আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবাসি।’ গানটি নির্বাচন করা হয়। শেখ মুজিবুর রহমানের উপস্থিতিতে ‘আমার সোনার বাংলা/আমি তোমায় ভালোবসি’ গানটি গাওয়া হয়। এরপর শাহজাহান সিরাজ পল্টন সভায় পতাকা উত্তোলন করেন। 

আ.স.ম আব্দুর রব, শাহজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখন আর নূরে আলম সিদ্দিকী- এই চার ছাত্রনেতা বঙ্গবন্ধুকে স্বাধীনতার ঘোষণা দেয়ার জন্য দাবি জানিয়েছিলেন। সেদিন শেখ মুজিবুর রহমান ঘোষণা দেননি। কারণ, তিনি আরো মোক্ষম সময়ের জন্য অপেক্ষা করছিলেন! তথ্যসূত্র: একাত্তররে দিনগুলি- জাহানারা ঈমাম। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- মুহম্মদ জাফর ইকবাল।