অনলাইন ডেস্ক :

স্বাস্থ্যকর এবং মুখরোচক খাবার হিসেবে ছোলার বেশ সুনাম রয়েছে। আবার রমজানে এই খাবারটি ছাড়া যেন ইফতার জমেই না। ছোলা রান্না এবং কাঁচা দুভাবেই খাওয়া যায়। তবে এর মধ্যে কাঁচা ছোলা বেশি পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ বলে জানিয়েছেন পুষ্টিবিদরা। আমিষের অন্যতম উৎস এই খাবারটি ভিজিয়ে রেখে আদা, লবণ দিয়ে খেলে শরীরে অনেক শক্তি পাওয়া যায়। এতে শর্করা এবং ফ্যাট থাকায় খাওয়ার খুব অল্প সময় পরেই এটি হজম হয়ে যায়। আবার ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য আদর্শ খাবার হচ্ছে ছোলা।
পুষ্টিবিদরা বলেছেন, ‘কাঁচা ছোলা একটি নির্দিষ্ট সময় পানিতে ভিজিয়ে রেখে চিবিয়ে খেলে তা আমাদের শরীরের জন্য বেশ উপকারী। প্রতিদিন খালি পেটে কাঁচা ছোলা খেলে অনেক রোগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব।’

 

এবার জেনে নিন ইফতারিতে কাঁচা ছোলা কেন খাবেন-

রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণেছোলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড থাকায় তা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। এ ছাড়া হার্ট ভালো রাখতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে এটি। আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন অব জার্নালে প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, অল্প বয়সী মেয়েরা যদি বেশি পরিমাণে ফলিক অ্যাসিডযুক্ত খাবার খায়, তাহলে তাদের হাইপারটেনশনের প্রবণতা কমে যায়।

ক্যান্সার প্রতিরোধেকোরিয়ান গবেষকদের এক গবেষণায় দেখা গেছে, বেশি পরিমাণে ফলিক অ্যাসিড সমৃদ্ধ খাবার খেলে মেয়েদের কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়। এ ছাড়া ফলিক অ্যাসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে অ্যাজমার প্রকোপও কমিয়ে দেয়। তাই সুস্থ থাকতে নিয়মিত ছোলা খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।

ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য উপকারীপ্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ১৭ গ্রাম প্রোটিন, ৬৪ গ্রাম শর্করা বা কার্বোহাউড্রেট এবং ৫ গ্রাম ফ্যাট রয়েছে। ছোলায় থাকা কার্বোহাইড্রেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য প্রতিদিন ছোলা খাওয়া অনেক উপকারী। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম রয়েছে। এ ছাড়া এতে রয়েছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এসব উপাদান শরীরের জন্য অনেক উপকারী।

কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করেছোলায় খাদ্য-আঁশও বিদ্যমান থাকায় তা কোষ্ঠকাঠিন্য সারাতে সাহায্য করে।

রক্তের চর্বি কমায়ছোলার ফ্যাটের বেশিরভাগই পলি আনস্যাচুয়েটেড। এই ফ্যাট শরীরের জন্য মোটেই ক্ষতিকর নয়, বরং রক্তের চর্বি কমায়।

অস্থির ভাব দূর করেছোলায় শর্করার গ্লাইসেমিক ইনডেক্সের পরিমাণ কম থাকায় তা শরীরে প্রবেশ করার পর অস্থির ভাব দূর হয়।

জ্বালাপোড়া দূর করেছোলায় সালফার নামক খাদ্য উপাদান থাকায় নিয়মিত এটি খেলে মাথা গরম হয়ে যাওয়া, হাত-পায়ের তলায় জ্বালাপোড়া কম হয়।

রোগ প্রতিরোধ করেকাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক যেকোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।তবে যাদের কিডনির সমস্যা রয়েছে তাদের ছোলা না খাওয়াই ভালো। আবার যারা হজম করতে পারেন না তাদেরও কাঁচা ছোলা না খাওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।