চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে ত্রিপুরা পল্লীতে যে দুই কিশোরীর ঝুলন্ত লাশ পাওয়া গেছে, তারা হত্যাকাণ্ডের শিকার বলে জানিয়েছে পুলিশ।

এক যুবককে গ্রেপ্তারের পর পুলিশ বলছে, আবুল হোসেন (২৫) নামে এই যুবক প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়ে সহযোগীদের নিয়ে এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

শুক্রবার সন্ধ্যায় সুকলতি ত্রিপুরা (১৬) ও ছবি রানী ত্রিপুরা (১৩) নামের ওই দুই বান্ধবীর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।

এরপর পুলিশ অভিযান চালিয়ে সীতাকুণ্ড সদরের মাহদেবপুর এলাকা থেকে হোসেনকে গ্রেপ্তার করে।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের সীতাকুণ্ড সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শম্পা রাণী সাহা বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, প্রেমের প্রস্তাবে ব্যর্থ হয়ে হোসেন ও তার সহযোগীরা এ হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে।

“সুকলতিকে কিছুদিন আগে প্রেমের প্রস্তাব দিয়ে ব্যর্থ হয়ে ছিল হোসেন। এ ঘটনায় স্থানীয়ভাবে সালিশ হয় এবং আবুলকে ভর্ৎসনাও করা হয়। অপমানের প্রতিশোধ নিতে সে এ ঘটনা ঘটায় বলে পুলিশের কাছে স্বীকার করেছে।”

পুলিশ কর্মকর্তা শম্পা জানান, সুকলতিকে হত্যা করতে গেলেও ছবি রানী তা দেখে ফেলায় তাকেও হত্যা করা হয়। দুজনকেই দড়িতে ঝুলিয়ে হত্যা করা হয়।

এ ঘটনায় সুকলতি ত্রিপুরার বাবা পুনেল কুমার ত্রিপুরা বাদী হয়ে একটি হত্যা মামলা করেছেন বলে সীতাকুণ্ড থানা পুলিশ জানায়।

সীতাকুণ্ড থানার এসআই জয়নাল আবেদিন বলেন, দুই লাশের প্রাথমিক সুরতহাল প্রতিবেদনে গলায় রশির দাগ দেখা গেছে।

ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।

স্বীকারোক্তি

সীতাকুণ্ডের ত্রিপুরা পল্লীতে দুই কিশোরীকে হত্যা করার কথা স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন গ্রেপ্তার আবুল হোসেন।

শনিবার চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম হেলাল উদ্দিন চৌধুরীর আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের পরিদর্শক (প্রসিকিউশন) এএইচএম মশিউর রহমান বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, আদালতে দেওয়া ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে আবুল হোসেন (২৫) খুনের কথা স্বীকার করেছেন।

“হত্যাকাণ্ডে তার সঙ্গে আরও দুইজন অংশ নেন বলে জবানবন্দিতে জানান আবুল হোসেন। পরে আদালত তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।”

সীতাকুণ্ড থানার ওসি ইফতেখার হাসান জানিয়েছেন, প্রেমের প্রস্তাব প্রত্যাখান করায় খুনের কথা আদালতে স্বীকার করেছেন আবুল হোসেন।

“সুকলতি ত্রিপুরাকে হত্যা করতে গেলে ছবি রানী ত্রিপুরা দেখে ফেলায় তাকেও খুন করা হয়।”