আমরা কবে থেকে দেখেই আসছি যে ভিড় বাসের মধ্যে মেয়েদের শরীর স্পর্শ করার প্রবণতা থাকে। মেয়েদেরও আরও অনেক বেশি সচেতন থাকা উচিত।
প্রটেস্ট তো করা উচিত। যদি কোনও রকম পাবলিক ট্রান্সপোর্টে, কোনও ভাবে কেউ অ্যাবিউজড হয়, তাহলে অবশ্যই প্রটেস্ট করা উচিত। এবং আশেপাশে যারা থাকেন, তাদেরও উচিত, যে প্রটেস্ট করছেন তাকে সাপোর্ট করা। যিনি এই অ্য়াবিউজ করছেন, তাকে তক্ষণই ধরে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। তবে আইন নিজের হাতে নেওয়া উচিত নয়। বাসে হলে তো অবশ্যই কন্ডাক্টরকে বলে বাস থামিয়ে তাকে পুলিশের কাছে নিয়ে যাওয়া, আর লোকাল ট্রেনে হলে তো আমরা জানি যে সেখানে রেলপুলিশ থাকে। যদি না থাকে তাহলে পরের স্টেশনে নেমে স্টেশন মাস্টারের হাতে তুলে দেওয়া উচিত। তবে কোনও ভাবেই তাকে মারধর করে আইন নিজের হাতে তুলে দেওয়া উচিত নয়। সাধারণত, মাথার ঠিক থাকে না ওই সময়ে। সবাই মাথার ঠিক রাখতে পারে না, সেখান থেকে গণধোলাইয়ের ঘটনা ঘটে। কিন্তু আমি বলব, সে সব না করে মাথা ঠান্ডা করে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।
চুপ করে থাকা কখনওই কোনও সলিউশন হতে পারে না, তাই আমি বলব চুপ করে থাকা একদমই উচিত নয়। এর আগেও আমরা জানি, দিল্লিতে যখন নির্ভয়া কেসটা হয়েছিল, সেখানে অনেক রাত ছিল, ওরা কারও সাপোর্ট পায়নি। কিন্তু দিনেদুপুরে বাসে তো আমরা অনেক লোককে দেখতে পাই, তাদের সকলের উচিত, এই ধরনের ক্ষেত্রে এগিয়ে আসা। শুধু মেয়ে নয়, পুরুষদেরও এগিয়ে আসা উচিত।
এটা তো একটা চিরাচরিত ব্যাপার, আমরা কবে থেকে দেখেই আসছি যে ভিড় বাসের মধ্যে এইভাবে শরীর স্পর্শ করার প্রবণতা থাকে। মেয়েদেরও আরও অনেক বেশি সচেতন থাকা উচিত। সঙ্গে পেপার স্প্রে রাখা উচিত। অনেক সময়ে বাড়ি থেকে ছোটবেলা থেকে শিখিয়ে দেওয়া হয়, এগুলো ইগনোর করতে। কিন্তু সেটা করা উচিত নয়। প্রতিবাদ করা শেখানো উচিত।
আমার ক্ষেত্রে ছোটবেলায় শিখিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাড়ি থেকে সেফটিপিন ক্যারি করা। আমরা অনেকই ভিড় বাসে নিজেদেরকে সেফ রাখতে এটা করে থাকি। সুতরাং, আমি বলব যে অ্যাবিউজড হচ্ছে, শুধু সে প্রতিবাদ করবে তা নয়। আশেপাশে আরও যারা আছে, যারা অনেক সময় চুপচাপ থাকে, তাদেরও উচিত যে বিপদে পড়ছে তাকে সাপোর্ট করতে এগিয়ে আসা। পরে সমালোচনা করে কোনও লাভ হয় না।
আবার অনেক ক্ষেত্রে আমরা দেখতে পাই, ভিড় বাসে অনিচ্ছাকৃত ভাবেও কারও হাত লেগে যায়। সেক্ষেত্রে যার গায়ে হাতটা লেগেছে, সে বা মেয়েরা ঠিকই বুঝতে পারে যে এটা ইচ্ছাকৃত নাকি ভুলবশত লেগে গিয়েছে। এটা মেয়েদেরও বুঝতে হবে। যাতে কোনও ভাবেই কোনও বয়স্ক মানুষ অপমানিত না হন। এক্ষেত্রেও আমি আবার বলব, অনেক সময়ে তো ভুল বোঝাবুঝি হতেই পারে, হয়তো উনি ইচ্ছে করে করেননি, কোনও ভাবে হয়ে গিয়েছে। তাই নিজের হাতে আইন তুলে না নিয়ে, পুলিশের সাহায্য নেওয়া উচিত।
আমার সঙ্গে এরকম বহুবার হয়েছে, যখন বুঝতে পেরেছি ভিড়ের মধ্যে হয়তো অনিচ্ছাকৃত ভাবেই হাতটা লেগেছে। আমরা মেয়েরা কিন্তু এটা ঠিক বুঝতে পারি। আবার যখন ফাঁকা রাস্তা দিয়ে যাচ্ছি, হয়তো নিউ মার্কেট বা পার্ক স্ট্রিট, যখন হেঁটে যাচ্ছি, হয়তো আশেপাশে ভিড় নেই তবু কেউ ধাক্কা মেরে হন হন করে চলে গেল। সেক্ষেত্রে হয়তো আমাদের কিছু করার থাকে না। কিন্তু বাসের মধ্যে বা অন্য কোনও ভেহিকলের মধ্যে তো তাকে ধরার সুযোগ রয়েছে। তখন চুপ করে থাকা মোটেই উচিত নয়।
ebela.in