অনলাইন ডেস্ক :‘ঢাকার রাস্তায় এখন নামলেই যেন প্রাণ হাতে রাখতে হয়। কখন কোন গাড়ি এসে চেপে দিয়ে চলে যায়। রাজীব হোসেন, রোজিনা আক্তার রোজীদের মারার পর এবার আমাদের সহকর্মীর তরতাজা প্রাণও কেড়ে নিলো। এভাবে বেপরোয়া বাস আর কতো মানুষের প্রাণ কেড়ে নেবে বলতে পারেন?’

বৃহস্পতিবার (১৭ মে) সকালে রাজধানীতে দু’টি বেপরোয়া বাসের ধাক্কায় ইংরেজি দৈনিক ঢাকা ট্রিবিউনের বিজ্ঞাপন বিভাগের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী নাজিম উদ্দিনের মৃত্যুতে এই আশঙ্কা ঝরছিলো তার সহকর্মীদের কণ্ঠে। দুই বাসের ধাক্কায় গুরুতর আহত নাজিমকে উদ্ধার করে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।

খবর পেয়েই ঢামেকের জরুরি বিভাগে ছুটে আসেন তার সহকর্মী এবং স্বজনরা। এসময় স্বজন-শুভানুধ্যায়ীদের অনেকে কান্নায় ভেঙে পড়েন। তাদের সান্ত্বনা দিতে থাকেন অন্যরা।

সেখানে স্বজনরা জানান, নাজিম উদ্দিনের স্ত্রী সাবরিনা ইয়াসমিন আইরিন জুরাইনে আদ-দ্বীন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। মাত্র তিনদিন আগে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে একটি কন্যা সন্তানের জন্ম দেন সাবরিনা। আর এই আনন্দের সময়ে তাকে কেড়ে নিলো বেপরোয়া বাস।

নাজিম ভোলার লালমোহন উপজেলার দক্ষিণ বালুরচর গ্রামের আনিসুল হকের সন্তান। থাকছিলেন পোস্তগোলার করিম উল্লাহবাগ এলাকার একটি ভাড়া বাসায়। এ দম্পতির বড় মেয়ের নাম নুসরাত জাহান (৮)।

তাকে ঢামেকে নিয়ে আসা পথচারীরা বাংলানিউজকে জানান, নাজিম শনির আখড়া থেকে মোটরসাইকেল চালিয়ে গুলিস্তানের দিকে যাচ্ছিলেন। তিনি হানিফ ফ্লাইওভারে উঠলে একটি বাস তার মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এরপর ধাক্কা দেয় আরও একটি বাস। এতে তিনি গুরুতর আহত হন। পরে ঢামেকে আনার পর তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।

আলী নেওয়াজ হোসাইন নামে এক পথচারী বলেন, দুর্ঘটনার ঠিক এক মিনিট পর সেখানে গিয়ে দেখি, নাজিম আহত হয়ে রাস্তায় পড়ে আছেন এবং বেশ কয়েকজন পথচারী মোবাইল ফোনে তার ছবি তুলছেন। দ্রুত তারা কয়েকজন তাকে উদ্ধার করে একটি সিএনজিতে করে ঢামেকে নিয়ে আসেন। হাসপাতালে আনার সময়ও নাজিম শ্বাস নিচ্ছিলেন।