অনলাইন ডেস্ক : মানবদেহের কোষগুলোতে থাকা বায়োলজিক্যাল ঘড়ির সঙ্গে বিষন্নতা, অসদাচরণ ও অন্যান্য মানসিক সমস্যার সম্পর্ক আছে বলে এক গবেষণায় উঠে এসেছে।

শরীরের প্রায় প্রত্যেকটি কোষে থাকা এ ঘড়িগুলোই প্রতিদিনকার ছন্দ অনুযায়ী টিস্যুর কাজ পরিবর্তন করে।

ল্যানসেটের মনোরোগবিদ্যার এক গবেষণায় ৯১ হাজার মানুষের ওপর পরীক্ষা চালিয়ে বিপর্যস্ত দেহঘড়ির সঙ্গে মেজাজের ওঠানামার সংযোগ পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছে বিবিসি।

শরীরের প্রাকৃতিক ছন্দের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টির ব্যাপারে এই ফলাফলকে সতর্কতা হিসেবে দেখছেন গ্লাসগোর গবেষকরা।

গবেষণায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের প্রভাব খতিয়ে দেখা না হলেও গ্লাসগেো বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকদের একজন অধ্যাপক ডেনিয়েল স্মিথ জানিয়েছেন, তাদের গবেষণায় সমস্যাযুক্ত হিসেবে যাদেরকে পাওয়া গেছে তাদের কেউ কেউ রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহার করতেন বলে ধারণা তাদের।

“আমার বেলায় রাত ১০ টার আগেই মোবাইল ফোন বন্ধ হয়ে যায়। যখন আমাদের ঘুমানোর কথা, তখন কোনোভাবেই (মোবাইলের) পর্দার দিকে তাকানো উচিত হবে না,” বলেন তিনি।

গবেষণায় অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে সপ্তাহখানেক ধরে তাদের কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ করে এর সঙ্গে দেহঘড়ির সংযুক্তি আছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হয়।

এ পরীক্ষায় রাতের বেলায় বেশি ক্রিয়াশীল কিংবা দিনের বেলায় তুলনামূলক নিস্ত্রিয় থাকা ব্যক্তিদের দেহঘড়িকে বিপর্যস্ত হিসেবে শ্রেণিবিন্যস্ত করা হয়।

দেখা গেছে, দিনের বেলায় ক্রিয়াশীল ও রাতে তুলনামূলক নিস্ক্রিয় স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় এসব ব্যক্তির মেজাজ ৬ থেকে ১০ শতাংশ বিশৃঙ্খলায় ভুগে।

একে ‘বিরাট পার্থক্য’ হিসেবে অ্যাখ্যায়িত না করলেও মনোবিজ্ঞানী অধ্যাপক স্মিথ বলেছেন, দেহঘড়ির এ তারতম্য থেকেই নানা ধরনের উপসর্গের জন্ম হয়।

বিপর্যস্ত দেহঘড়ির সঙ্গে ব্যক্তিদের উচ্চ হারে তীব্র অবসাদগ্রস্ততা, বাইপোলার ডিসঅর্ডার, নিঃসঙ্গতা, অসুখী, দেরিতে প্রতিক্রিয়া দেখানো এবং অস্থির মেজাজে আক্রান্ত হওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

এ বিপর্যয় কী মানসিক অসুস্থতার কারণে সৃষ্টি হয়, না এটি তার উপসর্গ, গবেষণায় তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি; এর জন্য আরও কাজ করা প্রয়োজন বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।