ফুলে ফুলে সিক্ত হলেন অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী বাংলাদেশ দলের অধিনায়ক আকবর আলী। তার আগমনে উৎফুল্ল পুরো রংপুরবাসী। বৃহস্পতিবার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওয়ানা দিয়ে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সৈয়দপুর বিমানবন্দরে পৌঁছান নায়ক আকবর আলী।

সৈয়দপুর থেকে রংপুর পর্যন্ত ৩৫ কিলোমিটার সড়ক পাড়ি দিতে সময় নেন সাড়ে ৩ ঘণ্টা। বাংলার এই নায়ককে দেখার জন্য পুরো সড়কের দুই পাশে অসংখ্য মানুষ ভিড় জমায়। গাড়ি থামিয়ে কথা বলেন বিভিন্ন বয়সী মানুষের সঙ্গে।

সৈয়দপুর বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানান রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাসহ বিভিন্ন সংগঠন ও প্রতিষ্ঠান। পরে সেখান থেকে তাকে কার, মাইক্রো, মোটরসাইকেলের বিশাল বহরে করে রংপুরের উদ্দেশে যাত্রা করেন। 

বৃহস্পতিবার রংপুর পাবলিক লাইব্রেরির মাঠে এসে পৌঁছান বিকেল ৩টায়। সেখানে রংপুর জেলা প্রশাসন ও রংপুর জেলা ক্রীড়া সংস্থার আয়োজনে তাকে সংবর্ধনা দেয়া হয়। 

এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, রংপুরের ডিসি আসিব আহসান, রংপুর মেট্রোপলিটন পুলিশের সহকারী পুলিশ কমিশনার আবু সুফিয়ান, রংপুর মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বাবু তুষার কান্তি মন্ডলসহ আওয়ামী লীগের নেতারা।

এ সময় আকবর সবার কাছে দোয়া চেয়ে বলেন, সব মানুষের সহযোগিতায় আজ আমরা বিশ্ব দরবারে যেতে পেরেছি। আপনারা আমার জন্য দোয়া করবেন। বাংলাদেশ দলের জন্য দোয়া করবেন।

সংবর্ধনা শেষে রংপুর নগরীর তার নিজ এলাকা জুম্মাপাড়া ঢোকার পথে নগরীর কৈলাস রঞ্জন স্কুল গেটের সামনে থেকে ফুলে ফুলে সিক্ত হয়ে মা-বাবার কোলে পৌঁছান আকবর আলী।

আতশবাজি, মিউজিক্যাল সাউন্ড শো, আর লাল সবুজের পতাকায় রাতে পশ্চিম জুম্মাপাড়া হয়ে উঠবে বর্ণিল। দেয়া হবে গণ সংবর্ধনা।

সংবর্ধনা আয়োজন নিয়ে পশ্চিম জুম্মাপাড়া স্পোর্টিং ক্লাবের সভাপতি শফিকুল ইসলাম জানান, আমাদের আকবর বিশ্ব ক্রিকেট যুদ্ধে যে ক্রীড়া নৈপূণ্য দেখিয়েছে, তা বাংলাদেশের আগামীর উজ্জ্বল সম্ভাবনার দিগন্তকে উন্মোচিত করেছে। আকবরের জন্য যেমন বাংলাদেশ গর্বিত, তেমনি রংপুরের মানুষ হিসেবে আমরা গর্বিত। বীরোচিত অধিনায়ক আকবরকে আমাদের সন্তান হিসেবে ক্লাবের পক্ষ থেকে সংবর্ধিত করা হবে। ।

আকবর শুরুতেই মাদরাসায় ভর্তি হলেও পরে বাড়ির পাশে বেগম রোকেয়া উচ্চ বিদ্যালয়ে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে নগরীর লায়ন্স স্কুল অ্যান্ড কলেজে ভর্তি হন। ষষ্ঠ শ্রেণিতে উঠে রংপুরের অসীম মেমোরিয়াল ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি হন। সেখানে অঞ্জন সরকারের হাত ধরে রংপুর জিলা স্কুলের মাঠে তার ক্রিকেটের হাতেখড়ি হয়ে যান। 

২০১২ সালে বিকেএসপিতে সুযোগ পান। এরপর শুধুই এগিয়ে যাওয়ার গল্প তৈরি করে আকবর। বিকেএসপির বয়সভিত্তিক দলে খেলে সুযোগ পেয়ে যান জাতীয় অনূর্ধ্ব-১৭ দলে। নেতৃত্বে দেয়ার অভিজ্ঞতাও হতে থাকে সমানতালে।

শুধু ক্রিকেট নিয়েই অবশ্য পড়ে থাকেননি আকবর। পড়াশোনাটাও করেছেন তিনি। ২০১৬ সালে এসএসসিতে জিপিএ-৫ পান তিনি। এইচএসসিতে জিপিএ ৪.৪২।