দর্পণ ডেস্ক : শনিবার সকালে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় বিচার বিভাগীয় সম্মেলনে ইংরেজির পাশাপাশি বাংলায়ও মামলার রায় লেখার বিষয় বিবেচনার জন্য বিচারকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় বিচারকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ও জনগণ এবং সংবিধানের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে বিচার কাজ পরিচালনা করবেন। সকলে যেন বিচার পায় সে ব্যবস্থা করবেন।
তিনি বলেন, নুসরাত হত্যাসহ সম্প্রতি বেশ কিছু চাঞ্চল্যকর হত্যার বিচার দ্রুত হওয়ায় বিচার বিভাগের প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থা অনেক গুণ বেড়ে গেছে।
তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্রের তিনটি বিভাগের মধ্যে সমন্বয় প্রয়োজন। একের কাজে অন্যের হস্তক্ষেপ শান্তি ও ন্যায়বিচার বাধাগ্রস্ত করে।
প্রধানমন্ত্রী জানান, আসামি আনা-নেওয়ায় ঝুঁকি কমাতে ভার্চুয়াল কোর্ট স্থাপনের চিন্তা রয়েছে সরকারের।
তিনি বলেন, ‘শান্তি ও উন্নয়নের জন্য ন্যায়বিচার’ এই প্রতিপাদ্যে আজকের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। প্রতিপাদ্যটি খুবই যুগোপযোগী। ১৯৭৫ সালে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যার পর দেশে আইনের শাসন অনুপস্থিত ছিল। ইনডেননিটি অধ্যাদেশ জারি করে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার বন্ধ করেছিল। দেশে ফিরে আমি মামলা করতে চেয়েছিলাম কিন্তু পারিনি। তখন এমন একটা শাসন ছিল যেন খুনিদের রাজত্ব কায়েম হয়েছিল। যারা রাষ্ট্র পরিচালনা করেছেন তারা রাজাকার-আলবদর-আলশামস খুনিদের পুরস্কৃত করেছেন। যারা বঙ্গবন্ধুর আত্মস্বীকৃত খুনি তাদেরকে বিভিন্ন দূতাবাসে চাকরি দেওয়া হয়েছে। এমনকি ভোট চুরি করে তাদেরকে বিরোধীদলের চেয়ারে বসানো হয়েছে। আমরা যারা বাবা-মা হারিয়েছি তারা বিচারের জন্য দ্বারে দ্বারে ঘুরেছি কিন্তু বিচার পাইনি। ২১ বছর পর যখন আওয়ামী লীগ যখন ক্ষমতায় আসলো তখন আমরা বিচারহীনতার প্রথা বাতিল করি। দেশের মানুষ যেন বিচার পায় সে ব্যবস্থা করি। পঁচাত্তরের পর যারা অবৈধভাবে ক্ষমতায় এসেছিলেন তাদেরকে অবৈধ বলে রায় দেওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং বিচারপতিদের সাহসিকতার প্রশংসা করেন।
এ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হক এমপি ও সচিব গোলাম সরোয়ার। স্বাগত বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্টার জেনারেল মোহাম্মদ আলী আকবর।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ, হাইকোর্টের বিচারপতি এবং সারাদেশ থেকে আগত বিচারকগণ এ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।
