অনলাইন ডেস্ক : শৈলকুপা উপজেলার গাবলা গ্রামে এক স্কুলছাত্রীর নগ্ন ছবি ইন্টারনেটে ছেড়ে দেওয়ার হুমকি ও একমাত্র ভাইকে ট্রাকচাপা দিয়ে হত্যার ভয় দেখিয়ে এক বছর ধরে ধর্ষণ করছে হাফিজ উদ্দীন মোল্লা (৬০) নামে এক ব্যক্তি। গ্রাম্য মাতুব্বর হাফিজ উদ্দীন মোল্লা গাবলা গ্রামের মৃত বিলাত আলী মোল্লার ছেলে। নবম শ্রেণিতে পড়ুয়া হতদরিদ্র পরিবারের ওই স্কুলছাত্রীকে লম্পট হাফিজ মোল্লার ক্রমাগত ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচাতে হরিণাকুণ্ডু উপজেলার জোড়াদহ ভায়না গ্রামে বিয়ে দিয়েও রক্ষা পায়নি। একমাত্র ভাই টিটোনকে ট্রাক চাপা দিয়ে হত্যার হুমকি দেখিয়ে বিয়ের পর আবারো ধর্ষণ করে হাফিজ মোল্লা। উপায়ান্তর না পেয়ে সোমবার দুপুরে ধর্ষণের শিকার মেয়েটি শৈলকুপা থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন। এ ঘটনার পর থেকে হাফিজ উদ্দীন মোল্লা গা ঢাকা দিয়েছেন।
মেয়েটির ভাবি রুলি খাতুন অভিযোগ করেন, হাফিজ উদ্দীন মোল্লা এক বছর ধরে আমার ননদকে হুমকি-ধমকি দেখিয়ে বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করছে। তখন সে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী। ননদকে শাসন করতে গেলে সে আমাদের বলে ভাইকে হত্যার হুমকি দেয় হাফিজ মোল্লা। এজন্য আমি তার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করতে বাধ্য হই। তিনি বলেন, হাফিজ মোল্লা গ্রামের ধনী ও মাতুব্বর গোছের মানুষ। তার বিরুদ্ধে কেও কথা বলে না। রুলি খাতুন জানান, হাফিজ মোল্লার লালসা থেকে বাঁচতে ননদকে না পড়িয়ে অল্প বয়সে আমরা একদিনেই হরিণাকুণ্ডুর ভায়না গ্রামে বিয়ে দিয়েছি। কিন্তু বিয়ের পরও ভয়-ভীতি দেখিয়ে আমার ননদকে নানা স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করছে। সর্বশেষ গত ৮ দিন আগে ঝিনাইদহে নিয়ে তাকে ধর্ষণ করে। ওইদিন তাকে ধর্ষণ করে ঝিনাইদহ শহরের পায়রা চত্বরে বসিয়ে রেখে চলে যায়। ধর্ষিতার অভিযোগ এলাকার স্কুলপড়ুয়া মেয়েদের লালসার শিকার বানায় হাফিজ মোল্লা। এ পর্যন্ত সে গাবলা গ্রামের ৭/৮টিকে মেয়ে ফাঁদে ফেলে ধর্ষণ করেছে। তার হাত থেকে তার আপন ভাগ্নিও বাদ যায়নি। বিষয়টি নিয়ে হাফিজ উদ্দীন মোল্লা অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, আমার প্রতিপক্ষরা এই মিথ্যা অপবাদ ছাড়িয়ে আমাকে বিপদে ফেলার চেষ্টা করছে। অভিযুক্ত হাফিজের ভাই অবসরপ্রাপ্ত পোস্টমাস্টার মনিরুল ইসলাম জানান, একজন বিবাহিত মেয়ের পিছু নিয়ে তার ভাই যেমন অপরাধ করেছে তেমনি ওই মেয়েটিও তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে শারীরিক সম্পর্ক করে সমান অপরাধ করে চলেছে। বিষয়টি নিয়ে শৈলকুপা সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার তারেক আল মেহেদী জানান, তিনি শৈলকুপা থানার ওসিকে বিষয়টি তদন্ত করে মামলা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানার ওসি আলমগীর হোসেন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সোমবার মেয়েটিকে থানায় নিয়ে এসে দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। তাকে একবছর ধরে ভয়-ভীতি দেখিয়ে ধর্ষণ করা হচ্ছে। বিয়ের পরও তাকে উত্ত্যক্ত করা হচ্ছে। ওসি আরো বলেন, এ ব্যাপারে আমরা ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের অনুমতি নিয়ে রাতেই ধর্ষণ মামলা রেকর্ড করবো।