দর্পণ ডেস্ক : চলতি বছর অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন বাঙালি অধ্যাপকসহ তিন অর্থনীতিবিদ। সোমবার স্টকহোমে দ্য রয়্যাল সুইডিশ একাডেমি অব সায়েন্সেস এ পুরস্কার ঘোষণা করে।বিশ্ব থেকে দারিদ্র্য দূরীকরণে এক অসামান্য পরীক্ষামূলক পদ্ধতির জন্য নোবেল পেলেন তারা।

নোবেল কমিটির পক্ষ থেকে জানানো হয়, দারিদ্র্য লাঘবে পরীক্ষামূলক গবেষণার কারণে ভারতের অভিজিত ব্যানার্জি, ইসথার ডাফলো এবং মাইকেল ক্রেমারকে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার দেয়া হয়েছে।

ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিত ব্যানার্জি যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির (এমআইটি) অধ্যাপক। এছাড়া ফরাসী বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক ইসথার ডাফলোও এমআইটির অধ্যাপক এবং অপর বিজয়ী মাইকেল ক্রেমার যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক।

ভারতে জন্ম নেয়া ৫৮ বছর বয়সী অভিজিত ব্যানার্জি যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যায়ল থেকে পিএইচডি শেষে এআইটিতে অ্যধাপনা করছেন। অপরদিকে প্যারিসে জন্ম নেয়া ৪৭ বছর বয়সী ইসথার ডাফলো এমআইট থেকে পিএইচডি শেষ সেখানেই পড়াচ্ছেন।

অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার বিজয়ী প্রথম বাঙালী হলেন ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন। দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্রের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে তিনি অর্থনৈতিক বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন।

নোবেল বিজয়ী ফরাসি বংশোদ্ভূত মার্কিন অধ্যাপক ইসথার ডাফলো অভিজিতের স্ত্রী। দ্বিতীয় নারী অর্থনীতিবিদ হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পেলেন তিনি। সর্বকনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পাওয়ার কৃতিত্বও দেখালেন ডাফলো। গত ৫০ বছরে কোনো নারী অর্থনীতিতে নোবেল পায়নি।

অভিজিতের নোবেল প্রাপ্তিতে অমর্ত্য সেনের দুঃখ 

অমর্ত্য সেনের পর দ্বিতীয় বাঙালি হিসেবে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন ভারতীয় বাঙালি বংশোদ্ভূত মার্কিন নাগরিক অভিজিত ব্যানার্জি। বৈশ্বিক দারিদ্র্য বিমোচনের লড়াইয়ে কার্যকর একতত্ত্ব হাজির করে স্ত্রী ইসথার ডাফলোর সঙ্গে আরেক মার্কিন অর্থনীতিবিদ মাইকেল ক্রেমারও এই পুরস্কার ভাগাভাগি করে নেবেন।

দুর্ভিক্ষ, মানব উন্নয়ন তত্ত্ব, জনকল্যাণ অর্থনীতি ও গণদারিদ্র্যের অন্তর্নিহিত কার্যকারণ বিষয়ে গবেষণা এবং উদারনৈতিক রাজনীতিতে অবদান রাখার জন্য ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন অমর্ত্য সেন। অভিজিতের নোবেল জয়ের পর উল্লাস প্রকাশ করেছেন এই অর্থনীতিবিদ; পাশাপাশি দুঃখ প্রকাশ করেছেন তিনি। তার এই দুঃখবোধের পেছনে রয়েছে অভিজিতের বাবার ছেলের এই সম্মানজনক পুরস্কারপ্রাপ্তি দেখে যেতে না পারা।

তিনি বলেন, অভিজিতের নোবেল প্রাপ্তির খবরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। দারিদ্র বিষয়ে নতুন ধরনের মূল্যবান কাজ করেছেন অভিজিত দম্পতি ও ক্রেমার। সেই কাজের ফল নানা দিক দিয়ে দারিদ্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমাদের সাহায্য করবে।’

অমর্ত্য সেন বলেন, ‘আমি নিজে একাধিক কারণে ভীষণ খুশি। এর মধ্যে একটা কারণ হলো, অভিজিৎকে আমি তার শৈশব থেকে ভালোভাবে জানি এবং তার চিন্তাশক্তিকে আমি বরাবর বাহবা দিয়ে এসেছি। আমার একমাত্র দুঃখ হলো, তার বাবা আমার বন্ধু দীপক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে এটা দেখে যেতে পারলেন না। তবে অভিজিতের মা নির্মলা এই উৎসবে যোগ দেবেন, সেটা ভেবেও আনন্দিত বোধ করছি।’