সকালে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে সংগঠনটির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়। যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের সভায় উপস্থিত হননি সংগঠনের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী। ফলে তাকে ছাড়াই সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। যুবলীগের ৭ম কংগ্রেস উপলক্ষে শুক্রবার এতে সভাপতিত্ব করেন যুবলীগ সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশিদ।
যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্যদের কয়েকজন জানান, এই সভা ডাকার অনুমতি দিয়েছেন ওমর ফারুক চৌধুরী। তার নির্দেশই এই সভা হয়েছে। তবে তিনি কেন সভায় উপস্থিত হননি সে বিষয়ে কেউ কিছু বলেননি।
সভা অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-প্রেসিডিয়াম সদস্য শহিদ সেরনিয়াবাত, শেখ শামসুল আবেদীন, আলতাব হোসেন বাচ্চু, মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা, মজিবুর রহমান চৌধুরী, মো. ফারুক হোসেন, মাহবুবুর রহমান হিরন, আবদুস সাত্তার মাসুদ, মো. আতাউর রহমান, অ্যাডভোকেট বেলাল হোসাইন, আবুল বাশার, মোহাম্মদ আলী খোকন, অধ্যাপক এবিএম আমজাদ হোসেন, আনোয়ারুল ইসলাম, ইঞ্জিনিয়ার নিখিল গুহ, শাহজাহান ভুঁইয়া মাখন, ডা. মোখলেছুজ্জামান হিরু, শেখ আতিয়ার রহমান দিপু প্রমুখ।
আজকের বৈঠকে যুবলীগের দপ্তর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমান আনিসকে সংগঠন থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। দুর্নীতি, চাঁদাবাজিসহ আরো কয়েকটি অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়। ক্যাসিনো বন্ধে র্যাবের অভিযানের পর থেকে আত্মগোপনে রয়েছেন যুবলীগের এই নেতা।
এদিকে আওয়ামী লীগের চার সহযোগী-ভ্রাতৃপ্রতিম সংগঠনের সম্মেলনের তারিখ নির্ধারণ হয়েছে। ২৩ নভেম্বর যুবলীগ, ১৬ নভেম্বর স্বেচ্ছাসেবক লীগ, ৯ নভেম্বর শ্রমিক লীগ ও ২ নভেম্বর কৃষক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।
বৈঠক শেষে দীপু সাংবাদিকদের বলেন, সভা ডাকার অনুমতি চেয়ারম্যান দিয়েছেন। চেয়ারম্যানের নির্দেশই এই সভা হয়েছে। তবে তিনি কেন আসেননি সে বিষয়টি জানা নেই। হয়তো অসুস্থতার কারণে।
যুবলীগের আসন্ন সম্মেলনে সভাপতিত্ব কে করবেন জানতে চাইলে অধ্যাপক এ বি এম আমজাদ হোসেন বলেন, ‘এর দায় দায়িত্ব সম্পূর্ণ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। উনি যেভাবে বলবেন সেভাবেই হবে। আজ সাধারণ সম্পাদক সভাপতিত্ব করেছেন। চেয়ারম্যান একটি বড় পোস্ট, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী যে সিদ্ধান্ত দেবেন আমরা তাই করব।’
সভায় অংশ নেয়া যুবলীগ নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তিন ঘণ্টাব্যাপী রুদ্ধদ্বার এই বৈঠকে গুরুত্বপূর্ণ কিছু সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে- যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির দফতর সম্পাদক কাজী আনিসুর রহমানের বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত। শৃঙ্খলাভঙ্গের দায়ে যুবলীগ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে সভাশেষে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক হারুনুর রশীদ।
কাজী আনিসুর রহমান যুবলীগের দফতর সম্পাদক পদে ছিলেন। তিনি যুবলীগ অফিসের পিয়ন থেকে কেন্দ্রীয় নেতা বনে যান। তিনি যুবলীগ চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরীর ঘনিষ্ঠ হিসেবে পরিচিত ছিলেন। দুর্নীতি-মাদক-ক্যাসিনোবিরোধী শুদ্ধি অভিযান শুরু হলে আড়ালে চলে যান বিতর্কিত আনিস।
সভায় যুবলীগ চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো নিয়ে আলোচনা হয় বলে জানা গেছে। তবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার প্রধানমন্ত্রীর ওপর ছেড়ে দেয়া হয়।
সরকারের চলমান ক্যাসিনোবিরোধী অভিযানে যুবলীগের ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদ্য বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন সম্রাট ও তার সহযোগী যুবলীগ নেতা আরমান গ্রেফতারের পর ওমর ফারুক চৌধুরীর দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়। তলব করা হয় তার ব্যাংক হিসাব। এর পর রাজনৈতিক কর্মসূচি থেকে আড়ালে চলে যান ওমর ফারুক চৌধুরী।