প্রধানমন্ত্রীর সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী গোলটেবিল আলোচনায় ইকবাল সোবহান চৌধুরী ও অন্যরাসংবাদপত্র শিল্প সুরক্ষায় প্রণোদনার দরকার বলে মন্তব্য করেছেন । তিনি বলেন, ‘সংবাদপত্র শিল্পের মালিকরা যাতে ওয়েজ বোর্ড অনুযায়ী সাংবাদিকদের বেতন-ভাতা দিতে পারেন সে জন্য সরকারি প্রণোদনার প্রয়োজন।’ শুক্রবার (২৭ সেপ্টেম্বর) জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সাংবাদিক স্বার্থ সুরক্ষা পরিষদ আয়োজিত ‘গণমাধ্যমের বিদ্যমান সংকট : সাংবাদিকদের স্বার্থ সুরক্ষা’ শীর্ষক এক গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এসব কথা বলেন।

সাংবাদিকদের সুরক্ষায় প্রণোদনার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়ে তিনি আরও বলেন, ‘এই শিল্পে যদি অসন্তোষ সৃষ্টি হয় তবে সব মহলের ওপর এর প্রভাব পড়বে। তাই সরকারকে এ বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে।’

এ সময় গণমাধ্যমের স্বত্বাধিকারীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘একটি কথা মালিকদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে, সাংবাদিকদের বাদ দিয়ে কোনও সংবাদপত্র বা ইলেকট্রনিক মিডিয়া বিকশিত হতে পারে না। তাই, এখানে যারা শ্রম ও মেধা দিচ্ছেন তাদের মর্যাদা ও অধিকার অবশ্যই সংরক্ষণ করতে হবে। যদি তা না করতে পারেন তবে ভবিষ্যতে এই শিল্পে অসন্তোষ সৃষ্টি হবে।’

সাংবাদিকদের মজুরি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে তিনি বলেন, ‘১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সাংবাদিকদের অবস্থানকে মর্যাদাপূর্ণ করার লক্ষ্যে, অন্য পেশা থেকে আলাদা করে একটি আইন করেছিলেন। ওই আইনের অধীনে আমাদের ওয়েজ বোর্ডগুলো ঘোষণা করা হয়। দুঃখের বিষয়, ২০০৬ সালের শেষের দিকে এসে হঠাৎ করে তৎকালীন বিএনপি-জামাত সরকার একতরফাভাবে, কারও সঙ্গে আলোচনা না করে আইনটি রোধ করে। সাংবাদিকদের শ্রম আইনের অন্তর্ভুক্ত করা হয়। আমরা এখন মজুরি বোর্ডের অন্তর্ভুক্ত।’

এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, ‘আমরা দাবি জানিয়েছিলাম, ১৯৭৪ সালের ওই আইনটিকে আবার যুগোপযোগী করে সাংবাদিকদের মর্যাদা ফিরিয়ে দিতে। সে লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তথ্য মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দিয়েছেন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব একটি আইন করতে। যেখানে ইলেকট্রনিক মিডিয়াকে স্বীকৃতি দেওয়া হবে। ইলেকট্রনিক মিডিয়ার বিকাশ বর্তমান প্রধানমন্ত্রীর হাত ধরে। তাই, আমি মনে করি, আইনটি পাস হলে গণমাধ্যমকর্মীদের বঙ্গবন্ধুর দেওয়া মর্যাদা পুনঃপ্রতিষ্ঠা হবে।’

এ সময় সংবাদিকদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে ইকবাল সোবাহান চৌধুরী বলেন, ‘আমি মনে করি, সামনের দিনগুলোতে আমাদের অনেক আন্দোলন-সংগ্রামের দরকার আছে। সেজন্য নিজেদের মধ্যে ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। আমরা যদি ঐক্যবদ্ধ হতে না পারি, তাহলে আমাদের স্বার্থ সংরক্ষণ করতে পারবো না। রাজনৈতিক কারণে সাংবাদিকদের ইউনিয়ন বিভক্ত হয়েছে। কিন্তু, সাংবাদিকদের স্বার্থরক্ষায় বিভক্ত হওয়ার কোনও কারণ নেই।’

সিনিয়র সাংবাদিক কুদ্দুস আফ্রাদের সভাপতিত্বে গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন– ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি সোহেল হায়দার চৌধুরী, ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের মহাসচিব সাবান মাহমুদ, তথ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মিজানুল আলম, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সভাপতি ইলিয়াস হোসেন প্রমুখ।