গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর দশমিনায় জমি জমা সংক্রান্ত বিরোধের
জের ধরে সংখ্যালঘু পরিবারের অন্ত:সত্ত্বা নারী, শিশু সহ ৮ জনকে পিটিয়ে
রক্তাক্ত জখম করেছে প্রতিপক্ষরা। আহতদের মধ্যে আশংকা জনক অবস্থায় লক্ষ্মী
রানী (৪৫) পুত্র বধূ অঞ্জনা রানী (২৫) এবং অঞ্জুর স্বামী খোকন চন্দ্র
মজুমদারকে বরিশাল শেবাচিমে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের দশমিনা উপজেলা
স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।
রোববার রাত ৮টার দিকে উপজেলার বেতাগী সানকিপুর ইউনিয়নের ঠাকুরের হাট
বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সোমবার সকালে দশমিনা থানা পুলিশ এ ঘটনায় জহির
সিকদার ও আলম মৃধা নামের দু’জনকে আটক করেছে।
স্থানীয় ও আহতদের সূত্রে জানা যায়, ঠাকুরের হাট বাজারের রাস্তার উত্তর
পার্শ্বে প্রতিদিনের মত ক্ষিতিষ মজুমদার তার চা-পানের দোকান করছিল। পূর্ব
পরিকল্পিত ভাবে ওই দোকানসহ জমি থেকে তাদের উৎখাত করে দখলে নেয়ার
উদ্দেশ্যে জাহিদুল ইসলাম, তার ছেলে ইরাক প্যাদা, কালাম প্যাদা, রুপচাঁন
প্যাদা, বায়েজিদ প্যাদা, আলম মৃধাসহ প্রায় ১৫/২০ জনের একটি দল দেশীয়
অস্ত্র-শস্ত্র নিয়ে ক্ষিতিষের দোকানে হামলা চালিয়ে ভাংচুর শুরু করে। পরে
দোকানের পিছনে থাকা বসতঘরেও হামলা চালায় তারা। এসময় ক্ষিতিষ মজুমদার,
স্ত্রী লক্ষ্মী রানী (৪৫) ও তাদের ছেলে খোকন চন্দ্র মজুমদার (২৮) তাদের
সন্ত্রাসী কার্যকলাপের প্রতিবাদ করায় তাদেরকে এলোপাথারী পিটিয়ে রক্তাক্ত
জখম করে। হামলার খবর পেয়ে খোকনের অন্ত:সত্ত্ব স্ত্রী অঞ্জনা রানী তার
কোলের দুই বছরের কন্যা সন্তানকে সাথে নিয়ে ঘটনাস্থলে পৌছলে অঞ্জনা রানী ও
তার কোলের শিশুকেও লোহার রড দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে হামলাকারীরা। পরে
হামলার খবর পেয়ে ক্ষিতিষের মা শেফালী রানী (৯০), ভাই যতিন মজুমদার (৭০),
জয় চাঁদ মজুমদার (৩৫), বৌদি কনক বালা (৩৫) ও শিশু কলি ঘটনাস্থলে এলে
তাদেরকেও পিটিয়ে জখম করে হামলাকারিরা। হামলাকারিরা সন্ত্রাসী প্রকৃতির
হওয়ায় এবং এক প্রভাবশালীর ছত্রছায়ায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ায়
স্থানীয় লোকজন প্রতিবাদ করতে এগিয়ে আসেনি।
দশমিনা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মো. গোলাম
মোস্তফা বলেন, গতকাল রাতে একই পরিবারের ৮জনকে আহত অবস্থায় স্বাস্থ্য
কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। এর মধ্যে গুরুতর তিন জনকে বরিশাল
শে.বা.চি.ম-এ পাঠানো হয়েছে। এর মধ্যে অঞ্জু নামের চার মাসের এক
অন্ত:সত্ত্বা নারী রয়েছে।
দশমিনা থানার ওসি (তদন্ত) মো. আনোয়ার হোসেন জানান, ঘটনার পর ওই এলাকায়
পুলিশ টহলে রাখা হয়েছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। আজ সকালে দু’জনকে আটক করা
হয়েছে। অন্য আসামীদের আটকের জন্য পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে।