গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চালিতাবুনিয়া
ইউনিয়নটি এখন বিক্ষুব্ধ আগুনমূখা নদীর তীব্র ভাঙনে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায়।
রাঙ্গাবালী উপজেলার চারদিকে নদীবেষ্টিত বিচ্ছিন্ন এ দ্বীপ ইউনিয়নটি
উন্নয়নের ছোঁয়া থেকে বঞ্চিত হওয়ায় প্রতি মুহুর্তেই আতঙ্কের মাঝে দিন
কাটাচ্ছেন এ ইউনিয়নের বাসিন্দারা। ভাঙনের কবলে পড়ে সহায় সম্বল হারিয়ে
নিঃস্ব হয়ে অনেকই অন্যত্র চলে গেছেন বেঁচে থাকার স্বপ্ন নিয়ে।
সরেজমিনে জানা যায়, আগুনমূখার অবিরাম উম্মাদ ঢেউয়ের আঘাতে ইউনিয়নের
উত্তরে অবস্থিত গরুভাঙ্গা গ্রাম থেকে দক্ষিনের ছয়নম্বর গ্রাম পর্যন্ত
প্রায় চার কিলোমিটার বেড়িবাঁধ ইতোমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। এর সাথে
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে তিন শতাধিক বসতঘর, ফসলি জমি, গাছ-পালাসহ নানা
জনগুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। আতঙ্কে আছেন নদী তীরবর্তী এলাকায় বসবাসরত প্রায়
তিন হাজার পরিবার। হুমকিতে আছে চালিতাবুনিয়া বাজার, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন,
মাধ্যমিক ও প্রাথমিক বিদ্যালয়, মসজিদ, মাদ্রাসা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র,
আশ্রায়ন কেন্দ্রসহ নানা স্থাপনা।
স্থানীয়রা জানান, বর্ষা মৌসুমে আগুনমুখার উম্মাদনা বাড়ায় ভাঙনের তীব্রতা
দ্বিগুণ বৃদ্ধি পায়। এ সময় তেজস্বিনী আগুনমূখা যেন বিধ্বংসী হয়ে ওঠে।
ভেঙ্গে তছনছ করে দেয় নদী তীরের গ্রামের পর গ্রাম। তাই নদী তীরে থাকা জেলে
পরিবারগুলো নির্ঘুম রাত কাটায়। অচিরেই এ ভাঙন কবলিত এলাকায় বেড়িবাঁধ
পুনঃনির্মাণ এবং নদী শাসন করা না হলে ভয়াল আগুনমূখার করাল গ্রাসে
নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে পারে রাঙ্গাবালীর মানচিত্র থেকে চালিতাবুনিয়া
ইউনিয়নটি। এতে হুমকিতে পড়বে উপকূলের মৎস্য ও কৃষি সম্পদ। নিঃশ্চিহ্ন হয়ে
যাবে হাজার হাজার পরিবারের বসতঘর সহ ফসলী জমি।
চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের প্যানেল চেয়ারম্যান মু. রানা হাওলাদার জানান,
’খরস্রোতা আগুনমূখার করাল গ্রাসে রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি চালিতাবুনিয়া
ইউনিয়ন কার্যালয় কাম সাইক্লোন শেল্টারটি ক্রমশ: নদীর মধ্যে চলে যাওয়ায়
এটি এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছেনা। যেকোন সময় এটি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যেতে
পারে। অতিদ্রুত সরকারি কোন পদক্ষেপ না নেয়া হলে হয়ত চালিতাবুনিয়া
ইউনিয়নটিই একদিন নদীর অতল গহ্বরে তলিয়ে যাবে।’
রাঙ্গাবালী উপজেলা নির্বাহী অফিসার মু. মাশফাকুর রহমান জানান, ’এ
সম্পর্কে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের লিখিত ভাবে জানানো হয়েছে। উর্ধ্বতনদের
নির্দেশনা অনুসারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহন করা হবে বলে জানান তিঁনি।’