গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি
পরীক্ষার ফলাফলে শহরের কলেজ দু’টির ফলাফল বিপর্যয় হয়েছে। শহরের চেয়ে
গ্রামের কলেজগুলো পাশের শতকরা হার ও জিপিএ ৫ পেয়ে এগিয়ে রয়েছে। শহরের
কলেজগুলোর ফলাফল ধ্বসের নেপথ্যে কলেজ দু’টির অভ্যন্তরীন কোন্দল, শ্রেনী
কক্ষে শিক্ষকদের পাঠদান না করা, শিক্ষকদের কোচিং বানিজ্য ছিল অন্যতম
কারন। এছাড়া কলেজ বাদ দিয়ে ঠিকাদারী বানিজ্য, নেতার তৈলমর্দন ও
এমপি-মন্ত্রীর অনুসারী ও আত্মীয় শিক্ষকদের দম্ভে নিজ নিজ শিক্ষা
প্রতিষ্ঠানের ছাত্র-ছাত্রীদের পড়াশুনা সহ পরীক্ষার প্রস্তুতি তৈরীতে ডাক
সাইডের শিক্ষকদের উদাসনতাকেই দায়ী করছেন ফলাফল বিপর্যয় হওয়া
শিক্ষার্থীদের অভিভাবকরা।

জানা যায়, ২০১৯ সালে অনুষ্ঠিত এইচএসসি পরীক্ষায় উপজেলার ৪টি কেন্দ্রের
৫টি ভেন্যুতে মোট ৬টি কলেজের শিক্ষার্থীরা অংশগ্রহন করে। তন্মধ্যে
আলহাজ্ব জালাল উদ্দীন কলেজে শতকরা ৯৭.৩২ শতাংশ শিক্ষার্থী পাশ করে এবং
১২টি জিপিএ ৫ পেয়ে উপজেলায় শীর্ষ স্থান অর্জন করে। অপরদিকে মুক্তিযোদ্ধা
মেমোরিয়াল কলেজের পাশের শতকরা হার ৯৬.৫৫ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১টি। এ কলেজ
থেকে ১৭৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১৬৯ জন উত্তীর্ন হয়েছে। কুয়াকাটা খানাবাদ
ডিগ্রী কলেজের পাশের শতকরা হার ৯০.৮৪ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ৩টি। এ কলেজ
থেকে ৪১৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ৩৭৭ জন উত্তীর্ন হয়েছে। কলাপাড়া মহিলা
কলেজে পাশের শতকরা হার ৫৮.২৯ এবং জিপিএ ৫ অর্জন করতে পারেনি কোন
শিক্ষার্থী। এ কলেজ থেকে ১৮৭ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে ১০৯ জন উত্তীর্ন
হয়েছে। সদ্য সরকারীকরন করা মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস কলেজের পাশের শতকরা
হার ৪৪.৪৭ এবং জিপিএ ৫ পেয়েছে ১টি। এ কলেজ থেকে ৩৩৮ জন পরীক্ষার্থীর
মধ্যে ১৫৭ জন উত্তীর্ন হয়েছে। ধানখালী ডিগ্রী কলেজের পাশের শতকরা হার ৪১
এবং জিপিএ ৫ অর্জন করতে পারেনি কেউ। এ কলেজ থেকে ৯৯ জন পরীক্ষার্থীর
মধ্যে ৩৮ জন উত্তীর্ন হয়েছে।

এদিকে একাধিক অভিভাবকের অভিযোগ, পৌরশহরের সরকারী মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস
কলেজ ও মহিলা ডিগ্রী কলেজের বেশ কিছু শিক্ষক পাঠদানের কোন রকম প্রস্তুতি
ছাড়াই কলেজে ক্লাশের সময় এসে শ্রেনী কক্ষে গল্প-গুজব করে সময় কাটিয়ে দেন।
কিছু শিক্ষক কলেজকে প্রধান্য না দিয়ে নিজের ঠিকাদারী বানিজ্য ও রাজনৈতিক
দলের নেতার পরিচয়ে ফায়দা হাসিলে ব্যস্ত সময় পার করেন। অপর কিছু শিক্ষক
নিজেদের পরিচালিত কোচিং ছাড়া শ্রেনী কক্ষে পাঠ দানে থাকছেন উদাসীন। এছাড়া
কিছু শিক্ষক মোজাহার উদ্দীন বিশ্বাস ডিগ্রী কলেজ ও মহিলা ডিগ্রী কলেজের
রেষা-রেষিতে পরীক্ষার হলে শিক্ষার্থীদের হয়রানীর হেতু হিসেবে কাজ করছেন
বলে একাধিক অভিভাবক জানিয়েছেন।