দর্পণ ডেস্ক : জাতিসংঘের শিক্ষা, বিজ্ঞান ও সংস্কৃতি বিষয়ক সংগঠন ইউনেস্কোর বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটি সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
আজারবাইজানের বাকুতে অনুষ্ঠিত কমিটির ৪৩তম সভায় ২১ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি সর্বসম্মতভাবে এ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। বৃহস্পতিবার এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানিয়েছে প্যারিসের বাংলাদেশ দূতাবাস।
তবে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিস্তারিতভাবে আলোচনার পর সর্বসম্মতভাবে সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। এক্ষেত্রে বাংলাদেশের পক্ষে কিউবা,বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা এবং চীন সুন্দরবনকে বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত না করার নতুন সিদ্ধান্ত উপস্থাপন করে। এছাড়া আজারবাইজান, ব্রাজিল, ইন্দোনেশিয়া, কুয়েত, তিউনিসিয়া, তানজানিয়া, বুরকিনাফাসো, উগান্ডা,জিম্বাবুয়ে ও পর্যবেক্ষক রাষ্ট্র হিসেবে ভারতসহ ১৫টি সদস্য দেশ সরাসরি এ সিদ্ধান্তের পক্ষে অবস্থান নিয়ে বক্তব্য প্রদান করে।
সিদ্ধান্ত গ্রহণের পর প্রধানমন্ত্রীর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী বীরবিক্রম কমিটির সদস্যদের ধন্যবাদ জানিয়ে বর্তমান কমিটির উন্নয়ন ও পরিবেশ রক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাকরণে গৃহীত এ সিদ্ধান্ত বাংলাদেশ সরকারকে যথাযথ পদক্ষেপ গ্রহণ ও বাস্তবায়নে উৎসাহিত করবে বলে মন্তব্য করেন।
গত ৩০ জুন থেকে বাকুতে শুরু হয়েছে বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ৪৩তম সভা। এটি চলবে আগামী ১০ জুলাই পর্যন্ত। এই সভায় বাংলাদেশ প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন ড. তৌফিক- ই-ইলাহী চৌধুরী। প্রতিনিধি দলে অন্যান্য সদস্যদের মধ্যে রয়েছেন ফ্রান্সে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও ইউনেস্কোতে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি কাজী ইমতিয়াজ হোসেন।
উল্লেখ্য, সুন্দরবন ১৯৯৭ সালে ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
প্রসঙ্গত, রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এবং ব্যাপক সংখ্যায় শিল্প কারখানা নির্মাণের কারণে সুন্দরবন ‘মারাত্মক হুমকির মুখে রয়েছে’- এমন পর্যবেক্ষণ দিয়ে সুন্দরবনকে ‘বিপন্ন বিশ্ব ঐতিহ্যের’ তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার সুপারিশ করেছিল ইন্টারন্যাশনাল ইউনিয়ন ফর কনজারভেশন অফ নেচার (আইইউসিএন)। এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়ার ভার ছিল ২১ সদস্যের বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির ওপর।
পরিবর্তিত সিদ্ধান্ত অনুসারে, এ বছর বাংলাদেশ সরকার বিশ্ব ঐতিহ্য কমিটির বিশেষজ্ঞদের সমন্বয়ে গঠিত একটি প্রতিনিধি দলকে আমন্ত্রণ জানাবে। দলটি আগামী ফেব্রুয়ারি ২০২০-এর মধ্যে হালনাগাদ তথ্য সম্বলিত প্রতিবেদন দাখিল করবে এবং বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের জন্য কৌশলগত পরিবেশ মূল্যায়ন (এসইএ) প্রক্রিয়া শুরু করার জন্য বাংলাদেশ সরকারের প্রতিশ্রুতিকে স্বাগত জানায়।