ঢাকা-১৭ আসনের বর্তমান সংসদ সদস্য চিত্রনায়ক ফারুকের কাছে (আকবর হোসেন খান পাঠান) কাছে সোনালী ব্যাংক ঋণ হিসেবে সুদে আসলে পায় পাঁচ হাজার পাঁচশ ৩৩ কোটি ৪৬ লাখ টাকা।এ ব্যাংকঋণের মাত্রা ফারুকের বিবেচনায় অস্বাভাবিক।এতো ঋণ চক্রবৃদ্ধিহারেও বাড়তে পারে না বলে মনে করে ফারুক। তিনি গতকাল বুধবার বলেন, ‘ ব্যাংকের কিছু অসৎ কর্মকর্তারা থাকেন ‘উদ্যোক্তা’ খোঁজার ধান্ধায়। তাদের উদ্দেশ্য থাকে ‘উদ্যোক্তা’ বের করে ঋণ দেওয়া ও সেই ঋণ অনুমোদন হওয়ার পর ‘উদ্যোক্তা’র কাছ থেকেও ‘কমিশন’ বাবদ কিছু টাকা আত্মসাৎ করা।সেইদিক থেকে অনেক দুর্নীতিবাজ ব্যাংক কর্মকর্তারা যেমন রয়েছেন তেমনই অসৎ ‘উদ্যোক্তা’রাও রয়েছেন।কিন্তু আমি তো খেলাপি হওয়ার জন্য ঋণ নিইনি।সর্বশেষও আমি সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের সাথে সমঝোতায় গিয়েছি সহজ উপায়ে ঋণ পরিশোধের। সেই ব্যাংকে ভালো কর্মকর্তাও রয়েছেন। তারা আমাকে ১২ বছরের মেয়াদে সিঙ্গেল ডিজিটে সুদের হার কমিয়ে ঋণ পরিশোধের সুযোগ দিয়েছেন। কিন্তু চিন্তা করেন, আমার মতো মানুষ যদি এমন বিপদে পড়ে তবে সাধারণ মানুষ যাবে কোথায়?’
তিনি বলেন, অনেক আশা করে ২০০৪ সালে গাজীপুরের কালীগঞ্জে টেক্সটাইল মিল করেছিলাম।মিলের নাম, ‘ফারুক ডায়িং এ- নিটিং ম্যানুফ্যাকচারিং টেক্সটাইল লিমিটেড’। এখানকার জায়গা আমি ১৯৭৬ সালে বিঘা প্রতি মাত্র ৩০০০ হাজার টাকা মুল্যে ২০ বিঘা কিনি।এরপর ব্যাংকের কিছু অসৎ কর্মকর্তাদের দ্বারা প্রভাবিত হয়ে ব্যাংকের পরামর্শে নিজের সব টাকা দিয়ে বিল্ডিং তৈরি করি। লাগবে ৫ হাজার স্কোয়ার ফিট। ওরা (ব্যাংকের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তারা) বললেন, ৪৫ হাজার স্কোয়ার ফিট করতে। আমি অভিনয় জগতের মানুষ।এতো কিছু বুঝি না। উনাদের কাছে বারবার গিয়েছি। ২০০৬ সালে আবার গেলাম, বললাম এলসি করে দেন। টাকা জমা দিলাম। কিন্তু এলসি পেলাম না। লেগে থাকলাম। বললাম, ওয়ার্কিং ক্যাপিটেল দেন, যেখানে আমাকে ১০ কোটি টাকা ওয়ার্কিং ক্যাপিটেল দিবে, সেখানে দিলো মাত্র ১ কোটি ৭০ লাখ টাকা। এইভাবে আজ এই মেশিন তো কাল সেই মেশিন কিনতে টাকা খরচ হতে থাকে।এসব কিছুই গটেছে চারদলীয় জোটের সরকারের আমলে।আমি একজন মুক্তিযোদ্ধা। জামায়াতে ইসলামীর মানসিকতার কিছু লোক আমাকে বিপদে ফেলতে এরকম করেছে।এরপর ২০১৩ সালে আওয়ামী লীগ সরকারের সময়েও কারো কারো নীল নকশায় ব্যাংক আমাকে চিঠি দিয়ে জানায় আমার কাছে পাঁচ হাজার পাঁচশ ৩৩ কোটি ৪৫ লাখ টাকা পাবে। এভাবেই আমি এখন বিশাল এই ঋণের জালে পড়ে আছি।কিন্তু আমার কাছে কাগজপত্র সব আছে, প্রমাণাদি আছে।’
ফারুকের কাছে এমন প্রশ্ন করলে ‘একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য নির্বাচন কমিশনে দেওয়া হলফনামা থেকে জানা যায়, স্থায়ী সম্পদের হিসাবে তিনি গাজীপুরের কালীগঞ্জে ৬০ বিঘা কৃষিজমি থাকার কথা উল্লেখ করেছেন, যার অর্থমূল্য দেখানো হয়েছে আড়াই লাখ টাকা। হলফনামায় দেওয়া তথ্য অনুসারে তাঁর ব্যাংক হিসাবে জমা অর্থের পরিমাণ ৫ লাখ ৭৬ হাজার ১১২ টাকা। এর বাইরে গাজীপুরে পৈতৃক বাড়ি ছাড়াও ঢাকার বারিধারায় একটি বাড়ি আছে। যার পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া আছে একটা নির্মাতা প্রতিষ্ঠানের কাছে।অথচ বড়ো ধরণের ব্যাংক ঋণ ছিলো আপনার ?’ এর উত্তরে তিনি বলেন, ‘বারিধারায় বাড়ি আছে। এখন গাজীপুরে বাড়ি নেই।আর ব্যাংক ঋণের ব্যাপারে প্রতারণামুলক বলেই হয়তো বাংলাদেশ ব্যাংক আমাকে হেল্প করেছে।’ সূত্র: আমাদের সময়.কম