দর্পণ ডেস্ক : মঙ্গলবার নরেন্দ্র মোদি তিন তালাকের সঙ্গে নারীমুক্তির সম্পর্কের কথা বলে কংগ্রেসকে আক্রমণ করলেন। জানিয়ে দিলেন কংগ্রেস বা বিরোধীদের উচিত নয় এক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করা। প্রসঙ্গত, এই বিল গতবার রাজ্যসভায় আটকে যাওয়ার পরে এবারও পেশ করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন কংগ্রেসকে আক্রমণ করে বলেন, পঞ্চাশের দশকে কংগ্রেস সরকার কোনও অভিন্ন সিভিল কোড তৈরি করার পরিবর্তে হিন্দু কোড বিল পেশ করে। তিনি বলেন, সেবারের পরে আশির দশকে অর্থাৎ ৩৫ বছর আবারও সুযোগ এসেছিল শাহ বানো কেসের সময়। মোদি বলেন, ‘এমনকি সুপ্রিমকোর্টও পাশে ছিল এবং দেশজুড়ে লিঙ্গসাম্যের একটা হাওয়া ছিল। কিন্তু ওরা এত উপরে ছিল যে নিচে মাটির বাস্তবতাকে দেখতেই পায়নি। ওরা আবার সুযোগটা মিস করে।’

তিনি আরও বলেন, ‘আজ, ৩৫ বছর পরে কংগ্রেসের কাছে আবারও সুযোগ এসেছে। আমরা একটা বিল (তিন তালাক) পেশ করেছি মহিলাদের মর্যাদা প্রতিষ্ঠার অভিপ্রায়ে। একে কোনও সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত করার প্রয়োজন নেই।’

কংগ্রেসকে বিঁধে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শাহ বানো কেসের সময়ে এক কংগ্রেস মন্ত্রী বলেছিলেন, ‘‘মুসলিমদের ধরার দায় কংগ্রেসের নয়। ওরা যদি নর্দমায় পড়ে থাকতে চায়, তাই করুক।’

তিন তালাক বিলে প্রস্তাবিত স্বামীদের তিন বছরের কারাবাসের বিরোধিতা কেবল কংগ্রেসই নয়, অন্য বিরোধী দলগুলোও করেছে। এমনকী এনডিএ-র অন্যতম জোটসঙ্গী নীতিশ কুমারের জনতা দল ইউনাইটেড, নবীন পট্টনায়েকের বিজু জনতা দল এবং অন্ধ্রপ্রদেশের শাসক ওয়াইএসআর কংগ্রেসও এর বিরোধিতা করেছে।

এই কারাবাস নিয়েই মূলত আপত্তি বিরোধীদের। কোনও গার্হস্থ্য সমস্যায় কারাবাসের প্রস্তাবের বিরোধিতা করেছে তারা। তাদের মতে, এই বিলে শেষ পর্যন্ত মুসলিমদের আক্রান্ত হতে হবে।

সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, এই বিল মেয়েদের আক্রান্ত হওয়ার থেকে বাঁচাবে। তাদের সমানাধিকার দেবে। এই প্রস্তাবিত আইন লিঙ্গসাম্যের প্রতিষ্ঠার জন্যই তৈরি করা হবে। এবং এটি সরকারের দর্শন ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ, সব কা বিশ্বাস’-এরই অংশ।

রাজ্যসভায় এখনও সংখ্যালঘু বিজেপি। তাই বিলটি উচ্চ কক্ষে পাশ করাতে বিরোধীদের সমর্থন তাদের প্রয়োজন। নির্বাচনে কী হয়েছে তা ভুলে সবাই মিলে জনসেবায় ফোকাস করার জন্য সকলকে আর্জি জানিয়েছেন মোদি। তিনি মঙ্গলবার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘কে জিতল, কে হারল— কোনও নির্বাচনকে এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা আমার নীতি নয়।’