কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার বলদিয়া ইউনিয়নের অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া বন্ধুর মেয়েকে তিন বছর ধরে র্ধ্ষণের অভিযোগ উঠেছে মকবুল হাসান প্রধানী (৪৮) নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। গত বুধবার সকাল ৯টার দিকে ওই মেয়েটিকে পুনরায় ধর্ষণের সময় স্ত্রীর কাছে হাতেনাতে ধরা পড়েন মকবুল। পরে মেয়েটিকে এক ইউপি সদস্যের কাছে রাখা হয়।
নির্যাতনের শিকার ওই ছাত্রীকে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়ার সময় তার বাবার বন্ধু মকবুল হোসেন প্রধান তার শ্বশুর বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে গিয়ে প্রথম ধর্ষণ করে। তিন বছরে অসংখ্যবার তাকে যৌন নির্যাতন করেছে। শুরুটা ধর্ষকের স্ত্রীর মাধ্যমে হলেও শেষে বাধ্য হয়ে স্ত্রীই বিষয়টি জনসম্মুখে নিয়ে আসে।
কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার কচাকাটা থানা এলাকার বলদিয়া ইউনিয়নের পূর্বকেদার গ্রামে তিন বছর ধরে বন্ধুর মেয়ে অষ্টম শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণকারী মকবুল হোসেনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার দুপুরে সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার ভুরুঙ্গামারী সার্কেলের নেতৃত্বে ভুরুঙ্গামারী থানা পুলিশের সহায়তায় সাবরেজিস্ট্রার অফিসের সামনে থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটক মকবুল হোসেন বলদিয়া ইউনিয়নের পূর্বকেদার গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস প্রধানের ছেলে।
গত বুধবার সকালে মিলনরত অবস্থায় তাদের দেখে ঘটনা জনসম্মুখে নিয়ে আসে ধর্ষকের স্ত্রী। এদিকে ঘটনাটি ধামাচাপা দিতে উঠেপড়ে লাগে একটি মহল। শেষে সোমবার ধর্ষিতা নিজে বাদী হয়ে কচাকাটা থানায় মামলা দায়ের করে। মামলার ভিত্তিতে ধর্ষককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
নির্যাতিত মেয়েটি জানায়, বাবার বন্ধু হওয়ায় মকবুল তাদের বাড়িতে যাতায়াত করতো। তাদের পরিবারও মকবুলের বাড়িতে যাতায়াত করত। দুই পরিবারের মাঝে সখ্যতা রয়েছে। সে যখন ব্যাপারীটারী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণীতে পড়ে সে সময় মকবুল ও তার স্ত্রী মুক্তা বেগম তাকে সাথে করে নাগেশ্বরী উপজেলার সাপখাওয়া গ্রামে মুক্তার বাবার বাড়িতে বেড়াতে নিয়ে যায়। সেখানে একটি ঘরে মকবুল ও মেয়েটিকে রেখে মকবুলের স্ত্রী মুক্তা ঘরের বাইরে থেকে দরজা আটকিয়ে দিয়ে চলে যায়। সেখানে মেয়েটিকে জোড় করে ধর্ষণ করে মকবুল। পরে মেয়েটি কান্নাকাটি করলে তাকে বিয়ের প্রলোভন দেয়। এক পর্যায়ে কুড়িগ্রাম নিয়ে গিয়ে লোক দেখানে বিয়ে করে। তারপর থেকে প্রায়ই ডেকে মিলনে বাধ্য করতো মকবুল। গত বুধবার সকালে তার বাড়ির মুঠোফোনে ফোন দিয়ে পার্শ্ববর্তী ভ্যানচালক শামছুলের বাড়িতে ডেকে নিয়ে মেয়েটিকে মিলনে বাধ্য করে মকবুল। এ সময় মকবুলের স্ত্রী মুক্তা বেগম এসে তাদের মিলনরত অবস্থায় আটক করে মেয়েটিকে মারধোর করে। পরে লোকজন এসে মেয়েটিকে উদ্ধার করে।
এ বিষয়ে সাবেক ইউপি সদস্য গোলাম হায়দার জানান, মেয়েটির বাবা-মা মেয়েটিকে ঘরে তুলতে অস্বীকার করায় স্থানীয় ইউপি সদস্য আনোয়ার হোসেনের কাছে মেয়েটিকে রাখা হয়েছে।
সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (ভুরুঙ্গামারী সার্কেল) শওকত আলী জানান, ধর্ষণের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর আমরা সোর্স লাগাই। অবশেষে সোমবার দুপুরের দিকে উপজেলা চত্বরের সাবরেজিস্ট্রার অফিসের সামনে থেকে মুল অভিযুক্তকে আটক করা হয়। তাকে কচাকাটা থানায় সোপর্দ করা হয়েছে।