দর্পণ ডেস্ক : রাহুল গান্ধী কংগ্রেস সভাপতি পদ ছাড়ার সিদ্ধান্তে এখনও অনড়। লোকসভা নির্বাচনে চরম ব্যর্থতার পর্যালোচনা করতে শনিবার এক বৈঠকে মিলিত হন দলের নেতারা।

কংগ্রেস নেতারা সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তারা রাহুলের প্রস্তাবকে সর্বসম্মতভাবে প্রত্যাখ্যান করেছেন। কিন্তু ৪৮ বছরের নেতা পিছিয়ে আসতে নারাজ। কংগ্রেসের বিশ্রী ফলাফলের পরে দলের অন্দরেও সমস্যা তৈরি করেছে। চার ঘণ্টার বৈঠকে রাহুল গান্ধী কয়েকজন সিনিয়র কংগ্রেস নেতাকে কড়া কথাও বলেন।

সূত্র থেকে জানা যাচ্ছে, তিনি তাদের উদ্দেশে স্পষ্ট ভাষায় বলেন, তারা নিজেদের ছেলেদের নির্বাচনী প্রার্থী হিসেবে ‘পুশ’ করেছেন।রাজস্থানের মুখ্যমন্ত্রী অশোক গেহলটের ছেলে বৈভব যোধপুরে ২.৭ লক্ষেরও বেশি ভোটে হেরে যান বিজেপি প্রার্থী গজেন্দ্র সিংহ শেখাওয়াতের কাছে। যদিও মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী কমল নাথের ছেলে নকুল নাথ ছিনদ্বারা লোকসভা কেন্দ্রে জয়ী হন কংগ্রেসের টিকিটে। পি চিদাম্বরমের ছেলে কার্তি চিদাম্বরমও তামিলনাডুর শিবগঙ্গা কেন্দ্র থেকে জয়ী হয়েছেন।

রাহুলের স্পষ্ট কথার পিছনে অন্যতম কারণ ছিল, তার বিশ্বাসভাজন উপদেষ্টা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার একটি মন্তব্য। দলে স্থানীয় নেতৃত্বকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে ওই মন্তব্য করেন সিন্ধিয়া। তবে রাহুল কারও নাম নেননি বলেই জানা যাচ্ছে।

ডিসেম্বরে কংগ্রেস তিনটি রাজ্যে জয়লাভ করে— রাজস্থান, ছত্তিশগড় ও মধ্যপ্রদেশ। ওই সব রাজ্যে ঋণজর্জর কৃষদেক দুর্গতি, শস্যের দামবৃদ্ধির ফলে বিজেপি-বিরোধিতা বেড়ে যাওয়া রাহুলদের পক্ষে গিয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের আত্মপ্রসাদ লাভ ও অন্তর্দ্বন্দ্বের ফলে পাঁচ মাসের মধ্যে তারা সেই জয়ের থেকে সুবিধা নিতে অপারগ হল।
৫২ সদস্যের কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটিকে রাহুল জানান, দেড় বছর আগে মা সোনিয়া গান্ধীর পরে প্রাপ্ত দলের সর্বোচ্চ পদটি তিনি ছেড়ে দিতে চান।

বিপুল পরাজয়ের ধাক্কায় পর্যুদস্ত কংগ্রেসের নেতারা বারবার তাদের মুখ্য নেতার কাছে আবেদন করতে থাকেন নিজের সিদ্ধান্তের বিষয়টি পুনর্বিবেচনা করার জন্য।
সূত্র বলছে, পি চিদাম্বরম রাহুলকে পদত্যাগ না করার ব্যাপারে অনুরোধ জানাতে গিয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। তিনি বলেন, এর ফলে অনেক সমর্থক, বিশেষত দক্ষিণের, যারা কংগ্রেসকে ভোট দিয়েছে তারা কোনও ‘চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত’ নিতে পারে রাহুল পদত্যাগ করলে।
রাহুল একথা অবশ্য বারবারই পরিষ্কার করে বলেছেন যে, তিনি মোটেই অদৃশ্য হয়ে যাচ্ছেন না এবং দলের হয়ে তাঁর কাজ তিনি চা‌লিয়ে যাবেন।
প্রতিবাদী কংগ্রেস নেতারা প্রশ্ন করেন, ‘‘যদি তুমি না হও, তবে কে?” এ প্রসঙ্গে প্রিয়ঙ্কা গান্ধীর নাম উঠে এলে রাহুল বারবার বলতে থাকেন, ‘‘আমার বোনকে এর মধ্যে টানবেন না।” তিনি জানিয়ে দেন, ‘‘এটা জরুরি নয় যে, সভাপতি গান্ধী পরিবারের কাউকেই হতে হবে।”