গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ৭ লাখ পিচের পর এবার ৫ লাখ
পিচ ইয়াবা, মাছধরা ট্রলার ও জেলে সহ বেশ কয়েকজন ইয়াবা ব্যবসায়ী আটক এবং
কয়েকজন রহস্যজনক ভাবে পালিয়ে যাওয়ার গুঞ্জন মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকে শোনা
গেলেও মাত্র দু’জন ইয়াবা ব্যবসায়ী আটক বলছে পুলিশ। আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ
শেষে গ্রেফতারের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে জানায় পুলিশ। তবে এবারও
ইয়াবার উৎস্য ও জড়িত গডফাদারদের নাম মামলায় কিংবা পুলিশের তদন্ত রিপোর্টে
উঠে আসবে, না রহস্যজনক ভাবে গোপন থাকবে? এনিয়ে মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দরে
চলছে নানা মুখরোচক গুঞ্জন। মহিপুর থানা পুলিশ বলছে আটক দু’জনকে
জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে, তথ্য সংগ্রহ ও যাচাই-বাছাই চলছে। যাতে কোন
নির্দোষ ব্যক্তি হয়রানীর শিকার না হয় এবং কোন অপরাধী পার না পেয়ে যায়।
পুলিশের এমন বক্তব্যে মহিপুর-আলীপুর মৎস্যবন্দরে এখন একটাই জিজ্ঞাসা,
এবারও কি পার পেয়ে যাচ্ছে ইয়াবার গড ফাদাররা?
নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, পায়রা সমুদ্র বন্দর সংলগ্ন ৪৫ কি:মি:
দক্ষিন বঙ্গোপসাগর থেকে মঙ্গলবার ৫ লাখ পিচ ইয়াবা সহ এফবি মাসুম ও এফবি
আলাউদ্দিন নামের মাছধরা দু’টি ট্রলার আটক করে কোষ্ট গার্ড। এসময় ট্রলারে
থাকা জেলে সহ বেশ কয়েকজনকে আটক করা হলেও রহস্যজনক ভাবে কয়েকজন ইয়াবা
ব্যবসায়ী পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়। এদের মধ্যে আল-আমিন, সোহরাব, জহির,
বেল্লাল এবং নিজাম এর নাম জানা গেলেও অন্যান্যদের নাম জানা যায়নি। আটককৃত
মোশারেফ হোসেন কলাপাড়া উপজেলার চাকামইয়া ইউনিয়নের মোবারক শিকদারের পুত্র
এবং টিপু শিকদার মহিপুরের মৃত সোহরাব শিকদারের পুত্র।
এদিকে কোষ্টগার্ড ভোলা জোনের লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাজিউর রহমান জানান,
রবিবার টেকনাফ থেকে মাছ ধরা ট্রলারে ইয়াবার এ চালান নিয়ে কয়েকজন ইয়াবা
ব্যবসায়ী মহিপুর মৎস্যবন্দরের উদ্দেশ্যে যাত্রা করে। পথিমধ্যে তাদের
ট্রলারের ইঞ্জিন খারাপ হলে ইয়াবা চক্রের অপর সদস্যরা তাদের উদ্ধারে যায়।
এসময় কোস্টগার্ডের উপস্থিতি টের পেয়ে বেশ কয়েকজন পালিয়ে যেতে সক্ষম হলেও
জেলে সহ কয়েকজনকে আটক করে কোষ্টগার্ড। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে কোষ্টগার্ড
পায়রা বন্দর, নিজামপুর ও ভোলা কন্টিনজেন্ট যৌথ অভিযান চালিয়ে ইয়াবার এ
চালান উদ্ধার করে বলে জানান লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাজিউর রহমান।
মহিপুর থানার ওসি মো: সাইদুল ইসলাম জানান, আটককৃত মোশারেফ ও টিপুর
জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে জড়িতদের নাম সহ মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রন
আইনে মামলা নেয়া হবে। তবে নির্দোষ ব্যক্তি যাতে এতে না জড়ায় এবং কোন
অপরাধী পার না পেয়ে যায় বলে জানান তিনি। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত
উদ্ধারকৃত ইয়াবার গননা এবং আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ চলছিল।
প্রসংগত; এর আগে সমুদ্র পথে আসা ইয়াবার আর একটি বড় চালান আলীপুর
মৎস্যবন্দর থেকে প্রাইভেট কার যোগে পাচারের সময় কুয়াকাটা মহাসড়কের শেখ
কামাল ব্রীজের টোল প্লাজা এলাকায় ৬ অক্টোবর ২০১৮ র্যাব-৮ বরিশাল টিম
কর্তৃক উদ্ধার হয়। এসময় ৭ লাখ পিচ ইয়াবা, একটি প্রাইভেট কার, অস্ত্র সহ
দু’জনকে আটক কওে র্যাব। পরবর্তীতে র্যাব বাদী হয়ে কলাপাড়া থানায় মামলা
দায়ের করে। ওই মামলার তদন্ত রিপোর্ট এখনও জমা পড়েনি আদালতে। এখনও জানা
যায়নি ইয়াবার উৎস্য এবং গডফাদার ছিল কারা?