অনলাইন ডেস্ক :
দীর্ঘ ২২ বছর ক্ষমতায় থাকার পর ২০০৩ সালে রাজনীতি থেকে অবসরে যান আধুনিক মালয়েশিয়ার রূপকার মাহাথির বিন মোহাম্মদ। ২০১৮ সালে ৯২ বছর বয়সে ফের ক্ষমতার মসনদে এসেছেন এ নেতা। মালয়েশিয়ার সাধারণ নির্বাচনে বিশাল জয় পেয়েছে মাহাথিরের জোট পাকাতান হারাপান।
বলতে পারেন, দুর্নীতির অভিযোগ সমালোচিত নাজিব তুন রাজাককে বুড়ো বয়সে ভেলকি দেখিয়েছেন মালয়েশিয়ার এ নন্দিত রাষ্ট্রনায়ক। কারণ মালয়েশিয়ার দীর্ঘ ৬১ বছর ইতিহাসে এই প্রথম ক্ষমতাচ্যুত হয়েছে বারিসান ন্যাশনাল। দেশটিতে স্বাধীনতার পর থেকেই ক্ষমতায় ছিল বারিসান ন্যাশনাল কোয়ালিশন। এই প্রথমবারের মতো হারলো।
নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, মাহাথিরের নেতৃত্বে বিরোধী জোট পাকাতান হারাপান অ্যালায়েন্স মোট আসন পেয়েছে ১১৩টি। সরকার গঠনে তাদের দরকার ছিল ১১২টি আসন। আর নাজিবের বারিসান পেয়েছে ৮৮টি আসন।
তারই একসময়ের শিষ্য, যার কাছে তিনিই ক্ষমতা হস্তান্তর করেছিলেন, সেই নাজিব রাজাকের দুর্নীতি আর স্বজনপ্রীতির কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে অবসর জীবন থেকে আবার রাজনীতিতে সক্রিয় হন মাহাথির। গণমাধ্যমকে তিনি বলেছেন, আমরা প্রতিশোধ নিতে চাই না, আমরা শুধুমাত্র আইনের শাসন পুনর্বহাল করতে চাই।
বৃহস্পতিবারই শপথ নেওয়া কথা মাহাথিরের। তবে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠা স্থগিত করা হয়েছে। তবে শপথ হলে তিনিই হবেন বিশ্বের সবচেয়ে বেশি বয়সী প্রধানমন্ত্রী।
১৯৫৭ সালে ব্রিটেনের কাছ থেকে স্বাধীনতা পাওয়ার পর থেকেই দেশটিতে ক্ষমতায় রয়েছে বোরিসান ন্যাশনাল অ্যালায়েন্স। কিন্তু দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতিসহ নানা অভিযোগে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তাদের জনপ্রিয়তা কমেছে। ২০১৩ সালেও বিরোধীরা অনেক ভোট পেয়েছিল, কিন্তু সরকার গঠনের জন্য পর্যাপ্ত আসন পায়নি। তখনকার বিরোধী নেতা আনোয়ার ইব্রাহিমের বিরুদ্ধে সমকামিতার অভিযোগ এনে কারাগারে পাঠানো হয়।
ইব্রাহিমের দাবি ছিল, এটি রাজনৈতিক হয়রানিমুলক মামলা। ২০১৬ সালে বোরিসান অ্যালায়েন্স ত্যাগ করে আলাদা দল গঠন করেন মাহাথির মোহাম্মদ। পরে তিনি বিরোধীদের নিয়ে জোট গঠন করেন।আর বিরোধী জোট থেকে ফের ৯২ বছর বয়সে ক্ষমতার মসনদে মাহাথির মুহাম্মদ।