দর্পণ ডেস্ক : শিশুরা অবুঝ। তারা যে কোন সময় আবদার করবে, তা না পেলে কান্নাকাটি করবে এটাই স্বাভাবিক।
তখন বাচ্চাকে ভোলাতে কিংবা তাদের মন শান্ত করতে অনেকেই মিথ্যের আশ্রয় নেন। চকোলেট দেব, খেলনা দেব, ঘোরাতে নিয়ে যাব, এরকম হাজারো মিথ্যে আশা, মিথ্যে প্রতিশ্রুতি দেন। হয়ত ভাবছেন বাচ্চা বুঝবে না। সবচেয়ে বড় ভুল কিন্তু সেটাই। আপনার কোলের শিশু এত অবুঝ নয়। সে সব মিথ্যেই বুঝছে। শিশুমনের ওপর গবেষণা করে এমনটাই বলছেন গবেষকরা।
গবেষকরা বলছেন, মাত্র আড়াই বছরের বাচ্চারাও বুঝতে পারে কখন কেউ মিথ্যে বলছে কিংবা যা ভাবছে তা বলছে না।
আগে ভাবা হত, বছর চারেক না হলে বাচ্চাদের মধ্যে বোঝার বা মিথ্যে ধরার ক্ষমতা আসে না। কিন্তু গবেষণায় উঠে আসা নতুন তথ্য ভেঙে দিয়েছে পুরনো সব ধ্যানধারণা।
বাচ্চাদের মন বুঝতে, শিশুদের নিয়ে সমীক্ষাটি চালানো হয়। সবারই বয়স দু-আড়াই বছর। এজন্য সাইকোলজিস্টদের অস্ত্র ছিল, ফলস বিলিভ টাস্ক।
বাচ্চাদের সামনে মূলত দেখানো হয়, দুটি বাক্সের মধ্যে একটিতে কারোর সামনে কোন খেলনা রাখা হচ্ছে। সেই ব্যক্তি সরে গেলেই, জিনিসটি সরিয়ে অন্য বাক্সে রেখে দেওয়া হচ্ছে। এবার ওই ব্যক্তি ফিরে এলে, কোথায় খুঁজবে জিনিসটিকে?
শিশুমন বুঝতে ‘ফলস বিলিভ টেস্ট’ প্রক্রিয়াই খানিকটা সহজ করে দেন গবেষকরা। যে জিনিসটি লুকনো হচ্ছে তা কোথায় রাখা হচ্ছে, দেখানো হয়নি শিশুদের। শিশুদের হাতে ধরিয়ে দেওয়া হয় দুটি ছবি, যার মধ্যে একটি লুকনো জিনিসটির। তাদের কাছে জানতে চাওয়া হয়, কোন জিনিসটিকে খুঁজতে হবে এবং তারপরের প্রশ্ন, কোথায়?
গবেষণায় উঠে এসেছে, লুকনো জিনিসটি নিয়ে কোনও ফলস বিলিভ বা মিথ্যে ধারণা নেই বাচ্চাদের মনে। জিনিসটি সম্পর্কে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত তাদের জ্ঞানের নাড়ি টনটনে বাচ্চাদের এই ক্ষমতাই তাদের অন্যদের মিথ্যে বা প্রতারণা ধরতেও সাহায্য করে।
গবেষকরা বলেন, জটিল কোন জিনিস বাচ্চারা বুঝতে পারবে না, বা তাদের ভুল বোঝালে বুঝে নেবে একথা ভাবাটাই ভুল। বাচ্চাকে ভোলাতে যদি ভুরি ভুরি মিথ্যে বলাই আপনার অভ্যেস হয়, তাহলে কিন্তু এবার সাবধান। বুঝতেই পারছেন, মিথ্যে ধরতে ওস্তাদ এই খুদেরাও।