সংবর্ধনা নিতে গিয়ে এক নারীকে ‘আপত্তিকরভাবে জড়িয়ে ধরায়’ ব্যাপক সমালোচনার মুখে পড়েছেন বান্দরবানের আলীকদমে নবনির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান মো. আবুল কালাম। তিনি অবশ্য দাবি করেছেন, মেয়েটিকে জাপটে ধরেননি। ফুলের মালা দিয়ে মেয়েটা পড়ে যাচ্ছিল বলে হাতটা ধরেছেন। অবশেষে মুখ খুললেন সেই নারীও।

নানা আলোচনা-সমালোচনার পর আজ সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আসেন সেই নারী। ম্রো সম্প্রদায়ের হওয়ায় নিজ ভাষায় সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন তিনি। তবে তার ভাই মিং রো ওই নারীর কথা বাংলায় বলে দেন সংবাদ সম্মেলনে।

আঞ্চলিক ভাষায় ওই নারী বলেন, ‘২২ মার্চ স্থানীয় নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মেরিনচর পাড়ায় মো. আবুল কালাম, আমার বড় ভাই উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আমরা খুশি ছিলাম কারণ, তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান হয়ে গেছেন। আমরা তাকে সংবর্ধনা দিতে যাই। এ সময় আমি তার গলায় ফুলের মালা দেই।’

ওই নারী আরও বলেন, ‘এই নির্বাচনের জন্য আমি অনেক কষ্ট করেছিলাম। তিনি নির্বাচিত হওয়ায় আমি অনেক আবেগপ্রবণ হয়ে পড়ি। মনের ভেতর থেকে একটা খুশি কাজ করছিল। খুশিতে কান্নাও করেছিলাম। অন্য কোনো দুই নম্বরি কাজ করে নাই। আমাদের ৯নং ওয়ার্ডের মেম্বার উপস্থিত ছিলেন। তিন-চার এলাকার লোকজন ছিলেন। জনগণসহ তিনি (মো. আবুল কালাম) এখানে আসেন। প্রায় দুই-তিনশ লোক উপস্থিত ছিলেন। আমরা সবাই একে অন্যের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিলাম।’

ওই নারীর ভাষ্য, ‘মো. আবুল কালাম ভাই কোনো অন্যায় করে নাই। ম্রো, মারমা, ত্রিপুরা সবাই আমরা উপজাতি। মানে পাহাড়ি বাঙালি। আমরা একসাথে মিলেমিশে থাকি। কিন্তু বাইরের কিছু লোক উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ফেসবুকে, টেলিভিশনে উল্টাপাল্টা কথাবার্তা ছড়াচ্ছে। আমরা তো কোনোদিন প্রতিবাদ করবো না। আমরা একই পরিবারের মানুষের মতো।’

এ সময় সাংবাদিকরা ওই নারীর ভাই মিং রোর কাজে জানতে যান, তার কোনো অভিযোগ আছে কি না। জবাবে মিং রো বলেন, ‘আমাদের ৯নং ওয়ার্ডের কারোও কোনো অভিযোগ নাই। সবাই খুশি আছে।’

আবুল কালাম তার বোনের ইচ্ছার বিরুদ্ধে জড়িয়ে ধরেছিলেন কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘ইচ্ছা করে ধরেননি।’

গত সোমবার উপজেলা নির্বাচনে জয় লাভের পর শুক্রবার বান্দরবানের আলীকদমের নোয়াপাড়া ইউনিয়নের মেরিনচর পাড়ায় সংবর্ধনা নিতে যান মো. আবুল কালাম। সেখানে ফুলের মালা পরাতে গেলে এক নারীকে তিনি জড়িয়ে ধরেন-এমন একটা ছবি ফেসবুকে প্রকাশিত হয়। ছবিটি মুহূর্তেই ভাইরাল হয়ে যায়।।

এ ব্যাপারে আবুল কালামের সঙ্গে কথা হলে তিনি বলেন, ওই মেয়ে আমাদের একটা ছোট বোন। আমাকে দেখে কান্নাকাটি করছিল। সে মনে হয় পড়ে যাবে-এ রকম পরিস্থিতি। তো এ জন্য সে যাতে পড়ে না যায়, আমি ওই ছোট বোনকে হাতে ধরেছি।

চেয়ারম্যানের জড়িয়ে ধরা নিয়ে যা বললেন সেই নারী

চেয়ারম্যানের জড়িয়ে ধরা নিয়ে যা বললেন সেই নারী…

Posted by Amader Shomoy on Monday, 25 March 2019