গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে নির্বাচিত হয়েছেন পটুয়াখালী জেলার ছেলে নুরুল হক নূর। নূরের ঢাকা
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিপি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকেই সারাদেশের মতো নিজ জেলা পটুয়াখালীর সর্বত্র চলছে আলোচনা।
পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার চর বিশ্বাস ইউনিয়নের সাবেক ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেম্বর (সাধারন সদস্য) মো. ইদ্রিস হাওলাদারে ছেলে নুরুল হক নূর। তার শিক্ষকরা বললেন নূর স্কুল থেকেই ছাত্রলীগের সক্রিয় নেতা ছিল।
নূরের স্কুল শিক্ষক চর বিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও চর বিশ্বাস ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি মো. আবু বক্কর সিদ্দিক জানান, নূরের বাবা
ইদ্রিস হাওলাদার একজন সমাজসেবক ও জনপ্রতিনিধি হিসেবে এলাকায় সুনাম অর্জন করেছেন। তিন ভাই ও পাঁচ বোনের মধ্যে নূর দ্বিতীয়। বাড়ির পাশের মধ্য চর বিশ্বাস সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শেষ করে পাশ্ববর্তী চর বিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে ৭ম শ্রেণি পর্যন্ত লেখাপড়া করে নূর শিক্ষা অর্জনের জন্য ঢাকার গাজীপুরে চলে যান। আবু বক্কর আরও জানান, ৭ম শ্রেনিতে পড়ার সময় বিদ্যালয় ছাত্রলীগের দপ্তর সম্পাদক হিসেবে ছাত্রলীগের একজন সক্রিয় নেতা ছিলো নূর। পরে গাজীপুরের কালিয়াকৈর গোলাম নবী মাধ্যমিক বিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে উত্তরা মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এইচএসসি পাস করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হন।
ডাকসু নির্বাচনে তিনি সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের নুরুল-রাশেদ-ফারুক প্যানেলে ভিপি পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এছাড়া তিনি কোটা সংস্কার আন্দোলনের অন্যতম নেতা হিসেবে বিশেষ পরিচিতি লাভ করেন। ডাকসু নির্বাচনে ভিপি পদে ১১ হাজার ৬২ ভোট পেয়ে তিনি নির্বাচিত হন। নূরের বিজয়ে জেলার গলাচিপা উপজেলার সবস্তরের জনগণ আনন্দ প্রকাশ করছে।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, পিতা ইদ্রিস হাওলাদার ১৯৭৫ সালে পটুয়াখালী জেলার বাউফল উপজেলার কালাইয়া ইউনিয়নের শৌলা গ্রামের পৈত্রিক নিবাস ছেড়ে নূরের দাদা ও ৩ চাচাসহ গলাচিপার উত্তর চরবিশ্বাস এলাকায় বসবাস শুরু করে।
১৯৯১ সালে তার পিতা ইদ্রিস হাওলাদার নিজ এলাকায় ইউপি সদস্য নির্বাচিত হন। তার কয়েক একর কৃষি জমি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠান রয়েছে। নূরের ৬ বছর বয়সে তার মা নিলুফা বেগম মারা যায়। নূরের ৫ বোন ও ৩ ভাই রয়েছে। ৩ ভাইয়ের মধ্যে নূর ২য়। নূরের বড় ভাই নরুজ্জামান হাওলাদার ও ছোট ভাই আমিনুল ইসলাম ঢাকা উত্তরা এলাকায় ক্ষুদ্র ব্যবসা করেন। তার ৫ বোনের মধ্যে তিন বোন বিবাহিত। বাকি দুই বোনের মধ্যে সীমা আক্তার দশমিনা কলেজ থেকে ২০১৯ সালে এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নেবে এবং ইতি আক্তার চর বিশ্বাস জনতা মাধ্যমিক বিদ্যালয় হতে ২০১৯ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহন করেছে।
চর বিশ্বাস ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি হাতেম আলী মাস্টারের মেয়ে মরিয়ম আক্তারকে বিয়ে করেন নূর। তার শ্বশুর পরিবারের সকলেই আওয়ামীলীগের রাজনীতির সাথে সক্রিয় ভাবে জড়িত বলে জানান আওয়ামীলীগ নেতা ও চরবিশ্বাস ইউপি চেয়ারম্যান বাবুল।
এদিকে নুরুল হক নূর এর বাবা ইদ্রিস হাওলাদার জানান, ছেলের বিজয়ে আমার এলাকার সর্বস্তরের জনগণ খুব খুশি। এ বিজয় আপনাদের সকলের। আমার ছেলে ভবিষ্যতে যাতে বড় কিছু হতে পারে তার জন্য সবার কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি।