দর্পণ ডেস্ক : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেছেন, দু’একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া খুবই উৎসবমুখর ও শান্তিপূর্ণভাবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রসংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।

আজ (সোমবার) ভোট গ্রহণ শেষে এসব কথা বলেন ভিসি। তিনি বলেন, ‘‘দুই-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা ছাড়া খুবই উৎসবমুখর পরিবেশে এবং গণতন্ত্রের মূল্যবোধের বিশ্বাসে ভোট হয়েছে।’’

এর আগে গণমাধ্যমকর্মীদের সামনে শিক্ষার্থীদের ধন্যবাদ জানিয়ে আখতারুজ্জামান বলেন, ‘‘শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছে। তারা গণতন্ত্রের রীতিনীতি অনুসরণ করেই ভোট দিয়েছে। আমি অনেকগুলো কেন্দ্র পরিদর্শন করেছি। সেখানে শিক্ষার্থীদেরকে লাইন দিয়ে ভোট দিতে দেখেছি।’’

কুয়েত মৈত্রী হলের অনিয়ম প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘‘আমরা কালক্ষেপণ না করে, কোনও শৈথিল্য না দেখিয়ে প্রভোস্টকে সরিয়ে দিয়েছি। নতুন প্রভোস্ট নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে পাঁচ সদস্যের একটি কমিটিও গঠন করে দিয়েছি। তারা খতিয়ে দেখবে, কারা কারা এর সঙ্গে জড়িত। এই নীতিবর্হিভূত কাজের সঙ্গে যারা জড়িত, যেটা কোনোভাবেই বরদাশত করা যায় না। রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

তিনি আরও বলেন, ‘‘ডাকসুর রীতিনীতি, গঠনতন্ত্র রয়েছে। তা মেনেই সব ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমাদের শিক্ষার্থীরা সুশৃঙ্খল এবং তাদের গণতন্ত্রের মূল্যবোধ রয়েছে। এটা দেখে আমি খুশি। তাদের এই মূল্যবোধ আমাদের অনুপ্রেরণা দেয়। সামনের দিনগুলোতে এই ধারা অব্যাহত থাকবে।’’
ভোট ডাকাতি করেছে নুরুরা: ছাত্রলীগ

এদিকে, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ ও হল সংসদ নির্বাচন বর্জন করে ছয়টি প্যানেলের ভোট বর্জন এবং নতুন করে ভোট গ্রহণের দাবিকে হাস্যকর বলে আখ্যা দিয়েছে ছাত্রলীগ। এছাড়াও, সোমবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের রোকেয়া হল থেকে ট্রাংকভর্তি ব্যালট উদ্ধারের ঘটনাকে কোটা আন্দোলনকারীদের প্যানেল বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের ভিপি প্রার্থী নুরুল হক নুরদের ব্যালট ‘ডাকাতি’ বলে অভিযোগ করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী।

সোমবার বিকেল ৪টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধুর ক্যান্টিনে এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা বলে সংগঠনটি। শোভন বলেন, ভোট বর্জন করে তারা বিভিন্ন অভিযোগ করেছে। নির্বাচন বাতিলের দাবি জানিয়েছে। সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে প্রশাসন।

প্রেস ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ডাকসুর জিএস প্রার্থী গোলাম রাব্বানী বলেন, আমরা নিজেদের জায়গা থেকে সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য কাজ করেছি। ভবিষ্যতেও এ ধারা অব্যাহত থাকবে। ক্যাম্পাসে সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখার চেষ্টা করব।

ভোট বর্জনকারী প্যানেলের নেতা-কর্মীদের উদ্দেশ্য করে রাব্বানী আরও বলেন, তারা হল প্রভোস্টের ওপর হামলা করেছে, হলের জানালা ভাঙচুর করেছে, প্রধান রিটার্নিং কর্মকর্তাকে হেনস্থা করেছে।

ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, বয়কট করার প্রয়োজন নাই, তারা যেসব কাজ করেছে তাতে তাদের প্রার্থিতা এমনিতেই বাতিল হবে। গণপরাজয়ের লজ্জা থেকে বাঁচার জন্যই তারা এমন কাজ করেছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি আরও বলেন, ক্যাম্পাসে পরবর্তীতে কোনও বিশৃঙ্খলা আমাদের দিক থেকে ঘটবে না। রোকেয়া হলের ব্যালট ছিনতাইয়ের ঘটনা আমাদের স্বপ্ন ডাকাতি। আর সেই ডাকাতি করেছে নুরুরা।

সকাল ৮টা থেকে ডাকসুর ভোট গ্রহণ শুরু হয়। তবে বিভিন্ন হলে সিল দেওয়া ব্যালট উদ্ধারের ঘটনা এবং ছাত্রলীগ ছাড়া অন্য প্রার্থীদের ভোট কেন্দ্রে প্রবেশ বাধাদানের অভিযোগ আনা হয়। দুপুরে ছাত্রলীগ বাদে অন্য সব প্যানেলের প্রার্থীরাই ভোট থেকে সরে দাঁড়ান। এর মধ্যে সাধারণ শিক্ষার্থী পরিষদ, স্বাধিকার স্বতন্ত্র পরিষদ, প্রগতিশীল ছাত্র ঐক্য, ছাত্র ফেডারেশনসহ বিভিন্ন পদের স্বতন্ত্র প্রার্থীরা নতুন ভোট গ্রহণের পাশাপাশি দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘটের ঘোষণা দেন।