দর্পন ডেস্ক : দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের একটি উড়োজাহাজ ছিনতাইয়ের চেষ্টাকালে নিহত পলাশ আহমদের (২৪) মৃতদেই তার নিজ বাড়ি নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার দুধঘাটা গ্রামে দাফন করা হয়েছে। আজ (মঙ্গলবার) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে বাড়ির সামনে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়।
এর আগে পতেঙ্গা থানা পুলিশের একটি দল পলাশের মৃতদেহ শনাক্ত এবং লাশ হস্তান্তরের জন্য নারায়ণগঞ্জ থেকে পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সরদারকে চট্টগ্রামে নিয়ে আসে। লাশ হস্তান্তরের পূর্বে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল মর্গে ময়নাতদন্ত সম্পন্ন হয়।
নিহত পলাশের বাবা পিয়ার জাহান সরদার বলেন, লাশ গ্রহণেও আপত্তি থাকা সত্ত্বেও রাতে চট্টগ্রাম গিয়ে প্রশাসনের লোকজনের কাছ থেকে পলাশের মরদেহ নিয়ে পারিবারিক কবরস্থানে দাফন করা হয়।
উল্লেখ্য, গত রোববার সন্ধ্যায় ঢাকা থেকে দুবাইগামী বাংলাদেশ বিমানের ‘ময়ূরপঙ্খী’র ফ্লাইটটি (বিজি-১৪৭) ছিনতাইকারীর কবলে পড়ে। প্রায় দুই ঘণ্টার শ্বাসরুদ্ধকর অভিযানে চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান ছিনতাই চেষ্টার অবসান হয়। কমান্ডো অভিযানে বিমান ছিনতাই চেষ্টাকারী তরুণ পলাশ নিহত হয়।
পুলিশ বলেছে, নিহত পলাশ বিমানের ক্রুদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে বারবার তার স্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সঙ্গে কথা বলতে চেয়েছিলেন।
ইতোমধ্যে, উড়োজাহাজ ময়ুরপঙ্খী ছিনতাইয়ের অভিযোগে নিহত পলাশের বিরুদ্ধে সন্ত্রাস দমন অধ্যাদেশ ও বিমান নিরাপত্তা আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সোমবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) রাতে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সিভিল এভিয়েশন বিভাগের প্রযুক্তি সহকারী দেবব্রত সরকার বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
তবে মামলার এজাহার, বিমান প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য এবং ঘটনাস্থলে উপস্থিত একজন সংসদ সদস্যের বক্তব্যে ভিন্নতা দেখা যায়। অভিযানসংশ্লিষ্ট কয়েকজনের বক্তব্যেও ছিনতাইকারীর কাছে ‘অস্ত্র’ প্রসঙ্গে ভিন্নতা পাওয়া গেছে। মামলার এজাহারে বলা হয়, কমান্ডো অভিযানে নিহত ব্যক্তির কাছে যাত্রী ও ক্রুরা ‘অস্ত্র ও বোমাসদৃশ বস্তু’ দেখেছেন।
এই ঘটনায় বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে একজন অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে ৫ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
এদিকে, বাংলাদেশে বিমান ছিনতাই চেষ্টার ঘটনায় ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিয়ে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে।
বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ভেদ করে কোন ব্যক্তি অস্ত্র নিয়ে কিভাবে একটি আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠতে পেরেছে, তা নিয়ে সারা দেশে আলোচনার ঝড় উঠেছে। সামাজিক মাধ্যমেও অনেকে নানান প্রশ্ন তুলেছেন।
বেসামরিক বিমান চলাচল কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান এম নাঈম হাসান সংবাদ সম্মেলনে নিরাপত্তা ইস্যুতেই সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের মুখে পড়েছিলেন।
তাঁর বক্তব্য ছিল একটাই, তা হচ্ছে, “আমরা তদন্ত করব। সিসিটিভি আছে, সেটি চেক করব। আমাদের মেশিনে সিসিটিভি আছে, সবগুলো চেক করব। কারণ এই মেশিনের ভিতর দিয়ে যদি নেইল কার্টার, খেলনা পিস্তল, ছুরি ধরা পড়তে পারে, তাহলে এগুলো ধরা হবে না, জিনিসটা খুব বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। তদন্ত হোক তাহলে দেখা যাবে।”
এত সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তার মাঝে অস্ত্র নিয়ে কোনো ব্যক্তি কিভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠে পড়ল, সেই প্রশ্নই এখন উঠছে।
বিশ্লেষক কাজী ওয়াহিদুল হক মনে করেন, এই ঘটনা বহির্বিশ্বে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি বিশ্বে একটি খারাপ বার্তা দেবে।
তাঁর বক্তব্য ছিল একটাই, তা হচ্ছে, “আমরা তদন্ত করব। সিসিটিভি আছে, সেটি চেক করব। আমাদের মেশিনে সিসিটিভি আছে, সবগুলো চেক করব। কারণ এই মেশিনের ভিতর দিয়ে যদি নেইল কার্টার, খেলনা পিস্তল, ছুরি ধরা পড়তে পারে, তাহলে এগুলো ধরা হবে না, জিনিসটা খুব বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় না। তদন্ত হোক তাহলে দেখা যাবে।”
এত সিসি ক্যামেরা এবং নিরাপত্তার মাঝে অস্ত্র নিয়ে কোনো ব্যক্তি কিভাবে আন্তর্জাতিক ফ্লাইটে উঠে পড়ল, সেই প্রশ্নই এখন উঠছে।
বিশ্লেষক কাজী ওয়াহিদুল হক মনে করেন, এই ঘটনা বহির্বিশ্বে একটা নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এটি বিশ্বে একটি খারাপ বার্তা দেবে।